যে বাজারে অনেক উত্পাদক এবং ক্রেতা (পারফেক্ট কম্পিটিশন) তার নানা দিক অর্থনীতিতে বহু আলোচিত। যে বাজারে উত্পাদক বা বিক্রেতা মাত্র এক জন (মোনোপলি), তারও নানা দিকে অর্থনীতি আলো ফেলেছে। কিন্তু যে বাজারে কয়েক জন মাত্র উত্পাদক বা বিক্রেতা (অলিগোপলি), তার নানা সমস্যা দীর্ঘ দিন অর্থনীতিবিদদের ভাবিয়েছে। কী ভাবে এই বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? কী ভাবে এই ব্যবস্থাকে সর্বজনের হিতের জন্য ব্যবহার করা যায়? এই সব প্রশ্ন প্রচলিত অর্থনীতির তত্ত্বে ঠিকমতো ধরা যাচ্ছিল না। ১৯৮০-র দশকে এই প্রশ্নগুলির জন্য নতুন তত্ত্ব নিয়ে এলেন ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ জঁ তিরোল এবং তাঁর সমসাময়িক কয়েক জন অর্থনীতিবিদ। সেই কাজের স্বীকৃতিতে এ বছরের নোবেল উঠল তিরোল-এর হাতে।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তিরোল এই সময়ের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিবিদ। ফ্রান্সে অর্থনীতির প্রাথমিক পাঠ নিলেও ডক্টরেট করেন আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে। নানা বিষয় তিনি কাজ করলেও বাজারের ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁর কাজ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিরোলে-এর কাজ মূলত অলিগোপলি-র নানা দিক নিয়ে। দেখা গিয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন এই ধরনের বাজার ঠিকমতো কাজ করে না। এই বাজারে সামাজিক ভাবে কাক্ষিত ফল পাওয়া যায় না।
ফ্রান্সের অধ্যাপক তিরোল ১৯৮০-র দশক থেকে এই সমস্যাগুলি নিয়ে কাজ করছেন। প্রধানত দু’তি প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন তিনি। এক, এই ধরনের বাজারে বিভিন্ন সংস্থার মিশে যাওয়া (মার্জার) বা অধিগ্রহণ এবং তাদের অলিখিত পারস্পরিক বোঝাপড়াকে (কার্টেলস) সরকার কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? দুই, মনোপলিকে সরকার কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে?
প্রচলিত ধারণা ছিল, দাম নিয়ন্ত্রণ করে, বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার মধ্যে বোঝাপড়া বন্ধ করে এবং উত্পাদনের বিভিন্ন স্তরে থাকা সংস্থাগুলির মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলাই কাক্ষিত পথ। তিরোল দেখান প্রচলিত পথ সমস্যা জর্জরিত। তিনি দেখান, এমন কোনও নীতি নেই যা সব শিল্পের উপরে প্রয়োগ করা যায়। প্রতিটি শিল্পের জন্য আলাদা আলাদা নীতি নিতে হবে। কিন্তু কী হবে সেই নীতির মূল কাঠামো? বেশ কিছু গ্রন্থে তিরোল সেই সব ব্যাখ্যা করেছেন। এই নীতি ব্যবহার করে সরকারের পক্ষে কোনও সংস্থার উত্পাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব। সম্ভব অন্য সংস্থা এবং ক্রেতাদের সুরক্ষিত করাও। বর্তমানে তিনি ফ্রান্সের ‘তুলুজ স্কুল অফ ইকনমিক্স’-এ কর্মরত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy