Advertisement
E-Paper

হয় সতর্ক হই এখনই, নয় প্রস্তুত হই আরও বড় ঝাঁকুনির জন্য

বিদেশের কিছু গবেষক ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন ‘সেলফি মোহের’ বিপদের উপর। কেউ কেউ একটু এগিয়ে গিয়ে সেলফাইটিস নামে এক সম্ভাব্য অসুখের দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০১:০৩
বায়বীয় জগতের পাশাপাশি বাস্তবিক জগতের মাটিতেও পা রাখার দরকার, সে সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।

বায়বীয় জগতের পাশাপাশি বাস্তবিক জগতের মাটিতেও পা রাখার দরকার, সে সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।

বেশ অনেকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ার ভালমন্দের তুল্যমূল্য বিচার নিয়ে আলোচনা হয়ে আসছে সর্বত্রই। এক দিকে যেমন তথ্যের অফুরান ভান্ডার খুলে যাচ্ছে আমাদের হাতের মুঠোয় এবং এক বিশ্বজনীনতার অঙ্গ হয়ে উঠছি এই মাধ্যমের অলিন্দে পদচারণা করেই, অন্য দিকে তেমনই এক অমোঘ প্রদর্শনমুখিনতার অনিবার্য শিকার হয়ে উঠছি আমরা। আশীর্বাদ বনাম অভিশাপ— এই দ্বন্দ্ব সামাজিক মাধ্যমের এই বিপ্লবকে কেন্দ্র করেই অতএব চলছে তুমুল ভাবে।

এই আবহেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা গণেশ দাস আচমকাই একটা বড় ঝাঁকুনি দিয়ে আয়নার সামনে দাঁড় করালেন আমাদের সবাইকে। আচমকা এবং ঝাঁকুনি দিয়ে বললাম ঠিকই, কিন্তু একটু ভেবে দেখলে এর পটভূমিটা ক্রমাগত তৈরি হতে দেখিনি কি আমরা একেবারেই? মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলে দাহকার্য শেষ হয়ে গেলে বিলম্ব না করে গণেশবাবু সেই ছবি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অমনি প্রতিক্রিয়ায় গেল গেল রব তুললাম আমরা। বললাম, এ কোন পথে চলেছে আমাদের সমাজ যেখানে মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তোলা যায়! চমকে ওঠার সত্যিই কারণ আছে কি? আনন্দে-দুঃখে-বিরহে-বেদনায় আমরা দেখিনি কি দ্রুত নানা পোস্ট এবং ততোধিক দ্রুত লাইকের সমাহার? দেখিনি কি নিতান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তও কী ভাবে সর্বজনীন হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত? মনোবিদরা বেশ কিছু দিন ধরেই এই অতি সর্বজনীনতা এবং প্রদর্শনমুখিনতার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করছেন। এমনকি, বিদেশের কিছু গবেষক ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন ‘সেলফি মোহের’ বিপদের উপর। কেউ কেউ একটু এগিয়ে গিয়ে সেলফাইটিস নামে এক সম্ভাব্য অসুখের দিকেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। সতর্কবার্তা কিন্তু আছে বেশ কিছুদিন ধরেই।

অতএব, গণেশ দাসের ঘটনায় গেল গেল রব না তুলে বরং আত্মানুসন্ধানী হই আমরা। নিজেদের দিকে ফিরে তাকাই। মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফিটা যতটা চোখের পক্ষে পীড়াদায়ক হচ্ছে, সেই সময়েই ছোট-মেজ-বড় নানান পীড়ার মুহূর্ত ততটাই যে তৈরি হচ্ছে ওই সোশ্যাল মিডিয়ায়, সে সম্পর্কে সচেতন হই এ বার আমরা। বায়বীয় জগতের পাশাপাশি বাস্তবিক জগতের মাটিতেও পা রাখার দরকার, সে সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। না হলে প্রস্তুত হয়ে যাই আরও বিরাট বড় বড় ঝাঁকুনির জন্য।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: শ্মশানে শেষ শয্যায় মৃত মা! সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াল ছেলে

Newsletter Anjan Bandyopadhyay Selfie Social Media Virtual World
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy