Advertisement
E-Paper

শিক্ষাকর্মীর সঙ্কট! উচ্চ মাধ্যমিকের চূড়ান্ত সেমেস্টারে কী ভাবে কাজ করবে স্কুলগুলি?

এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। তার পর থেকে বহু স্কুলেই গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে আসন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৪৭
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

মাস দেড়েকের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে উচ্চমাধ্যমিকের চতুর্থ তথা চূ়ড়ান্ত সেমেস্টার। তার আগেই কর্মী সঙ্কটের আতঙ্ক তাড়া করছে স্কুলগুলিকে।

গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। তার পর থেকে বহু স্কুলেই গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে আসন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তিত কর্তৃপক্ষ।

দমদম অরবিন্দ বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রধানশিক্ষক অসীমকুমার নন্দের দাবি, “আমার স্কুলে দু’জন শিক্ষাকর্মী ছিলেন, তাঁরা দু’জনই চাকরি হারিয়েছেন। পরীক্ষা চালানোর জন্য পার্শ্ববর্তী স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে হবে। তাঁরা যদি রাজি না হন, তা হলে হয়তো শিক্ষাকর্মীর কাজ আমাকেই করে দিতে হবে।”

এই পরিস্থিতি বিভিন্ন স্কুলে। হিসাব বলছে, ২০১৬-র প্যানেলের বাতিল হওয়ায় প্রায় সব স্কুলেই দু’একজন করে শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে। চাকরি গিয়েছে কোনও কোনও শিক্ষকেরও। এই পরিস্থিতিতে এ বারই প্রথম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হতে চলেছে।

দমদমের মতিঝিল গার্লস হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষিকা পায়েল দে বলেন, “আমার স্কুলে শুধু এক জন ঘণ্টা বাজানোর কর্মী রয়েছেন। দু’টি করণিক পদ রয়েছে। ২০১৬ প্যানেল বাতিল হওয়ায় দু’জনেরই চাকরি গিয়েছে। সামনেই পরীক্ষা। আশপাশের স্কুলগুলিতেও শিক্ষাকর্মী সংখ্যা কম। কী ভাবে কাজ হবে, আমরা তা ভেবেই কুল পাচ্ছি না।”

এ প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “যে সব স্কুল পরীক্ষাকেন্দ্র হচ্ছে না, সে সব স্কুলে যদি পর্যাপ্ত গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী থাকেন, তা হলে তাঁদের পাশের স্কুলে পরীক্ষার দায়িত্ব সামলাতে হতে পারে। যে সব স্কুলে কর্মীসঙ্কট রয়েছে, তারা পার্শ্ববর্তী স্কুলের কর্মীদের সাহায্যে পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখবেন।”

কিন্তু সমস্যা শুধু শিক্ষাকর্মী নিয়ে নয়। ২০১৬ প্যানেল বাতিল হওয়ায় চাকরি গিয়েছে বহু শিক্ষকেরও। কিছু শিক্ষককে ‘দাগি’ চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে তাঁরা আর স্কুলে আসতে পারছেন না। সরাসরি দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি, এমন ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকেরা আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত সবেতন শিক্ষকতা করবেন বলে জানিয়েছে আদালত। কিন্তু তাঁরা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখবেন কি না, সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা, যাঁরা স্কুলের পঠনপাঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের খাতা দেখার অনুরোধ জানানো হবে সংসদের তরফে। কিন্তু তাঁরা যদি খাতা দেখার কাজ করতে না চান, তা হলে তাঁদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যাবে না বলেই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে প্রায় ৬ লক্ষ উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়ার খাতা দেখবেন কে? শিক্ষক মহলের আশঙ্কা, অতিরিক্ত খাতা দেখার চাপ পড়তে পারে তাঁদের উপর।

তবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বেশি ভাবছে শিক্ষাকর্মী সঙ্কট নিয়ে। সংসদের এক কর্তা জানিয়েছেন, শিক্ষকদের চেয়েও বেশি সমস্যা এই মুহূর্তে শিক্ষাকর্মী নিয়ে। তাই কী ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা তাঁরা ভেন্যু সুপারভাইজ়ারদের উপর ছেড়ে দিচ্ছেন। তাঁরাই ঠিক করবেন, পরীক্ষার সময় কী ভাবে, কোন স্কুল থেকে কর্মী আনা হবে। তবে জেলাভিত্তিক জয়েন্ট কনভেনাররা সচেষ্ট হবেন, যাতে পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়।

WBCHSE
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy