নারীনিগ্রহ কি আজকের? নাকি শুধুই বঙ্গভূমে ঘটে চলেছে অহরহ? বাংলা পেরিয়ে যাঁদের জগৎ বিশ্বময়, তাঁরা জানেন, বোস্টনে প্রথম ডাইনি সন্দেহে নারীনিগ্রহ ঘটেছিল। অত্যাচারের সেই শুরু। এখন যা প্রায় প্রতি ঘরে, প্রতি শহরে।
২০ নভেম্বর চেতনা নাট্যোৎসব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অ্যাকাডেমিতে। সেখানে মঞ্চস্থ হবে অবন্তী চক্রবর্তীর নাটক ‘তিন এক্কে তিন’। কাকতালীয় ভাবে বোস্টনের এক প্রবাসী বাঙালি তম্বী চৌধুরী নাটকটি লিখেছেন। তাঁর কলম সেতুবন্ধ ঘটিয়েছে বিশ্ব-বাংলার। বোস্টনের সেই কালিমালিপ্ত ঘটনা থেকে গত বছরের আরজি কর-কাণ্ড— সব উঠে আসবে এই নাটকে। বাদ থাকবে না সেই ‘নির্ভয়া’-কাণ্ডও। অভিনয়ে সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়, উষসী চক্রবর্তী, ইন্দুদীপা এবং নাট্যকার স্বয়ং। খবর, আরজি কর কলেজ এবং হাসপাতালে ধর্ষণের পরে খুন হয়ে যাওয়া তরুণী চিকিৎসকের ভূমিকায় উষসীকে দেখা যাবে।
যে ঘটনা এখনও বিচারাধীন সেই ঘটনা নাটকের বিষয়... কথা ফুরোনোর আগেই বক্তব্য জানালেন নাট্য পরিচালক। আনন্দবাজার ডট কম-কে অবন্তী বললেন, “আরজি কর-কাণ্ডকে নতুন করে চর্চায় আনা আমাদের লক্ষ্য নয়। নারী নিগ্রহের ইতিহাসে বিশ্বের কথা যেমন থাকবে, তেমনই নিজের ঘরকে উপেক্ষা করি কী করে? তাই দিল্লি বা দক্ষিণ ভারতে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে জায়গা করে নিচ্ছে এই ঘটনাটিও।”
আরজি কর-কাণ্ডে যখন কলকাতা উত্তাল, তখন পথে নেমেছিলেন অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী। তিনি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিলেন আন্দোলনের সঙ্গে। সেই জন্যই কি তাঁকে বাছা?
অস্বীকার করেননি অবন্তী। বলেছেন, “এটি অবশ্যই অন্যতম কারণ। তবে একমাত্র কারণ নয়।” একই বক্তব্য উষসীরও। তাঁর কথায়, “অন্যান্য নিগৃহীতার ভূমিকাতেও আমায় দেখা যাবে। অবন্তীর সঙ্গে প্রথম কাজ ‘ট্রয়’। নাটকটি বহুল চর্চিত। তাই দ্বিতীয় বার ডাক পেয়ে না বলিনি।” পাশাপাশি এ-ও জানাচ্ছেন, নিগৃহীতাদের জীবন পড়তে পড়তে ভীষণ মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে তাঁর। মনে ছাপ-চাপ, দুটোই পড়ছে! একই সঙ্গে একটু ভয়ও পাচ্ছেন ঊষসী। “নাটক খুব কম করেছি। আমি পর্দার অভিনেত্রী। ক্যামেরার মাধ্যমে দর্শকদের সঙ্গে সংযোগস্থাপন আর মঞ্চ থেকে সরাসরি সংযোগস্থাপন— দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। দ্বিতীয়টি আমার কাছে ভয়ের বেশি।”
আরও পড়ুন:
অতিচর্চিত একটি ঘটনা যদি মঞ্চে উঠে আসে, তা হলে রাজ্য সরকারের কোপে পড়তে পারেন— এই ভয় নেই অবন্তী, উষসীর?
উভয়েই জানালেন, শুধু এই একটি বিষয় নাটকে দেখানো হচ্ছে না। উষসীর কথায়, “এত ভেবে কোনও দিন কাজ করিনি। সেঁজুতিদির সঙ্গে অভিনয় করতে পারব, সেই লোভটাই বেশি।”