গান-কবিতায় ভরে উঠছে রাজনীতির মঞ্চ। পথিকৃৎ অবশ্যই বাংলা। সদ্যসমাপ্ত বাদল অধিবেশনে বিভিন্ন রাজ্যে পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকদের দেশ জুড়ে হেনস্থার প্রতিবাদে প্রায় প্রতি দিন সকাল দশটায় মকরদ্বারের সামনে ধর্না দিয়েছে তৃণমূল। মাঝে মধ্যেই গান। কখনও রবীন্দ্রসঙ্গীত, কখনও রক্ত গরম করা গণসঙ্গীত। মধ্যমণি দোলা সেন। শেষ দিন চমক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মিছিলের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে উচ্চ কণ্ঠে আবৃত্তি করলেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দের কবিতা। উত্তরপ্রদেশের মেঠো রাজনীতিতেও সুরের আবির্ভাব! নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ভোট চুরির প্রতিবাদে গান প্রকাশ করলেন এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব। এসপি-র সব সভায় গানটি বাজছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে গানের সুরকার, লেখক ও গায়ক এসপি-রই লোকসভা সাংসদ ছোটেলাল সিংহ খরওয়ার। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ছিলেন ভোজপুরি গায়ক!
সংস্কৃতি: রাজধানীর বুকে গানে-কবিতায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ।
লোকে লোকারণ্য
বাড়ি তো নয়, যেন হট্টমেলার দেশ। দলের নেতা হিসাবে ভিড় থাকতই, বিজেপি রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে শমীক ভট্টাচার্যের দিল্লির শাহজাহান রোডের বাড়িতেও ভিড় উপচে পড়ছে। চাকরিপ্রার্থী, পরবাসে বিপন্ন বাঙালি, বা নেতার নজরে আসতে ইচ্ছুক— কে নেই! সংসদ চলাকালীন নিজের বাংলোই অচেনা শমীকের। তাঁর কথায়, “বাড়িভর্তি লোক গিজগিজ। পা ফেলার উপায় নেই। লোকজন আসছে, যাচ্ছে। রান্না হয়ে চলেছে। পাত পেড়ে সবাই খাচ্ছে। কোথা থেকে, কে জোগাচ্ছে কে জানে!” এক দিন দ্রুত সংসদ শেষ হওয়ায় বাড়ি ফিরবেন, ভেবেছিলেন শমীক। তার পরেই স্বগতোক্তি, “ধুর কোথায় যাব! দু’মিনিট স্থির হয়ে বসার সুযোগ পাব না। তার চেয়ে দলীয় দফতরে যাওয়াই ভাল।” ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, কর্মীদের দেখা করার আবদার মিটিয়ে রাত সাড়ে এগারোটা-বারোটার আগে দোতলায় নিজের ঘরে যেতে পারছেন না নতুন বিজেপি সভাপতি।
মঞ্চ ভেঙে নীচে
বিহারে রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ ঘিরে বিরোধী শিবিরের কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ তুঙ্গে। বিশেষ করে আরজেডি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। খেসারত দিতে হয়েছে সাংবাদিকদের। সাসারাম থেকে ১৭ অগস্ট যাত্রা শুরু হয়েছিল। শুরুতে জনসভায় লালুপ্রসাদ যাদবও হাজির ছিলেন। তাঁকে দেখতে ভক্তরা বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা রাখার জন্য তৈরি মঞ্চে উঠে পড়েন। ভিড়ের চাপে মঞ্চ ভেঙে পড়ে। কিছু সাংবাদিকের ক্যামেরার ব্যাটারি, ট্রাইপড খোয়া গিয়েছে।
শুধুই খেয়াল?
সদ্য নয়াদিল্লি সফর সেরে গেলেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতিভেনি রাবুকা। পূর্ব নির্ধারিত সফরসূচি অনুযায়ী তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল নয়াদিল্লির গুরুদ্বার বাংলা সাহিবের কাছে আধার কেন্দ্রে। তাঁর অনুরোধ— দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের পাশেই ফাঁকা জমিতে এক বার যেতে চান। শেষ মুহূর্তের বদলে নিরাপত্তা কর্মীরা এবং পুলিশবাহিনী নাজেহাল। জমিতে একটু দাঁড়িয়ে হোটেলে ফেরার গাড়িতে চড়লেন ফিজির প্রধানমন্ত্রী। কানাঘুষো, দেশের নতুন দূতাবাসের জন্য বরাদ্দ জমিটা পর্যবেক্ষণ করে গেলেন।
নাচও জানেন
তাঁর যে এমন নাচের এলেম কেউ জানত! প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল পেশাদার অর্থনীতিবিদ। লেখক, শান্তশিষ্ট মানুষ। স্বাধীনতা সংগ্রামী নলিনাক্ষ সান্যালের প্র-দৌহিত্র। সম্প্রতি এক সম্মেলনে দেখেন, রাম ভজন ‘মেরে কেশরী কে লাল’ গাইতে গাইতে শিল্পীরা নাচছেন। তালে নিজেও নাচতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই দৃশ্য ভাইরাল, মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সঞ্জীব অবাক। এক জন সমাজমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন, মোদী সরকার টিকটক নিষিদ্ধ না করলে সঞ্জীবের সামনে নতুন কেরিয়ারের দরজা খুলে যেত। সঞ্জীবের সপাট উত্তর, ঠিক এই জন্যই টিকটক নিষিদ্ধ করা উচিত।
নৃত্যরত: সঞ্জীব সান্যাল।
সুসম্পর্ক?
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের শতবর্ষে বিজ্ঞান ভবনে তিন দিনের সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য তাঁদের ভাষায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের বক্তব্য অনুবাদের ব্যবস্থা হয়েছে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা, নেপাল-সহ প্রায় ৫০টি দেশের দূতাবাসের আমন্ত্রণ ছিল অনুষ্ঠানে; সঙ্ঘপ্রধানের বক্তব্যেও ছিল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের নিদান; কিন্তু আমন্ত্রণ যায়নি ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতদের কাছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)