পড়াশোনা কি শুধু বইয়ের পাতায় আবদ্ধ! এ বার অন্য ভাবে ভাবতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের সমস্ত স্কুলের শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতির মানোন্নয়ন করতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুতুলনাচ, মাটির তাল থেকে মূর্তি তৈরি, পরিবেশ পরিচর্যার মতো সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে কী ভাবে পাঠদান করা যেতে পারে, তা নিয়েও চর্চা চলবে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এই প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়ে বিশদ জানানো হয়েছে।
প্রশিক্ষণের জন্য চারটি বিষয়ের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষকদের এই সমস্ত বিষয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী শিক্ষায় পুতুল নাচের ভূমিকা, পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিচর্যায় স্কুলের ভূমিকা, স্কুল শিক্ষায় শিল্পকলা চর্চার প্রাসঙ্গিকতা, দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার জানিয়েছেন, দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্য সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে চর্চার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের এই ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েই থাকে। তাই বিষয়টি যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, “পুতুল নাচের মাধ্যমে শিক্ষাদানের বিষয়টি ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। বর্তমানে পঠনপাঠনের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার করা হবে। এতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপকৃত হবেন।”
শিক্ষক সংগঠনের একাংশের দাবি, শিক্ষার সাথে সংস্কৃতির যোগ নিবিড়। কিন্তু বর্তমানে চরম প্রতিযোগিতা এবং সরকারের বিরূপ মনোভাবের কারণে এমন বিষয় নিয়ে চর্চার খুব বেশি সুযোগ নেই। তবে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মন্ডল অবশ্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে নিয়ে রাজ্য সরকারও শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে উৎসাহ দিচ্ছে। সমালোচনার জায়গা থাকলেও এই উদ্যোগ কার্যকরী করতে পারলে আখেরে শিক্ষা ব্যবস্থারই লাভ হবে।
সেন্টার ফর কালচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড ট্রেনিং (সিসিআরটি)-র তরফে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগ্রহী শিক্ষকদের স্কুলের তরফে এই প্রশিক্ষণের জন্য নাম নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। অসমের গুয়াহাটিতে ১৯ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত সিসিআরটি-র কর্মশালা চলবে। তাই দ্রুত শিক্ষকদের নাম নথিভুক্ত করার আর্জি জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।