প্রতীকী চিত্র।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষের পর্যায়ে। স্কুলগুলি অনলাইনে ক্লাস নেবার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। কারণ, এক দিকে বই নেই, অন্য দিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে স্কুল চত্বর। অনলাইন বা অফলাইন ক্লাস হবে কী করে? সিমেস্টার পদ্ধতিতে সময় মতো পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে এখন চিন্তায় প্রধান শিক্ষকেরা।
শ্যামবাজার পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “অনলাইনে ক্লাস করানোর সমস্ত রকমের সুবিধা থাকলেও একাদশের কোনও বই হাতে না পাওয়ার ফলে করা সম্ভব নয়। ৩ তারিখ থেকে স্কুল খুললেও কেন্দ্রীয় বাহিনী না যাওয়া পর্যন্ত ক্লাসও শুরু করতে পারব না। কবে শেষ হবে সিলেবাস, তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা রয়েছে।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, বই সময় মতো চলে আসবে। ইতিমধ্যেই বহু বইয়ে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে টিবি নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ধরনের বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪০-এর বেশি। ল্যাঙ্গোয়েজ বিষয়ের বইও দ্রুত স্কুলগুলিতে পৌঁছে যাবে।
এ প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “বেশ কিছু বই বাজারে এসে গেছে। আশা করি সঙ্কট হবে না। মে মাসের শেষ সপ্তাহ বা জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।”
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের টিচার ইনচার্জ শবরী ভট্টাচার্য বলেন, “বই এখনও না পেলেও আমরা সিলেবাসটা জানি, কী কী বিষয় পড়ানো হবে তা-ও জানি। তাই শিক্ষিকাদের নিয়ে একটি গ্রুপ ক্রিয়েট করেছি। তাঁরা তাঁদের মতো প্রাথমিক ভাবে অনলাইন ক্লাস করাবেন। তবে বই থাকলে যে ভাবে ক্লাস শুরু করা যেত, সে ভাবে করা যাবে না। ৩ তারিখ থেকে স্কুল খুললেও প্রথমে আমরা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ডাকব বিকল্প দিনে। তারপর কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে সমস্ত স্কুল স্বাভাবিক ভাবে শুরু হবে।”
তিন তারিখ থেকে স্কুল খুললেও ৪ তারিখ লোকসভা নির্বাচনে ভোট গণনা রয়েছে। ততদিন পর্যন্ত স্কুলগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বলে মনে করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারপর তারা চলে গেলেও স্কুল পরিষ্কার করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আরও এক থেকে দু’দিন লাগবে বলে দাবি বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষকের। সে ক্ষেত্রে ৩ জুন থেকে স্কুলে কী ভাবে ক্লাস শুরু হবে, তা নিয়ে চিন্তিত সব পক্ষই।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, "আমরা জানি নতুন সিলেবাস চালু করতে গেলে তার প্রক্রিয়া অনেক আগে থেকেই শুরু করতে হয়। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সেই প্রক্রিয়া দেরি করে শুরু করায় প্রকাশকরা প্রত্যাশিত সময় টিবি নাম্বার পাননি। তার ফলে কলেজ স্ট্রিটে পাঠ্যপুস্তকের আকাল। শুধু তাই নয়। স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বইয়ের সৌজন্য কপিও পাননি। স্বাভাবিক ভাবে অনেক স্কুল শিক্ষা সংসদ নির্দেশ মেনে অনলাইন ক্লাস করতে চাইলেও করতে পারছেন না। এটা সার্বিক পরিকল্পনার অভাবের কারণেই হয়েছে বলে আমরা মনে করি।"
প্রসঙ্গত জুন মাসের ১ তারিখ লোকসভা নির্বাচন শেষ হচ্ছে। ফলাফল ঘোষণা হবে ৪ জুন। আর ঠিক তার এক দিন আগে ৩ জুন স্কুল খোলার কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকার স্কুল খোলার কথা জানালেও নির্বাচনের ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী কবে স্কুল থেকে যাবে, তা নিয়ে স্পষ্ট জবাব দিতে পারেনি স্কুলগুলি। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন-- তা হলে ক্লাস কবে শুরু হবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy