এক সময় মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভদের কাজের গুরুত্ব ছিল। অনেকেই এই কাজের জন্য নিজেকে তৈরি করতেন স্নাতক পড়ার সময় থেকেই। এখনও এই পেশার গুরুত্ব রয়েছে। তবে অনেকেই জানেন না পেশাগত ভাবে মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ বা এমআর হতে চাইলে কী ভাবে এগোতে হবে।
মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ বা এমআর কারা?
প্রধানত চিকিৎসা সংক্রান্ত সামগ্রী বা ওষুধের বিক্রয়ের জন্য বিপণন সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে থাকেন মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভেরা। এ কাজ অনেকাংশেই মার্কেটিং বিভাগের প্রতিনিধিদের মতো। তবে, পরিসর আবদ্ধ শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রেই। তাই চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয় তাঁদের। ওষুধ বা চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত ও বিক্রয়কারী সংস্থার হয়ে সেই ওষুধ বা চিকিৎসা সরঞ্জামের কার্যকারিতা বোঝাতে হয় চিকিৎসক বা চিকিৎসা সংস্থার কর্তাদের।
কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন
জীববিদ্যা, ফার্মেসি বা নার্সিং-এ স্নাতক হয়েছেন যাঁরা, তাঁরা অনায়াসে এই কাজে যোগ দিতে পারেন। বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি থাকলেও এমআর হওয়া যায়। আবার যাঁদের মাস্টার অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) ডিগ্রি রয়েছে তাঁরাও এমআর হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন।
তবে, যে কোনও পেশায় স্পেশ্যালাইজ়েশনের একটা গুরুত্ব থাকে। মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেশন নিয়ে বিশেষ পড়াশোনা করলে কাজে অগ্রগতি ও পদোন্নতি সম্ভব। এমআর হওয়ার জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম, বায়োটেকনোলজি বা ফার্মাসিউটিক্যাল-সহ বিভিন্ন বিষয় বিশেষপত্র হিসাবে পড়া যেতে পারে। এই ধরনের কোর্স করানো হয় বিভিন্ন সংস্থার তরফে। শংসাপত্র পাওয়ার পর প্রার্থীরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রশিক্ষণও পারেন।
রাজ্য অথবা দেশের মধ্যে সরাসরি কোনও প্রতিষ্ঠানে এমআর আলাদা ভাবে পড়ার সুযোগ থাকে না। তবে বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বল্প মেয়াদের এমআর সার্টিফিকেট কোর্স পড়ার সুযোগ থাকে।
তবে, সফল মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ হতে গেলে মানুষের সঙ্গে কথা বলার স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের ওষুধ অথবা চিকিৎসার সরঞ্জাম সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দেওয়ার আগে সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করে নেওয়া প্রয়োজন। ওষুধের প্রভাব, সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ওষুধ ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় বিস্তর জ্ঞান থাকতে হয়।
আরও পড়ুন:
কী কাজ করতে হয়?
চিকিৎসক এবং এই সংক্রান্ত পেশার সঙ্গে যুক্ত যারা রয়েছেন, তাঁদের কাছে নতুন চিকিৎসা-পণ্য বা ওষুধ সম্পর্কিত তথ্য বিষদে জানানো এবং উপস্থাপনা করা।
চিকিৎসক বা চিকিৎসা-সংক্রান্ত পেশাদারদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করে কথা বলা।
যাঁদের কাছে চিকিৎসার সরঞ্জাম বিক্রি করবেন, তাঁদের পণ্যের বিস্তারিত ব্যবহার কৌশল দেখানো।
চিকিৎসকদের ঠিক কী প্রয়োজন, সে সম্পর্কে অবগত থাকা। চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কখন কী ঘটছে, তা-ও জেনে রাখা দরকার।
নিজের পণ্যের বাইরে, অন্য কোন সংস্থা কী পণ্য বাজারে আনছে, তার খবরও রাখা দরকার।
চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ—
এমআর হিসাবে সরকারি চাকরির সুযোগ প্রায় নেই। মূলত বেসরকারি সংস্থায় প্রচুর সুযোগ মিলতে পারে। নামজাদা বহু ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা এমআর নিয়োগ করে থাকে। তাঁদের ওয়েবসাইটে অনেক সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সাধারণত এই পেশায় শুরুর দিকে মাসিক বেতন ২০-২৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে। তবে পদোন্নতির সুযোগ এবং বেতন বৃদ্ধির সুযোগও থাকে।