Advertisement
E-Paper

চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুরনো চাকরিতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু রাজ্যে, অনিশ্চয়তা জারি

নিয়োগের জন্য সবুজ সংকেত দিল নবান্ন। স্বরাষ্ট্র দফতর, বিদ্যুৎ দফতর, বিপর্যয় ও মোকাবিলা দফতর চাকরি ছেড়ে শিক্ষক- শিক্ষিকার চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁদের এই তিন দফতরে ২০ জনকে ফের বহাল করার জন্য চিঠি দেওয়া হল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ১৭:১৩

—ফাইল চিত্র।

চাকরিহারা শিক্ষকদের পুরন‌ো চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল রাজ্য। ২০১৬ এসএসসি নিয়োগের আগে যে চাকরি করতেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা, তাঁদের সেই চাকরিতে পুনর্বহাল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। এখন‌ও পর্যন্ত ২০ জনকে বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরে পুনর্বহাল করার সবুজ সংকেত দিয়েছে নবান্ন।

এই ২০ জন মূলত স্বরাষ্ট্র দফতর, বিদ্যুৎ দফতর, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এ বার তাঁদের পুরনো চাকরিতে বহাল করার জন্য নবান্ন চিঠি দিল সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে। জানা গিয়েছে, এঁদের মধ্যে পাঁচজন স্বরাষ্ট্র দফতরের চাকরি ছেড়ে স্কুল শিক্ষায় যোগ দিতে চেয়েছিলেন। তবে শুধু এই ২০ জনই নন, এখন‌ও পর্যন্ত প্রায় ৪,৫০০ আবেদন জমা পড়েছে, যাঁরা তাঁদের পুরন‌ো সরকারি চাকরিতে ফিরে যেতে চান। সে সব আবেদন খতিয়ে দেখছে রাজ্য।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা পুরনো কাজে ফিরে যেতে চাইলে, আবেদনের তিন মাসের মধ্যে পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে। সে ক্ষেত্রে অনেক দেরিতে কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার, এমন অভিযোগ করছেন অনেক ‘যোগ্য’ চাকরিহারা। আবার আশঙ্কার প্রহর গুনছেন অনেকেই। তাঁরা মনে করছেন, এ বার তাঁদের দূরের কোনও কর্মস্থলে পুনর্বহাল করা হতে পারে।

২০১৬ এর আগে নিউ ফারাক্কা হাইস্কুলে মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি শিক্ষকতা করতেন অভিজিৎ জানা। তার পর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির কাছে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতার চাকরি পান। দুর্নীতির কারণে প্যানেল বাতিল হওয়ায় ‘যোগ্য’ হয়েও তাঁর চাকরি গিয়েছে। গত ২১ এপ্রিল তিনি পুরন‌ো চাকরির ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন শিক্ষা কমিশনারের কাছে। তার পর কেটে গিয়েছে তিন মাস। এখনও কোনও উত্তর পাননি তিনি।

অভিজিৎ বলেন, “পুরনো চাকরিতে ফিরে যাব বলে নতুন করে পরীক্ষায় বসার আবেদন করিনি আর। আমার আবেদনের তিন মাস অতিক্রান্ত। এ বার যদি কোনও সদুত্তর না পাই, তা হলে কী করব জানা নেই। দুশ্চিন্তায় রয়েছি।”

এমনই আর এক শিক্ষক অতনু চৌধুরী বলেন, “আইনি লড়াই করে পরীক্ষা দিয়ে আমরা বাড়ির কাছের স্কুলে চাকরি পেয়েছিলাম। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে আজ আমরা চাকরিহারা। আমরা আশঙ্কা করছি, আবার আমাদের দূরবর্তী জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশ মেনে পুনর্বহাল প্রক্রিয়া আরও আগে শুরু করা উচিত ছিল।”

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “প্রায় চারমাস পর পুনর্বহাল প্রক্রিয়া শুরু হল। আমরা শিক্ষা দফতরের কাছে আবার দাবি করছি যাঁরা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী হিসেবে ফিরে যেতে চান তাঁদেরকে দ্রুত সুবিধাজনক জায়গায় পোস্টিং দেওয়া হোক।”

জানা গিয়েছে, বিকাশ ভবন, শিক্ষা কমিশনার, মুখ্য সচিব, প্রাইমারি, জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল-এ এই পুনর্বহাল সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়েছে পৃথক ভাবে। অনেকে আবার মাদ্রাসা এবং এসএসসি দফতরে দরখাস্ত করেছেন। সে বিষয়ে তথ্য জানানোর জন্যই গত জুনে রাজ্যের সব প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ডিআই-এর কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। জানতে চাওয়া হয়েছে আবেদনকারীরা আগে কোথায় চাকরি করতেন, ২০১৬ এসএলএসটি-তে কোন স্কুলে তাঁরা যোগদান করেছিলেন, সেখানে ‘অ্যাপ্রুভাল’ হয়েছিল কি না, ঠিক মতোই বেতন পাচ্ছিলেন কি না, বদলি হয়েছিলেন কি না ইত্যাদি।

জানা গিয়েছে, এ সব তথ্য ইতিমধ্যেই সরকারের হাতে এসেছে। শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে তা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল-এর কাছে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ পেলেই পদক্ষেপ করা হবে।

WBSSC Teacher Recruitment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy