রোগটার নাম ক্যানসার। এই মারণব্যাধিতে আক্রান্তরাই খুন হয়ে যাচ্ছেন একের পর এক। আর তার কিনারা করতে গিয়েই বেরিয়ে পড়া, কী ভাবে ক্যানসারের মতোই সমাজের স্তরে স্তরে ছড়িয়ে পড়ছে অপরাধ প্রবণতা। থাবা বসাচ্ছে খাস চিকিৎসা জগতের অন্দরে। তারই বুনোটে এগিয়েছে জি ফাইভ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘কর্কট রোগ’-এর গল্প। বাংলা ও হিন্দি, দুই ভাষায় মুক্তিপ্রাপ্ত এই মেডিক্যাল থ্রিলারের স্পেশাল স্ক্রিনিং হয়ে গেল সোমবার, বালিগঞ্জের একটি মাল্টিপ্লেক্সে। উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং কলাকুশলীরা। ছিলেন মূল গল্প ‘কর্কট ক্রান্তি’র লেখক ইন্দ্রনীল সান্যালও।
এ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র, অটোপ্সি সার্জেন বিয়াস বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই স্তন ক্যানসারের শিকার। সদ্য অস্ত্রোপচার করিয়ে তুমুল অবসাদ-হতাশার সঙ্গে যুঝতে থাকা বিয়াস কাজের জগতে ফেরেন। নতুন করে দক্ষ হাতে ময়নাতদন্তে মনোযোগ দিতে গিয়েই খেয়াল করেন, একের পর এক ঘটনায় শহরের নানা প্রান্ত থেকে আসা দেহগুলির প্রত্যেকটিতেই ক্যানসারের থাবা বসানোর চিহ্ন রয়েছে। আপাত ভাবে যোগাযোগহীন এই প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা কি তবে একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কযুক্ত? উত্তর খুঁজতে মরিয়া বিয়াসের সঙ্গী হন তরুণ পুলিশ অফিসার বরুণ সরকার। রহস্যের জাল কেটে দিনের আলোয় বেরিয়ে আসে চেনা জগতেরই এক অন্ধকার চেহারা। কী ভাবে? জবাব মিলবে ওয়েব সিরিজেই।
বিয়াসের ভূমিকায় চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী স্তন ক্যানসারের সঙ্গে লড়ার হতাশা-অবসাদে একেবারে জীবন্ত। শরীরের পূর্ণতা হারানোর দুঃখ কুরে কুরে খাওয়া অস্থির রাগের মুহূর্ত থেকে কর্তব্যবোধে অবিচল চিকিৎসকের সত্যিটা খুঁজে বার করার জেদ, অনায়াস অভিনয়ে নিপুণ ভাবে বিয়াসকে রূপ দিয়েছেন চিত্রাঙ্গদা। বিয়াসের প্রেমিক সৈকতের ভূমিকায় যোগ্য সঙ্গত করে গিয়েছেন টেলিপর্দার পরিচিত মুখ সুদীপ সরকার। মেধাবী চিকিৎসক, ভালবাসার মানুষকে আদরে-যত্নে-সহমর্মিতায় আগলে রাখা সৈকতও তাই নজর কাড়েন যথেষ্ট। সাহসী ও দক্ষ অফিসার বরুণের ভূমিকায় ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের সাবলীল অভিনয়ও দাগ কাটে গল্পের অলিগলি জুড়ে। তবে তাঁর চরিত্রকে হয়তো বা আরও খানিকটা জায়গা দেওয়া যেতে পারত।পার্শ্বচরিত্রে রাজেশ শর্মা স্বল্প পরিসরেও জাত চিনিয়ে যান স্বভাবসিদ্ধ বলিষ্ঠ অভিনয়ে। ছোট্ট একটি চরিত্র ঋকের ভূমিকায় আর্য দাশগুপ্তকেও আলাদা করে চোখে পড়ে।