পশ্চিমবঙ্গের অন্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র শংসাপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি রাজ্যের বিজ্ঞপ্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল হাই কোর্ট। সোমবার ওই নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এখন প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পরীক্ষার ফল কবে বের হবে।
এ প্রসঙ্গে জয়েন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা রেজাল্ট বের করার জন্য তৈরি। সবার আগে সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার কপি, তার সঙ্গে সরকারি নির্দেশ আসা অত্যন্ত প্রয়োজন।’’
আরও পড়ুন:
সময়মতো রেজাল্ট বের না হওয়ায় উৎকণ্ঠা যেমন বাড়ছে অভিভাবকদের, পাশাপাশি হতাশা গ্রাস করছে পড়ুয়াদেরও।
এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁরা প্রত্যেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে এবং জয়েন্টের পরীক্ষাও দিয়েছে। তাঁদের অনেকের ইচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করবে। কিন্তু রেজাল্ট না বের হওয়ায় হতাশ হয়ে কেউ অন্যত্র অ্যাডমিশন নিয়েছে। আবার অনেকে অ্যাডমিশন নিয়েও সেখানে ভর্তি হয়নি। এ রাজ্য থেকেই পড়াশোনা করবে বলে।
আরও পড়ুন:
নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে সিবিএসই পাশ করেছে বর্ষা সেনগুপ্ত। ইচ্ছে ছিল যাদবপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করবে। কিন্তু সময়মতো ফল ঘোষণা না হওয়ায় বাধ্য হয়েছে অন্যত্র ভর্তি হতে। বর্ষা বলেন, ‘‘যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু হতাশ হয়ে শিবপুরে ইনফরমেশন টেকনোলজি নিয়ে ভর্তি হয়েছি। তবে জয়েন্টের রেজাল্ট বের হলে আমি যাদবপুরে ভর্তি হতে চাই।’’
আরুশি ঘোষ বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ভর্তির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র যাব না বলে শেষ মুহূর্তে সেখানে আর ভর্তি হইনি। তবে একটা হতাশা কাজ করছে রেজাল্ট বের হচ্ছে না বলে।’’
সোমবারের শুনানির পরে শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, হাই কোর্টের নির্দেশকে ‘প্রাথমিক ভাবে ভুল’ বলে মনে করছে তারা। সুপ্রিম কোর্টের মতে, বিজ্ঞপ্তি জারির ক্ষেত্রে কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। সেটি ঠিক হতেও পারে, না-ও হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে হাই কোর্ট। তবে আপাতত হাই কোর্টের নির্দেশকে ‘বিতর্কিত’ বলে উল্লেখ করে সেটির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
অচিস্মিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আমার বন্ধুরা ভিন রাজ্যে পড়তে চলে গিয়েছেন। আমি নিজেও রাজস্থানের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। রাজ্য জয়েন্টে ভাল রেজাল্ট হয়েছে। তাই শেষ মুহূর্তে ভর্তি যাইনি। তবে একটা দ্বন্দ্ব কাজ করছে ভুল করলাম না তো!’’