২০২০ সালে অতিমারির কবলে হঠাৎ করেই হারিয়ে গেল মাথার ছাদ। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া মেয়েটির জীবন থেকে চলে গেল ‘বাবা’ ডাক। পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়ে গেলেও মনের জোর হারায়নি সে। এগিয়ে গিয়েছে নিউটাউন দিল্লি পাবলিক স্কুলের ছাত্রী সোহেলা ঘোষ।
চলতি বছর আইএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জাতীয় এবং রাজ্যস্তরে মেয়েদের জয়জয়কার। তার মধ্যে অন্যতম কলকাতার বাগুইহাটি নিবাসী সোহেলা। ৪০০-র মধ্যে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৩৯৯ যা শতাংশের নিরিখে ৯৯.৭৫। সোহেলা শুধু মেধাবী ছাত্রীই নয়, ভালবাসে পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে, অবসরে বই পড়তে। সমাজে পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা রুখতে এগিয়ে আসতে চান সোহেলা। তাঁর ইচ্ছে পরবর্তীকালে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করে ইউপিএসসি-তে উত্তীর্ণ হওয়ার। কিন্তু সোহেলা বলেন, ‘‘আমার অবশ্যই ইচ্ছে আছে ইউপিএসসি পাশ করব। কিন্তু তা ও যদি না-ও হয়, আমি সমাজের এই পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা নিয়ে কিছু করবই।’’
সোহেলা আইএসসি-র ইংরেজি ছাড়া সব বিষয় ১০০-এ ১০০ নম্বর পেয়েছে। পরীক্ষা দিয়েছিল কলা বিভাগে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় অতিমারির কবলে হঠাৎ করেই বাবাকে হারায় সোহেলা। তার পর থেকে মা-ই ভরসা! তাঁর মা সংযুক্তা সেনঘোষ একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব ভাল ও। ওকে কখনও আলাদা ভাবে বলতে হয় না পড়ার জন্য। এমন ফলাফল প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু এতটা ভাল হবে ভাবি নি’’।
১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়ত সোহেলা। আইসিএসই-তে দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে নাম ছিল তাঁর। ৯৮.৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে বার। বাবার চলে যাওয়ার পর পরিবারের অন্যেরা সোহেলার ভাল ফলাফলের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু অদম্য মনের জোর এবং পরিবারের সকলের বিশ্বাসেই এমন ফলাফল হয়েছে বলে মনে করে সোহেলা।