Advertisement
E-Paper

‘পুজোর সময় মানেই হরির লুট, তাতে যা পাওয়া যায়’, ছবিমুক্তি ও প্রচার নিয়ে অকপট অনীক

এই প্রথম পুজোয় অনীক দত্তের ছবি মুক্তি পাচ্ছে। মুখ্য চরিত্রে আবীর চট্টোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ছবির প্রচারে আবীরের অনুপস্থিতি বা অংশগ্রহণ না করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:০৪
পরিচালক অনীক দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।

পরিচালক অনীক দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।

মুক্তি পেয়েছে অনীক দত্ত পরিচালিত ‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’। মুখ্য চরিত্রে আবীর চট্টোপাধ্যায় ও কাজী নওসাবা আহমেদ। পুজোর প্রথম ছবি থেকে চলতি সময়ের প্রচারকৌশল, ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা থেকে নিজের কাজে সত্যজিৎ রায়ের ছায়া— সব নিয়েই আনন্দবাজার ডট কম-এর মুখোমুখি পরিচালক।

প্রশ্ন: এই প্রথম পুজোর সময় আপনার ছবিমুক্তি। বছর দুয়েক ধরে পুজোর সময় ছবিমুক্তি ঘিরে উন্মাদনা এবং একই সঙ্গে অশান্তি— কেমন লাগে?

অনীক: এই নিয়ে কোনও উন্মাদনা নেই। নিজেও পুজোর সময় ছবির মুক্তি নিয়ে বাড়তি উৎসাহী নই। কারণ, পুজোর সময় নিজেই বেরোই না! মনে হয়, আমার মতো কিছু লোক আছেন যাঁরা হয় পুজোর সময় কলকাতার বাইরে থাকেন। কিংবা কলকাতায় থাকলেও ঘরের বাইরে খুব একটা বেরোন না। পুজো খুব একটা উপভোগ করি না। কিন্তু শুনলাম, লোকে নাকি প্রেক্ষাগৃহে যায়! দর্শকদের অশেষ উৎসাহ, এই ভিড় ঠেলে ঠাকুর দেখেন, সিনেমা দেখেন, খাওয়া-দাওয়া করেন।

প্রশ্ন: দেবের ছবির প্রচার-ঝলক মুক্তির অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি হয়ছবিমুক্তির পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে, প্রচারের পদ্ধতিও বদলাচ্ছে এখন সেটার গুরুত্ব পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না বোধহয়।

অনীক: টিকিট কেটে বা না কেটে কোনও প্রচার-ঝলক মুক্তিতে আমি যাই না। আমাদের প্রচার-ঝলক মুক্তির অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যম, ছবির কলাকুশলীরা থাকেন। শুনেছি পয়সা দিয়ে দেবকে দেখতে যান অনেকে, আমাদের তো দেখতে আসবেন না কেউ। যাঁদের যেটা মনে হচ্ছে, করছেন। আমি প্রচারের নামে হইহই কাণ্ড করিনি। প্রযোজক জানেন, বাড়াবাড়ি পছন্দ করি না। ওদের হয়তো অনেক বেশি দর্শক। অনেক কিছুই তো হচ্ছে দেখলাম। ঘোড়সওয়ার হয়ে প্রচার ইত্যাদি। সেটা যার যার রুচি। আর দর্শকের চাহিদা? সব ছবির দর্শক যে এক হবে, তা তো নয়।

প্রশ্ন: অনেকের আফসোস, পুজোয় এত ছবির ভিড়ে কেন আপনার ছবি মুক্তি পাচ্ছে!

অনীক: অনেকেই দেখা হলে বলেন, বাংলা ছবি এমনি দেখি না। কিন্তু আপনার ছবি দেখি। এ বার এটাও হতে পারে, একই কথা হয়তো বিভিন্ন পরিচালককে তাঁরা বলছেন। তবে প্রশংসা শুনতে কার না ভাল লাগে?

তবে পুজোর মধ্যে ছবিমুক্তি নিয়ে আমারও বক্তব্য ছিল। কিন্তু টাকা যিনি লগ্নি করেছেন, দিনের শেষে সেই প্রযোজকের মনে হয়েছে শারদীয়ায় হরির লুট হচ্ছে। আমিও কাপড় পেতে দাঁড়াই আর কী! আদৌ সেটা হয় কি না, সেটা আপনারা ভাল বলতে পারবেন। নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ পুজোয় ছবি দেখতে যাবেনই। তাঁদের ছিটেফোঁটাও যদি পাওয়া যায় আর কী। হয়তো অন্যেরা অনেক বেশি পাবেন, যেগুলো ‘ম্যাগনাম ওপাস’! তাই এই ব্যাপারে কিছু বলতে আমি অপারগ। আমার আপত্তি থাকলেও ধোপে টিকবে না।

তা ছাড়া, আমার ছবি নিয়ে প্রচুর আশা— ইত্যাদি বলতে কুণ্ঠা হয়। কোনওটা যদি ঝোলাই! এই সিনেমার শুটিংয়ের সময়েই অনেক দিন যেতে পারিনি। পোস্ট প্রোডাকশনের সময় যেমন পড়ে গিয়ে তিন সপ্তাহ বাড়িতে। তার আগে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। তাতে অমানুষিক চাপ পড়েছিল আমার কার্যনির্বাহী প্রযোজক সপ্তর্ষি, সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও ডিওপি-র উপর। তাঁরা পুরোটা সামলে নিয়েছিলেন। আগের মতো ‘স্টোরি বোর্ড’ করে দিতে পারি না। এখন হাত কাঁপে।

প্রশ্ন: এই ছবিতে দেখার মতো কী আছে?

অনীক: এই ছবিতে মূলত দুটো গল্প আছে। একটা অংশে একজন শিকড়ের সন্ধানে এসেছে। মায়ের ‘বায়োলজিক্যাল পেরেন্ট’-এর বাড়ি কলকাতায়। এখানে এসে সেই বাড়িতে সে পৌঁছোয়। সেখানে একটা ধাঁধার সন্ধান পায়, যেটা সমাধান করার প্রবল ইচ্ছা দেখা দেয় তার মধ্যে। এই সময়েই অন্য আর একজনকে সে পায়, যে এই ধাঁধার সমাধানে তার সঙ্গ দেয়, সাহায্য করে। এর উপরে ভিত্তি করেই তৈরি ছবিটা।

প্রশ্ন: ‘তোপসে’ নাম রাখলেন— সত্যজিৎ রায়ের ছায়া কি সবসময় সঙ্গে থাকে?

অনীক: এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার। আমার নামে প্রথম পার্সেল আসত ‘সন্দেশ’ পত্রিকার। আমার আকর্ষণীয় লাগত সত্যজিৎ রায়ের প্রচ্ছদ আর ভিতরের ‘ইলাস্ট্রেশন’। এমনকি, সত্যজিৎবাবু যে ‘টিনটিন’ বা ‘অ্যাসটেরিক্স’ নিয়ে আসতেন বাবুদার (সন্দীপ রায়) জন্য, সেখান থেকেই আমার ওগুলো প্রথম পড়া। এই গল্পটাই (‘যত কাণ্ড কলকাতাতেই’) আগে ভাবা ছিল। তখন তো জানতাম না ‘অপরাজিত’ হবে। সত্যজিৎ রায়ের ১০০ বছরে এ রকম একটা কিছু করব ভেবেছিলাম। কারণ, ‘ফেলুদা’ আমার করা হবে কি না সন্দেহ। কী আর করা যাবে। ওঁকে যে অনুসরণ করার চেষ্টা করি এমন নয়। অবচেতনে হয়তো রায়বাবু রয়েছেন। আবার খুব সচেতন ভাবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করি না। যেমন ‘বরুণবাবুর বন্ধু’র সময়ে সৌমিত্রদা বলেছিলেন, ‘আমার খুব ভাল লাগছে কাজটা করতে। মানিকদার কথা মনে পড়ছে।’ অন্যান্য প্রভাবও আছে, যেটা নিয়ে বড় হয়ে ওঠা আর কী।

শুটিংয়ের ফাঁকে।

শুটিংয়ের ফাঁকে। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: ‘ফেলুদা’ করার ইচ্ছা আছে?

অনীক: ইচ্ছা তো ছিলই। সে তো স্বত্বের অনেক ব্যাপার আছে।

প্রশ্ন: ওটিটি-তে করতে পারবেন না?

অনীক: জানি না, এখন আর কিছু বাকি আছে কি না। যাঁরা করছেন তাঁরা আমাকে পরিচালনা করতে দেবেন কি না। আমি তাঁদের জন্য কাজ করব কি না— অনেকগুলো প্রশ্ন থাকে।

প্রশ্ন: কোনও দিন ভেবেছেন কাউকে ‘ফেলুদা’ হিসাবে?

অনীক: আমাকে একটা সময়ে অনেকে ‘ফেলুদা’ বলত। কিন্তু, অভিনয়ের নাম শুনলে তো আমার হাত-পা গুটিয়ে যেত। তবে, সৌমিত্রদার (সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়) পর চেহারাগত দিক থেকে আমার মনে হয়েছিল যে আবীরকে মানাবে। ওর মধ্যে ‘বয় নেক্সট ডোর’ ব্যাপার আছে। আরও একটা বিষয়, বাঙালিদের মধ্যে ফেলুদাকে ভাল দেখতে। যেটা সৌমিত্রদার মধ্যেও ছিল। এ ছাড়া, জীতুর (জীতু কমল) সঙ্গে চেহারাগত মিল হয়তো আনা যাবে। এটা আমাকে অনেকে বলেছে। কারণ, চরিত্রটা তো ওঁর (সত্যজিৎ রায়) উপরেই ‘মডেলড্‌’। উনি নিজে বলেছিলেন, “আমি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, বরুণ চন্দ প্রমুখের মিশ্রণ চাই।” সেটা সম্ভব না। যেহেতু রায়বাবু সৌমিত্রদার আদলে ইলাস্ট্রেশনগুলো করতেন, সেটার সঙ্গে মিল সবসময় আনা যায় না।

প্রশ্ন: আপনারও কি মনে হয়, সত্যজিৎ রায়-মৃণাল সেন-ঋত্বিক ঘটকের পর আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলা ‘শূন্য’?

অনীক: সেটা একটা সময় এসেছিল। একসঙ্গে এত জন দিক্‌পাল পরিচালক কাজ করেছেন! তাঁদের সঙ্গে তপন সিংহ, তরুণ মজুমদারও ছিলেন। বাণিজ্যিক ছবির পরিচালকেরাও ছিলেন। এগুলো এক এক সময় হয়। বিদেশেও এমন হয়েছে। এখানে এখন অন্য ভাবে নিয়মিত কাজ করছেন কয়েক জন। তাঁদের নির্দিষ্ট দর্শক আছে বলেই তাঁরা টিকে আছেন। তবে, এখানে কাজ করা খুব মুশকিল।

প্রশ্ন: কী রকম?

অনীক: এখানে পরিবেশ আস্তে আস্তে দূষিত হয়ে যাচ্ছে। যে সময়টা খুব ভাল ছিল, তখন আমি তেড়ে বিজ্ঞাপনের ছবি করছি। তখনও ফিচার ফিল্ম করিনি। জানতামই না ফেডারেশন ইত্যাদি কী ব্যাপার!

প্রশ্ন: ছবি নিয়ে বাকিদের মতো এর সঙ্গে ঈর্ষা বা ওর সঙ্গে দ্বন্দ্ব, এ সব নেই আপনারবড় করে কি কোনও দিন কিছু চাননি জীবনে?

অনীক: আমি ও রকম করি না। সেই কারণেই ফিচার ফিল্ম করতে দেরি হয়েছে আমার। আমি ছবি করতে চেয়েছিলাম। একসময় ভেবেছিলাম ফিচার ফিল্ম করা হবে না আমার। অবশেষে হল। কিন্তু, প্রতি বছর একটা-দুটো-তিনটে ছবি করতেই হবে, এমন ব্যাপার ছিল না কখনও। তা ছাড়া, বিজ্ঞাপনের ছবিও আমাকে করে যেতে হয়েছে অনেক দিন। কারণ, তাতেই আমার সংসার চলত। বাংলা ছবির পারিশ্রমিক দিয়ে চলত না। এখন অবশ্য আর অন্য কাজ আমি করি না। এই কাজও কত দিন করতে পারব জানি না। শরীর সায় দেবে না। মনও ভাল নেই।

প্রশ্ন: ছবি পরিচালনায় মন সায় দিচ্ছে না?

অনীক: জানি না। আমি নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করছি। ওই যে দুর্দম একটা ইচ্ছা যে, আমাকে কিছু একটা করতে হবে, সেটা নেই এখন। আগে কিছুটা ছিল। কারণ, তখন আমি ছবি তৈরির প্রক্রিয়াটা ভালবাসতাম। এখন সেটাই যদি না থাকে, যদি নিজে আর উপভোগই না করতে পারি, তা হলে হয় না। আমার শরীরও দেয় না। ওরা ‘স্ক্রিনশট’ তুলে পাঠাচ্ছে, আমি ‘ওকে’ করছি। ও ভাবে হয় না। সিনেমা তৈরিতে শারীরিক শ্রমও প্রয়োজন। জগদ্বিখ্যাত অনেক পরিচালককে দেখবেন, তাঁদের শেষের দিকে ছবিগুলি একই মানের হয় না। তাঁরা অসুস্থ হয়েছেন। তার ছাপ পড়েছে তাঁদের কাজে। খুব কম মানুষ আছেন, যাঁরা সময়ে থেমে যান। আগে মানুষ অবসর নিতেন। এখন ‘কনসালট্যান্সি’ চালান। আমিও ভাবছি তেমন কিছু করব— ‘কনসালট্যান্সি’ বা ‘ক্রিয়েটিভ সুপারভিশন’। বিশ্বস্ত কাউকে যদি পাই, যে সশরীরে গিয়ে কাজটা করবে। আমি ফ্লোরে না গেলে কিন্তু অনেকেই খুশি হবে।

প্রশ্ন: আপনি এখনও রাগারাগি করেন?

অনীক: একেবারেই করি না। এখন তো যেতেই পারি না। তবে এটা বোধহয় খানিকটা ছড়ানোও হয়েছিল। অনেকেই আমার থেকেও বেশি করেন। শাশ্বত (চট্টোপাধ্যায়) ফ্লোরে ঢুকে নিজেই সবাইকে বকাঝকা দিয়ে বলত, ‘দেখো অনীকদা, আমি বকে দিয়েছি। তোমাকে আর বকতে হবে না।’

প্রশ্ন: আপনি কি সত্যিই প্যানিক করেন?

অনীক: আমি বোধহয় অন্যদের প্যানিক করাতাম। কিছু একটা মনের মতো করতে না পারলে নিজের উপর নিজেও রাগতাম। অনেকেই বলেন, ‘খুব কষ্ট করে সিনেমা করেছি’। আরে, কষ্ট তো করতেই হবে। নয়তো কেউ পয়সা দেবে কেন? এখন মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার খরচ আরও বেশি। ছবি ভাল হল কি না, সেটা আমার হাতে নেই। কিন্তু, চেষ্টাটা আমার হাতে।

প্রশ্ন: অনেক পরিচালকই নিজের ছবিকে ‘দারুণ’ বলেন আপনি তো বলেন না! উল্টে খুঁত ধরেন নিজের।

অনীক: আমার প্রথম ছবির প্রতিক্রিয়া দেখে তো আমি অবাক! ভুলে ভর্তি ওটা। প্রথম ছবিতে যা হয়। শুনেছি, সত্যজিৎবাবু আর তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গ যখন একসঙ্গে ‘পথের পাঁচালী’ দেখতে বসেছিলেন, তাঁরা নাকি প্রথম ভাগটা খুঁত ধরেই কাটিয়ে দেন। যা-ই হোক, নিজের ছবিকে বার বার ভাল বলে আমার মনে হয় বিশেষ লাভ নেই। কারণ, দর্শক যাবেন, নিজেদের রুচিতে-দায়িত্বে ছবি দেখবেন। ছবি ভাল চললে পরের ছবিটা হবে। আজকাল তো দর্শককেও বলতে শুনি, ‘অনেক দিন পর এমন ছবি দেখলাম’। পুরোটাই একটা প্যাটার্ন। ফলে, একা পরিচালকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সত্যজিৎ রায় বলতেন, “বাঙালিরা আমার সিনেমা দেখতে আসেন, কারণ তাঁরা এটা নিজেদের ‘কালচারাল ডিউটি’ বলে মনে করেন।” কোনও ছবি যদি মনেও হয় যে ভাল বানিয়েছি, তাতেও কিছু খুঁত থেকেই যায়। ‘অপরাজিত’ তৈরির সময় যেমন একটাও কাশফুল ছিল না। বোলপুরে পুজোর আগে এমন ভাবা যায়? তিন বার শুটিং পিছিয়ে দেওয়া হল বন্যার কারণে। একটা মাত্র জায়গায় কাশফুল পেয়েছিলাম। শুটিংয়ের দিন সকালে গিয়ে দেখলাম সেখানেও আর ফুল নেই! কান্নাকাটি করার মতো অবস্থা। তার পর অন্যত্র খোঁজ নিয়ে গিয়ে শুটিং করা হল। সকলে প্রাণপাত করেছেন। এত কিছু সত্ত্বেও মনে হয়েছিল, কাজটা ভালই হয়েছে। তা ছাড়া, জীতুকে পাওয়া বড় ব্যাপার।

প্রশ্ন: ‘অপরাজিত’তে ‘সত্যজিৎ রায়’ হয়ে কি জীতুর অহঙ্কার হয়েছে?

অনীক: সেটা কে, কী ভাবে সামলাবে তার ব্যাপার। ওটা বুদ্ধি করে করতে হয়। তেমন হলে উত্তমবাবু বা সৌমিত্রদার সাংঘাতিক অহঙ্কার হত। তাঁরা বুদ্ধিমানের মতো সামলেছেন। আবার উত্তমবাবু বলতেন, “আমাদের একটা দূরত্ব বজায় রাখা উচিত (সাধারণ মানুষের থেকে)।” অন্য দিকে, সৌমিত্রদা কফি হাউসে যেতেন, আড্ডা মারতেন।

প্রশ্ন: একটু আগেই বললেন ‘কালচারাল ডিউটি’র কথা। বাঙালির আদৌ কোনও ‘কালচারাল ডিউটি’ আছে?

অনীক: ‘কালচারাল ডিউটি’র আগে ‘কালচার’টা থাকা দরকার। দর্শকের মধ্যে, আমাদের মধ্যে যদি বা কোনও সংস্কৃতি বাকি থেকে থাকে, তার কতটা ‘কালচার্‌ড’ আর কতটা ভয়ঙ্কর, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আমরা যখন বড় হয়ে উঠেছি, তখন কলকাতা অন্য রকম ছিল। বাঙালি বলে মানুষের ঈষৎ শ্লাঘাবোধ ছিল। এখন তো বাইরে গিয়ে নিজেকে ‘বাঙালি’ বলে বিশেষ বড়াই করি না।

প্রশ্ন: এত বিতর্কের পর আবীরের কি কোনও পরিবর্তন হল?

অনীক: ওঁকে নিজে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। শিবু (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়), নন্দিতাদি (রায়), জিনিয়ার (সেন) সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার ছবিটা গিয়ে দেখতে বলেছি। আমরা কেউ ছেলেমানুষ নই। শিবু হয়তো অনেক বেশি সফল প্রযোজক। তাই ওকে খুশি রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে, সাংবাদিক বৈঠকের সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি (প্রযোজক ফিরদৌসল) হাসানের ছিল। ওঁর যা বলার বলেছেন। আমিই দেখেছিলাম, আবীর কোনও পোস্ট ইত্যাদি শেয়ার করছে না। তখন ওকে জিজ্ঞেস করি, প্রচারে আসবে? তখন বলে, ওটাই তো সমস্যা। এ দিকে, চুক্তিতে কী লেখা আছে সেটা তো দেখিনি। প্রচার বলতে অনেক কিছুই বোঝায়। তবে নিঃসন্দেহে, অভিনেতা হিসাবে শেষ পর্যন্ত নিজের দায়িত্ব পালন করেছে আবীর।

Anik Dutta Durga Puja 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy