Advertisement
E-Paper

‘বাবার সন্তান বলে মানতেই চাইছে না!’ পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত নন্দিনী মালিয়ার মেয়ে?

অভিনেত্রী-কন্যার অভিযোগ, কলকাতার অপেরা হাউস প্রেক্ষাগৃহের মালিক তাঁরা। তাঁর ছোট কাকা তাঁকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছেন না!

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৯
প্রয়াত অভিনেত্রী নন্দিনী মালিয়ার মেয়ে অনন্যা মালিয়া।

প্রয়াত অভিনেত্রী নন্দিনী মালিয়ার মেয়ে অনন্যা মালিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

‘ছুটি’ কিংবা ‘মাল্যদান’ ছবির নাম উঠলেই বাঙালি আজও স্মৃতিমেদুর। সকলের চোখে ভাসে নায়িকা নন্দিনী মালিয়ার মুখ। খবর, ভাল নেই প্রয়াত অভিনেত্রীর একমাত্র কন্যা অনন্যা মালিয়া। বাবার কলকাতার বাড়ি অপেরা হাউজ়ে ঢুকতে পারছেন না তিনি! আনন্দবাজার ডট কম-এর কাছে এই অভিযোগ অভিনেত্রী-কন্যার!

নন্দিনী মালিয়া অভিনীত ছবি ‘ছুটি’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৭ সালে। অনন্যার কথায়, “তখন আমার মা মাত্র ১৩। এর তিন বছর পরে আমার বাবা চন্দ্রকুমার সেহগলের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। সে সময়ে নায়িকার বিয়ের খবর ফলাও করে ছাপা হত না সংবাদমাধ্যমে। তা হলে তাঁর কাজ পেতে অসুবিধা হত। আমার মা-বাবার কথাও তাই সে ভাবে কেউ জানেন না।”

চন্দ্র কুমার সেহগল এবং নন্দিনী মালিয়া।

চন্দ্র কুমার সেহগল এবং নন্দিনী মালিয়া। ছবি: সংগৃহীত।

অনন্যার দাবি, সম্পত্তি না পাওয়ার অন্যতম বড় কারণ নাকি এটাই। নিজের পরিবার সম্পর্কে বলতে গিয়ে অনন্যা তুলে ধরেন তাঁর অভিনেত্রী মায়ের দাম্পত্যকথা। তাঁর কথায়, ‘‘রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী শ্বশুরবাড়িতে খুবই অত্যাচারিত। সেই জন্যই মায়ের মুখচোখে সারা ক্ষণ বিষাদের ছায়া। একটানা বেশিদিন শ্বশুরবাড়িতে কাটাতে পারেননি। প্রায়ই নিজের মায়ের কাছে চলে যেতেন। তাই মায়ের বেশি বয়সের সন্তান আমি।’’

অনন্যার জন্মের কয়েক বছর পরেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে নন্দিনী-চন্দ্রের।

প্রসঙ্গত, অনন্যা অনেক বার কলকাতা পুরসভার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু কারও থেকে কোনও রকম সহযোগিতা নাকি তিনি পাননি।

কলকাতার পুরোনো ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, শহরের একসময়ের ঐতিহ্যশালী প্রেক্ষাগৃহ অপেরা হাউজ় অনন্যার প্রপিতামহ দুর্গাদাস সেহগল ব্রিটিশদের থেকে কিনেছিলেন। সেই সময়ে সেটি ছিল থিয়েটার হল। দুর্গাদাস সেটিকে প্রেক্ষাগৃহে রূপান্তরিত করেন। এই অপেরা হাউজ়ে উপরে দু’টি তল জুড়ে ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি এটিও অনন্যার পৈতৃক সম্পত্তি বলে দাবি তাঁর। জানিয়েছেন, যত বার কলকাতায় এসেছেন তত বার সেখানে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। অভিনেত্রী-কন্যার বক্তব্য, “পরিবারের বাকি সদস্যরা সেই সুযোগই দিচ্ছেন না। আমার বড় কাকা সূর্যকুমার সেহগল সপরিবার বিদেশে থাকেন। সেখান থেকে পাঠানো বার্তায় কাকিমা জানিয়েছেন, আমি নাকি সেহগল পরিবারের কেউ নই! ওঁরা আমাকে বাবার সন্তান বলে স্বীকারই করেন না!”

অতীতের অপেরা হাউজ় বন্ধ বহু বছর।

অতীতের অপেরা হাউজ় বন্ধ বহু বছর। ছবি: সংগৃহীত।

দিল্লির বাসিন্দা অনন্যা পেশায় গুরগাঁওয়ের এক মেডিক্যাল টুরিজ়ম সংস্থায় চাকরি করেন। মাসদুয়েক আগে তিনি চাকরি হারিয়েছিলেন। “দিল্লির জীবনযাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সেই সময়ে কলকাতায় এসে ছোট কাকা দেবেন্দ্র সেহগলের সঙ্গে দেখা করি। জানাই, অপেরা হাউজ়ের উপর আমারও অধিকার রয়েছে। আমার এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। তোমরা আমায় থাকতে দাও। আমি নিজের খরচ নিজে চালাব।” তাতেও নাকি রাজি হননি তিনি! নিরুপায় অনন্যা এর পরে ফের দিল্লি ফিরে যান। তাঁর আক্ষেপ, “মাথার উপরে মা-বাবা নেই বলে আমার আজ এই অবস্থা।”

বর্তমানে অপেরা হাউজ়ের কী অবস্থা? অনন্যা জানিয়েছেন, একসময়ের রমরমিয়ে চলা প্রেক্ষাগৃহ তাঁর বাবার মৃত্যুর পর বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর ছোট কাকা প্রেক্ষাগৃহটিকে ধারাবাহিকের শুটিংয়ে ভাড়া দিতেন। সে সবও বেশ কয়েক বছর হল বন্ধ।

সত্যিই কি অনন্যার সঙ্গে তাঁর পরিবার এ রকম কিছু করেছে? অভিনেত্রী-কন্যাকে তাঁর বাবার বাড়ি, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে?

জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল অনন্যার কলকাতানিবাসী কাকা দেবেন্দ্রের সঙ্গে। তিনি পুরো ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তাঁর সাফ কথা, “নন্দিনীর মৃত্যুর পর অনন্যা একদিনের জন্যেও আমাদের কাছে আসেনি। ওকে অনেক ছোটবেলায় দেখেছি। এখন কেমন দেখতে হয়েছে তা-ই জানি না! কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। ওর সঙ্গে সেহগল পরিবারের কোনও যোগাযোগ নেই।” অনন্যা যদি কাকার কাছে এসে দাঁড়ান তা হলে কি তাঁরা তাঁকে মেনে নেবেন? প্রশ্ন ছিল তাঁর কাছে। দেবেন্দ্রের বক্তব্য, “সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপরে।”

Nnadini Maliya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy