ছবিশিকারিদের সামনে বরাবরই গম্ভীর মুখ তাঁর। শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খান কি কখনও হাসেন না? এই প্রশ্ন বার বার ওঠে দর্শকদের মধ্যে ও তাঁর অনুরাগী মহলে। কিন্তু, ক্যামেরার বাইরে নাকি একেবারে উল্টো মানুষ আরিয়ান। সবসময় নাকি হাসিখুশি তিনি। ক্যামেরা দেখলেই নাকি বদলে যায় তাঁর মুখ। জানালেন ঈশিকা দত্ত। আরিয়ানের ‘দ্য ব্যাড্স অফ বলিউড’-এ অভিনয় করেছেন বাংলার মেয়ে। চরিত্রের দৈর্ঘ্য স্বল্প হলেও, শেষ দৃশ্যে দর্শককে চমকে দিয়েছেন তিনি।
পরিচালক আরিয়ান খান কেমন? আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন ঈশিকা। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে অভিনেত্রী বলেন, “আরিয়ান একদম ‘সুইটহার্ট’। মাটিতে পা রেখে চলতে জানেন। খুব আন্তরিক।”
শাহরুখ খানের পুত্র, এমন কোনও তকমা বয়ে চলেন না আরিয়ান। শুটিং সেটে প্রত্যেকের সঙ্গে সমান ভাবে মেশেন। এমনই একটি ঘটনা ভাগ করে নেন ঈশিকা। তিনি বলেন, “আমরা একটা ঘরে হয়তো শুটিং করছিলাম। সেখানে পাঁচটা চেয়ার রাখা ছিল। এ দিকে অভিনেতার সংখ্যা হয়তো ১০ জন। স্বাভাবিক ভাবেই সকলে জায়গা পাবেন না। আরিয়ান ওই ঘরে ঢুকে প্রথমেই মাটিতে বসে পড়েন। শাহরুখ-পুত্র বলে কোনও অহঙ্কার নেই ওঁর মধ্যে। আরিয়ান খুবই মিষ্টি ও শিশুসুলভ। ক্যামেরার সামনে মুখটা ও-রকম রাখে। কিন্তু আদতে ও খুব হাসিখুশি।”
এক ফ্রেমে ‘দ্য ব্যাড্স অফ বলিউড’-এর কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত।
‘দ্য ব্যা়ড্স অফ বলিউড’-এ কাজ করার আগে আরিয়ানকে নিয়ে খুব একটা ইতিবাচক ধারণা ছিল না ঈশিকার। সবসময় গম্ভীর মুখের জন্য এই সিরিজ়ে কাজ করা নিয়ে খুব একটা ইতিবাচক ছিলেন না তিনি। আশাও করেননি, তিনি সুযোগ পাবেন। অভিনেত্রী বলেন, “অডিশনের আগে আমি খুব একটা গা করিনি। খুব যে উত্তেজিত ছিলাম, তা-ও নয়। কিন্তু আমার কপাল, আমি সুযোগটা পেয়ে যাই। বলিউডের বহিরাগত হয়ে ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যের অংশ হতে পারা আমার জন্য বড় বিষয়। পরিশ্রম তো অনেকেই করেন। তবে এটার কৃতিত্ব আমি আমার ভাগ্যকেই দিই।”
সিরি়জ়ের প্রযোজনা করেছেন গৌরী খান এবং শাহরুখের প্রযোজনা সংস্থা। শাহরুখের সঙ্গে আরিয়ানের বেশ কিছু মিলও খুঁজে পেয়েছেন ঈশিকা। অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি, “দু’জনেই আন্তরিক। আর আরিয়ানও একেবারে শাহরুখের মতোই উষ্ণ আলিঙ্গন করেন। শুটিং শেষ হওয়ার পরে ওকে বলে বেরোতাম। ও তখন আলিঙ্গন করত। শুটিং-এর সকলের প্রতিই ও খুব শ্রদ্ধাশীল।”
আরও পড়ুন:
আরিয়ানকে নিয়ে কথা বলতে বলতে উত্তেজিত ঈশিকা বলেন, “একটা বিষয় বলতেই হয়। আরিয়ানকে দেখতে দারুণ। আমি তো ওর দিকে তাকিয়েই থাকতাম। তার পরে ভাবলাম ও তো আমার পরিচালক। শাহরুখের দিকেও এই ভাবে তাকিয়ে থাকি। মনে আছে, আমার ‘জওয়ান’ ছবিটা দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। সেই সপ্তাহেই এই কাজের সুযোগটা পেয়েছিলাম।” আরিয়ানকে দেখে শাহরুখ ও গৌরীর প্রতি শ্রদ্ধা বেড়ে গিয়েছে ঈশিকার। নবাগত পরিচালককে দেখেই তিনি বুঝেছেন, বাবা-মা হিসেবে কেমন তাঁরা। ঈশিকা বলেন, “আরিয়ানকে দেখে বোঝা যায়, শাহরুখ ও গৌরী কেমন মানুষ। আরিয়ানের কোনও অহঙ্কার নেই। জীবনে যাঁরা কিছু করেননি, তাঁদের মধ্যেও অহেতুক অহঙ্কার দেখেছি। তবে ও একেবারে অন্য রকম।”
ঈশিকার বিপরীতে দেখা গিয়েছে দিবিক শর্মাকে। চরিত্রটি অন্য ধাঁচের। অভিনয়ের জন্য প্রশংসিতও হচ্ছেন দিবিক। আরিয়ান নাকি প্রতিটি দৃশ্যের অভিনয় দেখিয়ে দিতেন। তাই দিবিক নিজেও বলেছেন, আরিয়ান অভিনেতা হিসেবেও দারুণ। একই মত ঈশিকারও। প্রতিটি দৃশ্যের অভিনয় আরিয়ান সকলকে দেখিয়ে দিতেন বলে জানান অভিনেত্রী।
ঈশিকাকে এর আগে ‘সেক্রেড গেমস’-এ দেখা গিয়েছিল। নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে একটি সাহসী দৃশ্য ছিল তাঁর। তার পর থেকে একই ধরনের বেশ কয়েকটি কাজের প্রস্তাব পেয়েছেন অভিনেত্রী। তাই এক সময় ‘টাইপকাস্ট’ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। কিন্তু এখন আর এ সব ভাবেন না ঈশিকা। তাই স্পষ্ট বলেন, “একসময় এক ধরনেরই চরিত্র পেয়ে চিন্তিত থাকতাম। এখন আর অসুবিধা হয় না।”
উল্লেখ্য, ‘জানোয়ার- দ্য বিস্ট উইদিন’ নামে একটি হিন্দি সিরিজ়ে সম্প্রতি পুলিশ আধিকারিকের চরিত্রে দেখা গিয়েছে তাঁকে।