ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ছেন ওয়াটসন-স্মিথরা। ছবি: এএফপি।
বিশ্বকাপের নক আউট পর্যায়ে ৩০০-র বেশি রান তাড়া করে আজ পর্যন্ত কোনও দল জেতেনি। ভারতও জিতল না। নিতান্তই একপেশে সেমিফাইনালে ভারতকে ৯৫ রানে হারাল টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট অস্ট্রেলিয়া। আগামী রবিবার মেলবোর্নের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবারের সেমিফাইনালের আগে পর্যন্ত বেশির ভাগ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞর মতে ম্যাচ ছিল ৫০-৫০। কারও মতে সামান্য এগিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে প্রায় কোনও লড়াই না করেই বিদায় নিল ধোনির ভারত। এবং তথাকথিত শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং পুড়ে ছাই হয়ে গেল স্টার্ক-জলসন-হ্যাজেলউডের ঝাঁঝালো পেস আক্রমণের সামনে। ২৩৩ রানের ভারতীয় ইনিংসের এক মাত্র অর্ধশতরান এল ধোনির ব্যাট থেকে।
কিন্তু যে ভারতীয় বোলিং শেষ সাত ম্যাচে ৭০ উইকেট নিয়েছে, এ দিন তারা এত ম্লান কেন? তিন ভারতীয় পেসারের মধ্যে সবচেয়ে ‘ভাল’ ইকনমি মহম্মদ শামির— ওভার প্রতি রান ৬.৮০। মোহিত শর্মা দিলেন ১০ ওভারে ৭৫। চার উইকেট নিলেও ন’ওভারে উমেশ যাদব দিলেন ৭২ রান। চলতি গ্রীষ্মে যখনই ভারতের সঙ্গে দেখা হয়েছে, তখনই ভারতীয় বোলারদের ‘কাঁদিয়ে’ ছেড়েছেন স্টিভ স্মিথ। সেই ট্র্যাডিশন এ দিনও বজায় রাখলেন অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য পরবর্তী অধিনায়ক। ৯৩ বলে ১০৫ রানের মহার্ঘ্য ইনিংস খেললেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ফিঞ্চ (৮১)-এর সঙ্গে ১৮২ রানের পার্টনারশিপ করেন স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার বড় রানের ভিত গড়া হয়ে গিয়েছিল ওই সময়েই। ফিঞ্চ-স্মিথের ভাল কাজকে পরিণতি দেন ম্যাক্সওয়েল, ওয়ার্নাররা। আর শেষ দিকে ন’বলে ২৭ রান করে দলের স্কোর বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাসটাও বাড়িয়ে রাখেন মিচেল জনসন।
অস্ট্রেলিয়া এক বার তিনশো পার করার পর কাজটা যথেষ্টই কঠিন ছিল। তবু ভারতীয় সমর্থকরা আশায় বুক বাধছিলেন একটি তথ্যে ভরসা করে— বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতীয়রাই একমাত্র দল যারা সবচেয়ে বেশি বার ৩০০-এর বেশি রান তাড়া করে জিতেছে। শুরুটা বেশ ভালি করেছিলেন ভারতীয় ওপেনাররা। প্রথম উইকেটে ওঠে ৭৬ রান। এর মধ্যে অবশ্য ধবনের একটি ক্যাচ ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ঘবন আউট হতে বিরাট নামায় ভরসা বাড়ে সমর্থদের। কিন্তু সেই ভরসা স্থায়ী হয় মাত্র ১৩ বল। গ্যালারিতে অনুষ্কার উজ্জ্বল উপস্থিতিকে ফিকে করে ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন কোহলি। শুরু হল ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বিখ্যাত আয়ারাম-গয়ারাম ট্র্যাডিশন। ভাল পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যাটিং যে কতটা অসহায়, তা ফের প্রমাণ করলেন রাহানে-রায়নারা। কিছুটা লড়লেন ধোনি। তবে তা ওই ‘কিছুটা’ই। স্টার্কদের পেস ব্যাটারির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বল করলেন জনসন। তিনিও ওভার পিছু রান দিলেন মাত্র পাঁচ।
পরের বছর টি-২০ বিশ্বকাপ। ওয়ান ডে বিশ্বকাপের তাজ নিজেদের দখলে না রাখতে পারলেও টি-২০ বিশ্বকাপ নিয়েই আপাতত আশায় বুক বাধছে ভারতীয় সমর্খকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy