Advertisement
E-Paper

নিজের বাড়িতে হেনস্থার শিকার সোহিনী সরকার, অনির্বাণকে পাশে নিয়ে ঘটনা জানালেন অভিনেত্রী

“নাটকের ক্ষেত্রে গিল্ড বা ফোরাম নেই। ফলে সংগঠন তৈরি করে নির্দিষ্ট নিয়মাবলি অনুসরণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার সময় এসে গিয়েছে”, বললেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ২০:৩৫
Image of Anirban Bhattacharya and Sohini Sarkar

অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও সোহিনী সরকার। নিজস্ব চিত্র।

বাংলা নাট্যজগতের অন্দরে হেনস্থার ঘটনা নিয়ে সরব শিল্পীদের একাংশ। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে নাট্যকর্মীদের উপর হেনস্থার দায় বর্তেছে তথাকথিত বড় শিল্পীদের উপর। এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে নাট্যকর্মীদের একটি নিজস্ব সংগঠনের দাবি নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। এ বার এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে মতামত জানালেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং সোহিনী সরকার।

অনির্বাণের মতে, “নাটকের ক্ষেত্রে গিল্ড বা ফোরাম নেই। ফলে সংগঠন তৈরি করে নির্দিষ্ট নিয়মাবলি অনুসরণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার সময় এসে গিয়েছে।” প্রত্যক্ষদর্শী না হলেও বিভিন্ন হেনস্থার ঘটনার কথা শুনেছেন তিনি। তাঁর জমানায় বা তাঁর আগের জমানায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কিন্তু অভিযোগের নির্দিষ্ট সুযোগ বা জায়গা ছিল না। বর্তমানে এই সংগঠনের মাধ্যমে শিল্পীদের কিছুটা হলেও সুরাহা মিলবে বলে মনে করেন অভিনেতা।

তবে আগের তুলনায় সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা বদল ঘটেছে বলে মনে করেন সোহিনী সরকার। বর্তমানে চিকিৎসাকেন্দ্রে মহিলা রোগীর সঙ্গে পরিষেবিকা থাকেন। যাতে মহিলা রোগীদের কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয়। কিন্তু শিল্পমাধ্যমের বিষয়টি খানিক আলাদা। তিনি জানালেন, রূপটানশিল্পীকে বা পোশাকশিল্পীকে কাজের প্রয়োজনে অভিনেত্রীর শরীর ছুঁতে হয়। কিন্তু সেই ছোঁয়াতে কোনও রকম যৌনতা থাকে না। শুটিংয়ের সময় ক্যামেরার পিছনে অধিকাংশ পুরুষ কর্মী থাকেন, ফলে কোনও স্পর্শকাতর দৃশ্যে অভিনয়ের সময় সেই বিশ্বাস তৈরি হয় যে, কে কোন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখছেন।

অভিনয় জগতে আসা ইস্তক সোহিনী নিজেও খারাপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু সেটা খুবই কম। এই প্রসঙ্গে তিনি বললেন, “নিশ্চয় অন্যায় হয়েছে, কিন্তু আমি যদি সেই ঘটনাগুলিকেই জীবনের এক মাত্র সত্য হিসাবে ধরে বসে থাকি, তা হলে চলবে না। আসলে আমাদের মেয়েদের মন নরম তো, তাই খুব সহজেই বিষিয়ে দেওয়া হয়। মনের ভিতরে চলতে থাকা অস্থিরতা, মানসিক কষ্টের দায়ভার যে কোন সংবিধান নেবে, সেটা বলতে পারব না আমি।”

তবে হেনস্থা যে শুধু বিনোদন জগতেই হয়, এমনটা মনে করেন না সোহিনী। নিজের বাড়িতেই হেনস্থার শিকার হয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি বললেন, “আমার পাশের ফ্ল্যাটে এক ইলেকট্রিশিয়ান এসেছিল। আমি ওখানে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলছিলাম। হঠাৎ কেউ একজন আমার পিছনে চিমটি কেটে চলে গেল! ভাবুন এক বার, আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটল আমার জীবনে!” সেই ব্যক্তিকে ডেকে, কষিয়ে থাপ্পড় মারবেন, সেই অবকাশ পাননি অভিনেত্রী। কারণ ঘটনার আকস্মিকতায় উপলব্ধি করতেই দেরি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। তত ক্ষণে সেই ব্যক্তি উধাও! অভিনেত্রী সেই ঘটনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই সারা রাত ঘুমোতে পারেননি, ঘটনার বহিঃপ্রকাশ হিসাবে মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। থেকে থেকে ঘৃণার উদ্রেক হয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্তদের সমাজের যে কোনও ক্ষেত্র থেকে বিতাড়িত করা উচিত, মত সোহিনীর।

তিনি জানালেন, সকলে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে তৎপর। কিন্তু ঠিক কোথায় এর সমাধান রয়েছে তা নিয়ে সন্দিহান অধিকাংশ মানুষ। অনেকে বক্তব্য রাখছেন, কেউ-কেউ আবার ভুল বক্তব্যও রাখেন। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বললেন, “আমি এমন এক জন পুরুষকে জানি, যাঁর বিরুদ্ধে ‘মিটু’র মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই ধরনের ঘটনাও ঘটে। কিন্তু তাই বলে কি ‘মিটু’ আন্দোলন থামিয়ে দিলে চলবে!” অভিনেত্রী আরও বললেন, “আমরাই প্রথম প্রজন্ম, যারা সমাজমাধ্যম ব্যবহার করছে, ‘মিটু’ আন্দোলন করছে, প্রকাশ্যে নিজেদের বক্তব্য পেশ করছে। আমরাও নতুন শিখছি, ফলে কোন দিকে এগিয়ে গেলে সঠিক পথ মিলবে, সেই বিষয়ে আমরাও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারি না।”

Anirban Bhattacharya Sohini Sarkar Bengali Actors me too movement Bengali Theatre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy