দেশে একের পর এক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে চলেছে। এ ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ, তা জানতে দায়ের হয়েছে একাধিক মামলা। এই ঘটনা রুখতে এবং পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজর দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করেছে শীর্ষ আদালত। পড়ুয়াদের মনের কথা জানতে বিশেষ সমীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেই সমীক্ষায় যোগ দেওয়ার জন্য মেডিক্যাল পড়ুয়াদের আর্জি জানিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টের নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স’ গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে রয়েছেন নানা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞেরা, যাঁরা পড়ুয়াদের পাশাপাশি, তাঁদের অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থেরাপিস্ট, কাউন্সেলর, এবং আধিকারিকদের সমস্যা খতিয়ে দেখবেন। কমিটির নামেই একটি ওয়েবসাইটও চালু করা হয়েছে, যেখানে সকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যার কথা সমীক্ষার মাধ্যমে জানাতে পারবেন।
— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
তবে, শুধুমাত্র সমস্যাই নয়, পড়ুয়া বা তাঁর অভিভাবকের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি, বাড়ির আর কত জন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন, ক্যাম্পাসে সহপাঠীরা কেমন ব্যবহার করছেন, কোনও সমস্যা হলে কর্তৃপক্ষ কোনও সহযোগিতা করছে কী না, সহজে পড়ুয়ারা মানসিক সমস্যার কথা বলতে পারছেন বা তার সমাধান করা হচ্ছে— এই সমস্ত বিষয় নিয়ে অভিযোগ বা বক্তব্য জানানোর সুযোগ থাকছে।
৪ কোটি ৪৬ লক্ষ পড়ুয়া এবং ১৬ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে দেশের ৬০,৩৮০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-এ ১৩,০৪৪ জন পড়ুয়ার মৃত্যু আত্মহত্যার কারণে হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি মানসিক স্বাস্থ্যে দেখভালের জন্য কোনও ব্যবস্থা রয়েছে কিনা, পড়ুয়ারা তাতে উপকৃত হয় কি না— তা খতিয়ে দেখতে দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স।
সম্প্রতি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘটনার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও পরিদর্শন করতে আসেন কমিটি সদস্যরা। ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিক সেই সময় জানিয়েছিলেন, সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিদর্শন সম্পূর্ণ হলে রিপোর্ট তৈরি করা হবে।