দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। ২১ মাসের মাথায় প্রকাশিত হল ২০২৩ সালের টেটের ফল। শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬ হাজার ৭৫৪ জন। প্রথম ১০-এর মধ্যে ৬৪ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। তবে, পাশ করলেও কবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষক পদপ্রার্থীদের একাংশ। পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিল ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৫৪ জন। পরীক্ষা দিয়ে ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৪৭ জন। পাশের হার ২.৪ শতাংশ।
সফল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তালিকায় প্রথম হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ইনা সিংহ। প্রাপ্ত নম্বর ১২৫। দ্বিতীয় হয়েছেন মুর্শিদাবাদের কাজল কুটি। তার মোট নম্বর ১১৬। তৃতীয় হয়েছেন দু'জন বাঁকুড়ার সৌমিক মণ্ডল এবং উত্তর ২৪ পরগনার স্বর্ণেন্দু ভড়। দু'জনের প্রাপ্ত নম্বর ১১৫।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সফল প্রার্থীদের যেমন শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, "নিয়োগের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শীঘ্রই-শূন্য পদ পূরণের জন্য বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চলেছে।"
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে স্বচ্ছতার জন্য বুধবার দুপুর ২ থেকে পর্ষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের ওয়েমারের অরিজিনাল কপি আপলোড করা হবে। সেখান থেকে তাঁরা দেখতে পাবেন।
২০২৩ টেট ঐক্য মঞ্চের সদস্য রাজকুমার কুড়মি বলেন, “ফল প্রকাশ হলেও নিয়োগ কবে হবে? এখনও ২০২২-এর নিয়োগ প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।” চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি, পরীক্ষা নিয়ে নানান আইনি জটিলতা, ওবিসি সংরক্ষণের কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে ফল প্রকাশ করেনি পর্ষদ। ‘আনসার কি’ প্রকাশের পর নিয়মমতোই প্রশ্নও চ্যালেঞ্জ করেছে অনেকেই। কিন্তু এত করেও যদি চাকরি না পাওয়া যায়! দুশ্চিন্তায় চাকরিপ্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ওই পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। প্রায় দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থী পাশ করলেও পরবর্তীকালে ডিএলএড-এর বৈধতা না থাকায় আইনি জটিলতার কারণে উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা কমে হয় প্রায় ৪০ হাজার। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়াই এখনও পর্যন্ত শুরু করে উঠতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের পুজো মিটলেই ২০২২ এবং ২০২৩-এর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। ইতিমধ্যেই প্রাথমিকে ১৩ হাজার ৪২১ মত শূন্য পদ রয়েছে, যা অর্থ দপ্তরের অনুমতি অপেক্ষায়।
একাধিক বার চাকরির দাবিতে পথেও নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র।
এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়ে ২০২৩-এর পরীক্ষাতেও। এর উত্তরে পর্ষদের যুক্তি ছিল, ডিএলএড উত্তীর্ণেরাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলেন, তাই এ বারের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।
এর পর ২০২৪-এর ৭ মে পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর কোনটি, তা জানানো হয়। যদি কোনও প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিয়ে কোনও পরীক্ষার্থীর দ্বিমত থাকে, সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন চ্যালেঞ্জ করারও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ জানানোর সময়সীমা ছিল ১০ মে থেকে ৯ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। তার পর ‘ফাইনাল আনসার কি’ ২৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়।