সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনে শুক্রবার দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে শিক্ষক দিবস। ব্যতিক্রমী ছবি এ রাজ্যে। কোথাও শিক্ষকেরা রাজপথে, হুইল চেয়ারে বসে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন। আবার কোথাও ‘যোগ্য’ হয়েও শিক্ষকতার চাকরি হারিয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
২০২২ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা শুক্রবার শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন এর সাউথ গেটের কাছে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের ছবি নিয়ে পালন করলেন শিক্ষক দিবস। সেখান থেকেই দ্রুত নিয়োগের দাবি তুললেন তাঁরা। ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর টেট দিয়েছিলেন। ফল প্রকাশ হয়েছিল ২০২৩-এর ১০ ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে দু’বছরেরও বেশি সময়, হয়নি ইন্টারভিউ।
আরও পড়ুন:
২০২২ সালে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী বিদেশ গাজী বলেন, “রিপোর্ট বলছে ২২১৫টি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকসঙ্কটে ভুগছে। আমাদের প্রশ্ন, সরকার কেন প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করছে না? আমরা তো পাশ করে তিন বছর ধরে বসে রয়েছি।” তাঁদের দাবি, সঠিক সময় নিয়োগ হলে আজ তাঁরা স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেই শিক্ষকদিবস পালন করতে পারতেন। এ ভাবে রাজপথে নামতে হত না।
এ দিন চাকরিপ্রার্থীদের হাতে ছিল নিয়োগের দাবি লেখা নানান ধরনের পোস্টার। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল নাকি তাঁদের জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকের শূন্যপদ রয়েছে ৫০,০০০। প্রতি বছর টেট হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, দাবি চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু তার কিছুই বাস্তবায়িত হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা দাবি করেছেন, নিয়োগ আটকে রয়েছে আইনি জটিলতায়। জট কাটলেই নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, রাজ্যের চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দ্বিতীয় এসএমএসটি পরীক্ষায় বসবেন। এখন তাঁরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। যে স্কুলে এত দিন পড়াতেন, সেখান থেকে এ দিন ফোন এসেছে অনেকের কাছেই। কিন্তু অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার মতো সময় বা মানসিক অবস্থা নেই তাঁদের। তেমন একজন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক মেহবুব মণ্ডল বলেন, “পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই আমাদের। ছাত্রদের ফোন আসছে। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি একেবারে বদলে গিয়েছে। যে বিপাকে পড়েছি, তা থেকে নিস্তারের পথ খুঁজছি আমরা সবাই।”
শিক্ষিকা রূপা কর্মকার বলেন, “নতুন করে পরীক্ষায় বসার মতো মানসিক অবস্থাও নেই। তবু বসতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে আমাদের দ্বিতীয়বার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হচ্ছে। অথচ, সরকার এখনও ‘অযোগ্য’দের পাশেই দাঁড়াচ্ছে!”