১৫ অক্টোবর নবান্নে অর্থ দফতর এব উচ্চ শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে সহ উপাচার্যের নেতৃত্বে যাদবপুরে হয়ে গেল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের বৈঠক। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এই বৈঠক ডাকলেও তিনি সোমবার উপস্থিত ছিলেন না। নবান্নের এই বৈঠকে ছাত্র প্রতিনিধিরা থাকার দাবি তুলেছিলেন। পরবর্তীকালে সরকারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছাত্রদের লিখিত দাবিদাওয়া ওই বৈঠকে নিয়ে যাবেন সহ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ১৫ অক্টোবর দুপুর ২টো নাগাদ নবান্নে এই বৈঠক হবে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে উপস্থিত থাকবেন সহ উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। আর অর্থ দফতর ও উচ্চ শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরাও ওই বৈঠকে থাকবেন। আদালতের নির্দেশে সিসিটিভি ক্যামেরা ও অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে এই বৈঠক হচ্ছে নবান্নতে।
আরও পড়ুন:
ক্যাম্পাসের মধ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা এক ঝিলে পাড়ে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়। সোমবারের বৈঠকে ক্যাম্পাসের মধ্যে আরও নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানালেন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। নিরাপত্তা নিয়ে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের মধ্যে আরও বেশি করে সিসি টিভি, নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর দাবি সকলেই করেছেন। আমাদের নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা কম। আরও বেশি করে সিসি টিভি লাগাতে চাই। তার জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। আজকের বৈঠক থেকে যে দাবিগুলো উঠে এসেছে তা ১৫ তারিখের বৈঠকে তুলে ধরা হবে সরকারের কাছে।’’
এ দিনের বৈঠকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বেশি করে সিসি টিভি লাগান এবং ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করার প্রস্তাব রাখা হয়। টিএমসিপি’র যাদবপুরের এক ছাত্রনেতা বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসের মধ্যে না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করা জরুরি। এখানে বহিরাগত ঢুকে মাঝেমধ্যেই অশান্তির চেষ্টা করে। পুলিশ ফাঁড়ি থাকলে বাইরের কেউ ঢোকার চেষ্টা করবে না।’’ তৃণমূল সমর্থিত কর্মচারী সংগঠন ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করার বিষয়ে টিএমসিপি’র প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে। তবে ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির বিরোধিতা করেছে বাম পরিচালিত অধ্যাপকদের সংগঠন জুটা। জুটা’র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানিয়েছেন, ‘‘ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি কেন থাকবে? এটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করাকে আমরা সমর্থন করি না। তবে ক্যাম্পাসের মধ্যে বেশি করে সিসি টিভি লাগানকে আমরা সমর্থন করেছি।’’ ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর বিরোধিতা করেছে এসএফআইও।
এ দিকে টিএমসিপি’র এক ছাত্রনেতা সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপণ বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে ক্যাম্পাসের মধ্যে। সঞ্জীব প্রামাণিক নামে ওই ছাত্রনেতা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন। স্নাতকোত্তরে ভর্তি ও পিএইচডি কী করে একসঙ্গে করা সম্ভব, এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাম-অতিবাম ছাত্র সংগঠন। ছাত্রদের চাপের মুখে তাঁর আবেদন বাতিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সঞ্জীব প্রামাণিকের বক্তব্য, ‘‘আমি তো স্কলার। পিএইচডি’র সিনিয়র একজন রিসার্চ স্কলার। সে ছাত্র নয়? এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের ত্রুটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবা উচিত ফর্মের মডিফিকেশন আনবে কি না।’’ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।