Advertisement
০১ মে ২০২৪
Freddy Movie Review

নতুন অবতারে কার্তিক আরিয়ান, কেমন হল ‘ফ্রেডি’, জানাচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন

‘ধামাকা’র পর আবার নতুন অবতারে কার্তিক আরিয়ান। কেরিয়ারের এই মোড়ে অভিনেতার এই এক্সপেরিমেন্ট তারিফযোগ্য।

‘ফ্রেডি’র নামভূমিকায় রয়েছেন কার্তিক আরিয়ান!

‘ফ্রেডি’র নামভূমিকায় রয়েছেন কার্তিক আরিয়ান! ছবি: সংগৃহীত।

অভিনন্দন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:০৮
Share: Save:

তথাকথিত ‘সুস্থ’ শৈশবের অভাব। একাকিত্ব। সামাজিক হেনস্থা। আর তা থেকে জন্ম নেওয়া প্রতিশোধস্পৃহা। সব মিলিয়ে আরও একটা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার মুক্তি পেল ওটিটিতে। কিন্তু তা কোথায় আলাদা? ‘ফ্রেডি’র নামভূমিকায় রয়েছেন কার্তিক আরিয়ান! কিন্তু কার্তিকের কেরিয়ারে এই ছবি যতটা ছকভাঙা নির্বাচন, ছবি হিসাবে কি তা ততটা জায়গা করে নিতে পারল?

মুম্বইয়ের পার্সি পরিবারে বড় হয়েছে ফ্রেডি জিনওয়ালা। সে এখন সফল ডেন্টিস্ট। পোষ্য কচ্ছপটি ছাড়া দূরদূরান্তে কোনও বন্ধুবান্ধব নেই। মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কথা আটকে যায়। অন্য দিকে রয়েছে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার কায়নাজ় (আলয়া এফ)। প্রথম দর্শনেই কায়নাজ়ের প্রেমে পড়ে যায় ফ্রেডি। এই ‘অসম্ভব’ ভালবাসা পূর্ণতা পায় কি না, বা এই ভালবাসার তাড়না ফ্রেডিকে দিয়ে কী কী করিয়ে নেয়, তা নিয়েই পরিচালক শশাঙ্ক খৈতানের থ্রিলার এগিয়েছে।

ছবিটিকে একটা ডার্ক থ্রিলার হিসাবে তুলে ধরতে নানা উপাদান মিশিয়েছেন পরিচালক। সেখানে ‘ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মিস্টার হাইড’-এর অনুপ্রেরণা খুঁজে পাওয়া কষ্টকর নয়। আবার সেখানে ‘জোকার’ও রয়েছে। এমনকি, জোকারের চরিত্রাভিনেতা হোয়াকিন ফিনিক্সের মতো ফ্রেডিকে এখানে আপন খেয়ালে নাচতেও দেখা যায়। ছবি জুড়ে হলদেটে সবুজ আভার একটা ছোঁয়া রাখারও চেষ্টা করেছেন পরিচালক। কিন্তু গল্প যত এগিয়েছে, ততই চিত্রনাট্যের বাঁধন আলগা হয়েছে। সব মিলিয়ে দু-একটা চমক ছাড়া এই ছবি আলাদা ভাবে দর্শককে আটকে রাখে না। বিশেষ করে ইঁদুর-বেড়াল দৌড় এই ধরনের ছবির অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু শুরুতেই নেপথ্য গল্প উন্মোচন করে দেওয়ায় দর্শক হিসাবে কার্য-কারণ সম্পর্ক জানার আগ্রহ থাকে না।

সম্ভবত কার্তিকের কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স এটাই।

সম্ভবত কার্তিকের কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স এটাই। ছবি: সংগৃহীত।

স্বাভাবিক ভাবে ছবির সিংহভাগ জুড়ে রয়েছেন কার্তিক। তিনি সুপারস্টার। দেখে ভাল লাগে, কেরিয়ারের শুরুর দিকেই তিনি নিজেকে ভাঙতে প্রস্তুত। তাই ‘ধামাকা’র পর ‘ফ্রেডি’র কার্তিককে দেখতে মন্দ লাগে না। চরিত্রের জন্য নিজের ওজন বাড়ানো, হাঁটাচলায় পরিবর্তন আনা থেকে শুরু করে সংলাপ বলা এবং নিজের পরিচিত হাসিকে লুকোনো— কার্তিকের পরিশ্রমটা বোঝা যায়। তাঁর মুখে বেশ কিছু ভাল সংলাপও রয়েছে। সব মিলিয়ে সম্ভবত তাঁর কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স এটাই। কিন্তু ওই যে, গল্পের আলগা বুনট সব ভালকে আড়াল করেছে।

কবীর বেদীর নাতনি আলয়া এফ এই ছবিতে মন্দ নন।

কবীর বেদীর নাতনি আলয়া এফ এই ছবিতে মন্দ নন। ছবি: সংগৃহীত।

কবীর বেদীর নাতনি আলয়া এফ। ‘জওয়ানি জানেমন’-এর পর এই ছবিতে তিনি মন্দ নন। কায়নাজ়ের স্বামীর চরিত্রে সাজ্জাদ দেলাফ্রুজ়কে সে ভাবে জায়গা দেওয়া হয়নি। ছোট ছোট চরিত্রে বাকিরা যথাযথ। ছবির গানগুলি শুনতে খারাপ লাগে না। তবে ছবিতে তাদের ব্যবহার অহেতুক ছবির দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছে। সেট ডিজ়াইন মন্দ নয়।

কার্তিক আরিয়ানের সাহসী পদক্ষেপকে অনুভব করতে ‘ফ্রেডি’ দেখা যেতে পারে। তিনি যে শুধুই ‘কমিক’ চরিত্রের জন্য, সেই ধারণা ভাঙতে সাহায্য করবে এই ছবি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, থ্রিলার হিসাবে এই ছবি দর্শককে শেষ পর্যন্ত নিরাশ করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE