Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment news

বিয়ে নিয়ে মুখ খুললেন পরমব্রত-অনির্বাণ

দুই পুরুষ। দু’জনেই জাত অভিনেতা। দু’জনেই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রিয় অভিনেতা। দু’জনেই মনে করেন, একে টপকে যাব, ওকে ছোট করব, এই মানসিকতাই মধ্যযুগীয়। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট পরমব্রত ও অনির্বাণ।দু’জনেই মনে করেন, একে টপকে যাব, ওকে ছোট করব, এই মানসিকতাই মধ্যযুগীয়। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট পরমব্রত ও অনির্বাণ।

‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ছবির দুই অভিনেতা অনির্বাণ ও পরমব্রত।

‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ছবির দুই অভিনেতা অনির্বাণ ও পরমব্রত।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:১৮
Share: Save:

‘দ্বিতীয় পুরুষ’-এ পরমের অভিনয় কেমন লাগল?

অনির্বাণ: আমি নিজেই এত ব্যস্ত ছিলাম অভিনয় নিয়ে, অন্যের অভিনয় বিচার করা...

পরমব্রত: আরে ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর দিচ্ছিস কেন?

অনির্বাণ: দেখুন, ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ করার আগে খুব ওয়ার্কশপ করেছি, বিষয়টা এমনও না। রিনাদির ছবিতে যেমন ভুরু থেকে ডায়েলেক্ট, সব বিষয় নিয়ে ওয়ার্কশপ হয়, সৃজিত সেটা করে না। তাই আমার পরমের ফ্লোরেই কাজ হয়েছে। হ্যাঁ, অভিনয়ে একটা মিলমিশের ব্যাপার থাকে তো। এখানেও সেটাই হয়েছে।

আরও পড়ুন: লাগাতার ফ্লপ মানতে না পেরে বিয়ে করে প্রবাসী অতীতের এই জনপ্রিয় নায়িকা

দু’জন জোরালো অভিনেতা। প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মনে হয়েছে?

অনির্বাণ: আমি থিয়েটার থেকে এসেছি। ফলে ওই মধ্যযুগীয় মানসিকতা একে টপকাব, ওকে ছোট করব, এ সব ফেলে এসেছি।

পরমব্রত: খুব ভাল শব্দ ব্যবহার করেছে। মধ্যযুগীয়। আমি ট্রেনড অ্যাক্টর নই। থিয়েটার থেকে আসিনি। সাহিত্যের ছাত্র। যদিও আমাদের এখানে বলা হয়, সিনেমার জন্য থিয়োরির দরকার নেই। এটা ভুল। যে আর্ট ফর্মের মধ্যে আছি তার ইতিহাস জানতে হবে। আমি তো অভিনেতা হিসেবে নিজেকে ভাবিনি। এ বার সিনেমাকে হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচে দেখি। তাই মেরে বেরিয়ে যাব, কিছু সিনিয়র অভিনেতাকে দেখেছি এ রকম করতে। শুধু আমি ভাল করব ভাবলে ছানা কেটে যাবে তো! এটা মধ্যযুগীয়।

ফিল্মের একটি দৃশ্যে পরমব্রত।

মানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই?

পরমব্রত: প্রতিযোগিতা আছে। সেটা হেলদি। কেন? আমি নিজেকে পরিচালক প্রযোজকও ভাবি। সেখানে আজ থেকে পাঁচ-ছ’বছর আগে নিজেকে বাদ রাখলে ছবিতে কাস্ট করার ক্ষেত্রে দেখতাম যিশু, আবির দু’-তিনটে নামের মধ্যে ঘুরতে হয়। এখন আমাদের আর একটা নাম আছে, অনির্বাণ। ওদের প্রজন্মের গিফটেড অ্যাক্টর।

আরও পড়ুন: সেটে আমার প্রথম কাজ ছিল কঙ্গনার কপালে চুমু খাওয়া

দ্বিতীয় পুরুষ। কোন পুরুষ কার কাছে প্রথম?

পরমব্রত: দু’জন কেন্দ্রীয় চরিত্র। বাকিটা ছবি দেখতে হবে।

দ্বিতীয় পুরুষে সৃজিত মুখোপাধ্যায় কেমন পুরুষ হয়ে আসছেন?

পরমব্রত: থ্রিলার তৈরিতে সৃজিত খুব পারদর্শী। লেখে এত ভাল! প্রেমের মশলা ছড়িয়ে। তার পর গান। সৃজিত এ রকমই এক জন পুরুষ।

অনির্বাণ: চরিত্র পেয়ে খুব আনন্দ হয়েছে। তবে সৃজিতদা কোনও ছবিতেই এক ধারার চরিত্র দেয়নি। আমি সব বাংলা ছবি দেখি না। যেগুলোতে কাজ করি দেখি। আর কোনও ছবি নিয়ে খুব উতরোল হলে দেখি। কিন্তু সৃজিতদার সব ছবি দেখেছি। কোনও মিস হয়নি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ ওয়ান অব দ্য বেস্ট। যে ফেজে এই চিত্রনাট্য লিখেছে সে সময় নিশ্চয়ই খুব আইসোলেট করতে পেরেছে নিজেকে। সৃজিতদা খুব তাড়াতাড়ি স্ক্রিপ্ট লেখে।

পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরমব্রত।

বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে এখন সামাজিক পারিবারিক ছবির বাজার। মানেন?

পরমব্রত: আগে মেনস্ট্রিম ছবি এত বেশি চলত, সেগুলো দেখার হল এত বেশি ছিল যে ওই সময়ের কনটেন্ট নির্ভর ছবি এলেও সেগুলো নিয়ে কথা বলা হত না। এখন কনটেন্ট নির্ভর ছবি চলছে। সেগুলো দেখার দর্শক এবং হল, দুটোই বেড়েছে। আর মেনস্ট্রিম ছবি দেখার সিঙ্গল হল কমেছে। ফলে এখন বলা হচ্ছে কনটেন্ট নির্ভর ছবির চল। আর আমাদের প্রজন্মকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সৃজিত। কৌশিকদা। অরিন্দমদা। অঞ্জন দত্ত। আমাদের মতো অভিনেতা— আমি, যিশু, আবির। আমরা অডিয়েন্সের ব্র্যাকেটটা কিছুটা বাড়াতে পেরেছি। এই সামাজিক ছবি চলার পেছনে টিভির বড় ভূমিকা আছে। এক প্যাটার্নের কূটকচালি থেকে কালাযাদু। পেছন দিকে যাওয়ার প্রবণতা আছে। সামাজিক ছবি আসলে গ্লোরিফায়েড টিভি। এর বাজার আছে। এখানে এই ছবিতে যদি মেসেজ থাকে তা হলে আমার কাছে সেটার গুরুত্ব আছে।

আরও পড়ুন: সৃজিতকে ‘প্যাঁচা’ বলে ডাকলেন মিথিলা!

যেমন?

পরমব্রত: যেমন শিবুদার ছবি। আমার ‘কণ্ঠ’ ভাল লেগেছে। ‘গোত্র’-ও।

আপনি এই ধারার ছবিতে অভিনয় করবেন?

পরম: অবশ্যই।

আরও পড়ুন: অতীতে মহেশ ভট্টের ‘ঘনিষ্ঠ’ এই সুন্দরী বঙ্গললনাই সুশান্ত সিংহ রাজপুতের নতুন প্রেমিকা

অনির্বাণ চুপ কেন?

অনির্বাণ: পরমব্রত পুরোটাই বলে দিল। তবে অভিনেতা হিসেবে ছবির ফরম্যাট নিয়ে কোনও ছুঁতমার্গ নেই। দেখুন, সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শক্তি, সুনীল হয়ে আজকে শ্রীজাতদা— এই যে ঢল, সেখানে পুরো বাঙালি জাতির উত্তরাধিকার এটা মানলে খুব মুশকিল। এটা শহরের সমস্যা। গ্রামে ভাঁড় যাত্রা হয়। মদ খেয়ে বর সকালে বাড়ি ফিরেছে। বউ ঝাঁটা হাতে শুরু করছে খিস্তিখেউড়। যার স্ক্রিপ্ট নেই। তা সাত ঘণ্টাও হতে পারে। এই লেগাসিটাও আছে কিন্তু আমাদের। আমি কলকাতায় বহু লোককে চিনি যারা প্রিয় পরিচালকের নাম বলতে হলেই বলেন মানিকবাবু! আসলে পছন্দ করেন হরনাথ চক্রবর্তীর ছবি। সেটা বলতে অসুবিধা কোথায়? আসলে ভাবে আমরা রবীন্দ্রনাথ আর মানিকবাবুর উত্তরাধিকার! ব্যাপারটা তা নয়।

আপনাদের দু’জনের বেশ মিল কিন্তু! অনির্বাণের অভিনয় নিয়ে ওকে কিছু বলবেন?

পরমব্রত: এটা বলা টু আরলি, আমার জন্যও, ওর জন্যও। আমার জ্ঞান দেওয়ার কিছু নেই। সমালোচনা শুনেছি ওর উচ্চারণ খুব বেশি স্পষ্ট। আমার তো উচ্চারণ ঠিক করতেই অনেক সময় লেগেছে। আমি তোতলা ছিলাম। অনির্বাণের ম্যানারিজম আছে। ম্যানারিজম সব অভিনেতার আছে। এগুলো বলার কোনও মানে নেই। তবে ওর মধ্যে একটা ইন্টেলেকচুয়াল মাইন্ড আছে। এটা যেন কাজের প্রয়োজনে চলে না যায়। ইন্টেলেকচুয়াল শব্দটা গালাগাল নয়, অনেক কষ্ট করে হতে হয়...

অনির্বাণ: আসলে এ ক্ষেত্রে আমার অন্তর্ঘাতের সমস্যা। হাতে ছুরি, কিন্তু মারতে পারছি না। শেষে নিজের বুকেই মারি। এক ধরনের অবসাদ তৈরি হয় এতে। সম্পূর্ণ মাতাল হয়ে ন্যালাক্ষ্যাপা না হয়ে গেলে আমি বলব অবসাদ অভিনেতাদের আসবেই।

পরমব্রত: যদি না সেটা ডিজিজে পরিণত হয়।

অনির্বাণ: এটা ঝামেলা। ‘WHO’-এর রিপোর্ট বেরিয়েছে এ বার অবসাদ এক জন রিকশাচালক থেকে কোটিপতিরও হতে পারে।

দু’জনের ভাবনার এত মিল। শোনা যাচ্ছে দু’জনেই বিয়ে করছেন এ বছর?

পরমব্রত: অনির্বাণের বিয়ে নিয়ে এত শুনছি! এক দিন ও বলল আমার বিয়েটা দিচ্ছে কে? আমরা বিয়ে পাগলা জাতিতে পরিণত হচ্ছি। রাজ-শুভশ্রী, তার পর সৃজিত। অতঃপর কে?

অনির্বাণ চুপ কেন?

আমার বিয়ের বয়স হয়েছে। আমি বিয়ে করব।

আপনি পুরনো প্রেমিকাকেই বিয়ে করছেন?

অনির্বাণ: আমার তো অনেক পুরনো প্রেমিকা। সেই কলেজ থেকে...

পরমব্রত: আমার সঙ্গে যার বিয়ে হওয়ার কথা তাকেও বিয়েটা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে হবে। তবে এখন বিয়ে করাই যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE