গাঁধী মূর্তির পাদদেশে আয়োজিত মহাপঞ্চায়েতে কৃষক নেতারা। ছবি: পিটিআই
ভোটের মুখে বাংলায় বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে আরও মজবুত করার বার্তা দিলেন দিল্লির কৃষক নেতারা। ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত যেমন শনিবার কলকাতা থেকে বিজেপি-কে ভোট না দেওয়ার বার্তা দিলেন, তেমনই উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে পরিচিত মুখ মেধা পাটকর।
কলকাতায় গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সংযুক্ত কিসান মোর্চা আয়োজিত কিসান-মজদুর মহাপঞ্চায়েতে রাকেশ বললেন, ‘‘আর যাকে খুশি ভোট দিন, বিজেপি-কে একটিও ভোট দেবেন না। কারণ, দিল্লিতে কোনও প্রশাসন চলছে না, চলছে একটি ঠগের সরকার।’’ এক কথায় ‘নো ভোট টু বিজেপি’-র সুরই শোনা গেল কৃষক নেতাদের মুখে। শুধু কলকাতায় নয়, কৃষকদের শুক্রবার কর্মসূচি ছিল নন্দীগ্রামেও। কলকাতার মহাপঞ্চায়েত সেরে বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র নন্দীগ্রামে পৌঁছে যান নেতারা, ছিলেন রাকেশ টিকায়েতও। সেখানেও বিজেপি-কে ভোট না দেওয়ার প্রচার করেন। উল্লেখ্য, দিল্লির কৃষক নেতারা ছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন মেধা পাটকর, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনে যাঁকে নিয়মিত দেখা গিয়েছিল।
হাতে আর কয়েকদিন। তারপরই রাজ্যে নির্বাচনের প্রথম পর্ব। সেই কারণে কৃষক নেতাদের পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়ে আগ্রহ ছিল অনেকেরই। তবে আগে থেকেই কৃষকরা বলেছিলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের আহ্বানে তাঁরা আসছেন না। কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার আগেই দিল্লির আন্দোলনস্থল থেকে বলা হয়, ‘‘সারা দেশেই কৃষক-মজুরদের কাছে পৌঁছবেন দিল্লির আন্দোলনরত কৃষক নেতারা। এর সঙ্গে ভোটের কোনও যোগাযোগ নেই।’’ মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চ থেকে শুক্রবার সেই কথা টেনে আনেন রাকেশ। বলেন, ‘‘আমাদের বাংলা সফর নিয়ে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না, কেন বাংলা সফর নিয়ে এত প্রশ্ন। আমরা বাংলায় এসেছি রাজ্যের হাজার হাজার কৃষকের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে।’’
বাংলায় ভোটের প্রচারে নিয়মিত আসছেন দিল্লির বিজেপি নেতারা। সেই প্রসঙ্গ টেনে রাকেশের কটাক্ষ ‘‘শুনছি দিল্লির নেতারা পশ্চিমবঙ্গে আসছেন, থাকছেন। তাই আমরাও দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছি ওঁদের খুঁজতে।’’ শুধু তাই নয়, অমিত শাহ-সহ বিজেপি নেতারা যেভাবে বাংলা সফরে এসে বিভিন্ন সময়ে দাওয়ায় বসে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন, সেই নিয়েও কটাক্ষ করেন রাকেশ। বলেছেন, ‘‘ভোটের মুখে আপনার বাড়িতে যদি ভাত খেতে ওঁরা আসেন, তাহলে ভাত দেবেন। কিন্তু পাশাপাশি জিজ্ঞাসা করবেন, ধানের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের কী হল! আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দিল্লিতে কেউ আলোচনায় বসছেন না কেন? তিনটি কৃষি আইন কবে বাতিল করা হবে?’’
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি মতো কৃষক আন্দোলনের নেতারা নন্দীগ্রামে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করেন রাকেশ। তারপর বিকেলে কৃষকরা পৌঁছে যান নন্দীগ্রামে। সেখানেও কৃষকরা ঘোষণা করেন, ‘‘বিজেপি একটি কৃষক বিরোধী শক্তি। ওদের একটিও ভোট দেবেন না।’’
সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ প্রচার শুরু হয়েছে। কলকাতায় তো বটেই, জেলায় জেলায় এই প্রচার নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন বিজেপি বিরোধীরা। কৃষক নেতাদের সুর প্রথম থেকেই সেই প্রচারের সুরেই বাঁধা ছিল। তাঁরা বললেন, ‘‘বিজেপি আসলে একটি কর্পোরেটদের পার্টি। অনেকটা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো, এটা কোনও রাজনৈতিক দল চালায় না, চালায় কোম্পানি। তাই বিজেপি-কে একটিও ভোটও দেবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy