শুরুতেই হোঁচট খেল ‘ব্লু ফিন’।
সোমবার সমুদ্রের তলদেশে নিখোঁজ মালয়েশীয় বিমান বোয়িং ৭৭৭-ইআর-এর খোঁজে ‘ব্লু ফিন’কে নামনো হয়। ‘ব্লু ফিন’ অনেকটা ছোট সাবমেরিনের মতো। সমুদ্রের তলায় ৪৫০০ মিটার পর্যন্ত নেমে তলদেশের ‘সোনার’ মানচিত্র (শব্দ মানচিত্র) তৈরি করে। নিখোঁজ বিমানটি ভারত মহাসাগরের ওই অঞ্চলে ভেঙে পড়লে ‘সোনার’ মানচিত্র বিশ্লেষণ করে তা জানা যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।
সোমবার কী অসুবিধা হয়?
অনুসন্ধান দল সূত্রে খবর, যানটি সমুদ্রের তলদেশের ৩০ মিটার উপর দিয়ে ম্যাপিং করে। সোমবার যেখানে ‘ব্লু ফিন’-কে নামানো হয় চার্ট অনুযায়ী সেখানে সমুদ্রের গভীরতা ৪২০০ থেকে ৪৪০০ মিটারের মধ্যে থাকার কথা। প্রায় দু’ঘণ্টা ডুব দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছনোর পরে যানটি জানায়, এখানে সমুদ্রের তলদেশের প্রকৃত গভীরতা ৪৫০০ মিটার। এই গভীরতায় যানটি কাজ করতে সক্ষম হলেও যেহেতু চার্টে সমুদ্রের গভীরতা ৪৪০০ মিটারের বেশি নয় বলা ছিল তাই সফ্টওয়্যার যানটিকে ম্যাপ তৈরির কাজ করতে দেয়নি। যানটি উপরে উঠে আসে।
অনুসন্ধান দলের সূত্রে খবর, ‘ব্লু ফিন’-এ এই ধরনের সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। আসলে চার্টের সঙ্গে প্রকৃত গভীরতা না-মিললে সফ্টওয়্যার-এর ‘সেফ্টি মেকানিজম’ কাজ করতে শুরু করে। মঙ্গলবার ‘ওসান শিল্ড’-এ থাকা এই যানটি আবার নামানো হবে বলে ‘জয়েন্ট এজেন্সি কোঅর্ডিনেশন সেন্টার’ (জেএসিসি) সূত্রে খবর। তবে মঙ্গলবার যানটিকে অন্য জায়গায় নামানো হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘ব্লু ফিন’ যে গতিতে কাজ করতে পারে তাতে বর্তমান অনুসন্ধানস্থলটি খুঁজতে দু’মাসের বেশি সময় লাগবে। জেএসিসি জানায়, ন’টি সামরিক বিমান, দু’টি অসামরিক বিমান এবং ১১টি জাহাজ পারথের ২১৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ৬২ হাজার ৬৩ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলে খোঁজ চালায়। তবে সমুদ্রের উপরে ধ্বংসাবশেষের সন্ধান আর কিছু দিনের মধ্যেই গুটিয়ে আনা হবে বলে জেএসিসি সূত্রে খবর। ব্ল্যাকবক্সের সঙ্কেত সন্ধানও বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কারণ, ৮ মার্চ ২৩৯ জন যাত্রীকে নিখোঁজ হওয়া বিমানটির ব্ল্যাকবক্সের সঙ্কেত পাঠানোর ক্ষমতা ৩০ দিনের বেশি থাকে না। সে ক্ষেত্রে নিখোঁজ বিমানের সন্ধানে ‘ব্লু ফিন’ই এক মাত্র ভরসা হয়ে উঠতে চলেছে বলে জেএসিসি সূত্রে খবর। তা ছাড়া সোমবার তেল ছড়িয়ে পড়ার যে সূত্র পাওয়া গিয়েছিল তার উত্স এখনও খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি।
এ দিকে নিখোঁজ বিমানের তদন্তে দেখা গিয়েছে, বিমানের ফার্স্ট অফিসারের মোবাইল ফোনটি চালু ছিল। বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার আধ ঘণ্টা পরেও দেখা যায়, ফার্স্ট অফিসারের মোবাইলটি, টাওয়ারের সন্ধান করছিল। মালয়েশিয়ার পেনাগের একটি টাওয়ারের সঙ্গে সংযোগও হয়। কিন্তু কোনও কথা হয়নি। এ সময়ে বিমানটি পশ্চিম দিকে দ্রুত মুখ ঘোরাচ্ছিল। তবে অন্য কোনও মোবাইল চালু ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy