ভরা বর্ষায় উচ্চ মাধ্যমিক! এই প্রথম এমন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। এত দিন শীতশেষের বেলায় পরীক্ষা দিত পড়ুয়ারা। এ বার সেপ্টেম্বরের শুরুতেই বসতে হবে তৃতীয় সেমেস্টারের। চলতি বছর বর্ষাও হচ্ছে অন্য বছরের তুলনায় বেশি। তাই প্রান্তিক এলাকার পরীক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের জন্য।
উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টার নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় প্রস্তুতি খুঁটিয়ে দেখছে সংসদ। বন্যা কবলিত এলাকা চিহ্নিত বিশেষ পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি জঙ্গল এলাকার পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকছে বনদফতর।
আরও পড়ুন:
গত দু’মাসের বর্ষায় বেশ কিছু নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের যাতে নদী পারাপার না করতে হয়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। সংসদের তরফে জানানো হয়েছে, নদী তীরবর্তী এলাকার স্কুলগুলির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। কোনও স্কুল নদীর যে পাড়ে অবস্থিত, সে স্কুলের পড়ুয়াদের পরীক্ষাকেন্দ্র স্থির হবে সে পাড়েই। তা ছাড়া, কোনও পরীক্ষাকেন্দ্র যদি হঠাৎ জলমগ্ন হয়ে পড়ে, তা হলে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বিকল্প কেন্দ্রের ব্যবস্থা যাতে করা যায়, তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে এমনই জানিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি বা ঝাড়গ্রামের মতো জেলার বহু অংশেই জঙ্গল। বেশ কিছু পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে যেগুলি জঙ্গলের পথে। বর্ষায় গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা থেকে উদ্ধার করতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে মোতায়েন থাকবে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। বন্যপ্রাণীর আক্রমণের সম্মুখীন যাতে পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকদের না হতে হয়, তা সুনিশ্চিত করবে বন দফতর। এ জন্য জঙ্গল এলাকার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে বিশেষ ব্যবস্থা করবে বন দফতর।
চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “সমস্ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জল জমা ও বৃষ্টিকে। বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিকল্প পরীক্ষাকেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে কলেজগুলিতে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হতে পারে। তেমন বড় বিপর্যয় না ঘটলে সঠিক সময়েই পরীক্ষা হবে।”
ঘাটাল, আরামবাগ, উদয়নারায়ণপুরের মতো বন্যাপ্রবণ এলাকায় অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় পরীক্ষাকেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। যাতে তা সহজে জলমগ্ন না হয়। শিক্ষা সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, বিকল্প পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপোস করা হবে না। পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির জানলা-দরজা পরীক্ষা করে দেখার কাজও শুরু হয়েছে। যাতে কোনও ভাবে বৃষ্টির জল না ঢোকে। প্রয়োজনে তা এখনই মেরামত করিয়ে নিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এ সব মেরামতির কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ আসবে কোথা থেকে, তা নিয়ে নতুন করে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা তৃতীয় সেমেস্টার। চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।