Advertisement
E-Paper

বাবার পথে হেঁটে টলিউডের দিন ফেরাতে চান, তাই অঞ্জনের ‘আব্বাজান’-এর সিক্যুয়েল আনছেন রিনা?

“এখন তারকাদের ছবিও দর্শক দেখছে না! তাই খরচ না বাড়িয়ে যাঁদের মানাবে তাঁদের নিয়েছি”, সাফ বললেন অঞ্জন চৌধুরীর কন্যা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৫ ০৯:২৪
বাবা অঞ্জন চৌধুরীর পথে হাঁটবেন রিনা চৌধুরী?

বাবা অঞ্জন চৌধুরীর পথে হাঁটবেন রিনা চৌধুরী? ছবি: সংগৃহীত।

অনেক দিন পর রিনা চৌধুরী ছবি পরিচালনার দুনিয়ায়। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসে মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি ‘সোহাগ রাত’। নায়কের ভূমিকায় তরুণকুমারের নাতি সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপরীতে ছোট পর্দার চেনা মুখ রিয়া। থাকবেন উত্তমকুমারের নাতনি নবনীতা চট্টোপাধ্যায়ও। রিনার এই ছবিটি প্রয়াত পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর ‘আব্বাজান’-এর সিক্যুয়েল!

রিনা অঞ্জনের ছোট মেয়ে। তিনিও একটা সময় দিদি চুমকি চৌধুরীর মতো বাবার একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। পরে সরে আসেন পরিচালনায়। অঞ্জন ঘরানাকে ফিরিয়ে আনতেই কি বাবার ঘরানা বেছে নিলেন? জানতে আনন্দবাজার ডট কম যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। চুমকি তাঁর বাবার মতোই স্পষ্টবাদী। সাফ বললেন, “একেবারেই তাই। এখনকার সিনেমা, সিরিজ়— সব দেখেছি। ভীষণ ভাল পরিচালনা, ঝকঝকে অভিনয়। কিন্তু বাংলার মাটির গন্ধ কই? অভিনেতাদের মুখ থেকে বাংলা সংলাপ সরিয়ে অন্য ভাষা জুড়ে দিলে বোঝাই যাবে না, ওটা বাংলা ছবি বা সিরিজ়। আমাদের নিজস্ব ভাষা আছে, ঘরানা আছে। সে দিকে না গিয়ে যদি দক্ষিণী বা বলিউডকে অনুকরণ করি তা হলে আমাদের নিজস্বতা রইল কই?”

এটি একটি কারণ। দ্বিতীয় কারণটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রিনার মনে হয়েছে, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশেও এখন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। বিষয়টি খারাপ লেগেছে রিনার। “‘আব্বাজান’ ছবিতে মুসলিম বাবা আর হিন্দু ছেলের গল্প বলেছিলেন আমার বাবা। আমি মুসলিম মা আর হিন্দু ছেলের স্নেহ, ভালবাসার গল্প শোনাব। আশা, দর্শকদের ভাল লাগবে।” ছবির গল্পের নেপথ্য কারণ না হয় জানা গেল। কিন্তু ছবি হিট করানোর জন্য তারকা অভিনেতাদের উপস্থিতি জরুরি। রিনা যে সে পথেও হাঁটলেন না!

এ বারেও তিনি অকপট। সোজাসাপটা দাবি করলেন, “তারকাখচিত ছবি একের পর এক মুক্তি পাচ্ছে। আর ব্যর্থ হচ্ছে। তারকা অভিনেতাদের দেখতেও তো হলে ভিড় জমাচ্ছেন না দর্শক! তাঁরা প্রযোজনা সংস্থার নাম বা পরিচালকের নাম দেখে ছবি দেখতে যাচ্ছেন! তা হলে কেন প্রযোজকের পয়সা নষ্ট করে তারকা অভিনেতাদের নেব?” রিনা তাই যাঁদের মানাবে তাঁদেরই বেছে নিয়েছেন। অল্প হেসে যোগ করেছেন, “আমার প্রযোজক ছোটখাটো। নষ্ট করার মতো পয়সা তাঁর নেই!” দিদি চুমকিকে তো নিতেই পারতেন? “হ্যাঁ পারতাম”, মেনে নিলেন পরিচালক। জানালেন, শুটিংয়ের সময় তাঁর দিদি ধারাবাহিকে অভিনয় করছিলেন। ফলে, সময় দিতে পারেননি।

বাবার পথে হাঁটলেও এখনকার নিয়ম মেনে মাত্র ১৫ দিনে ছবির শুটিং শেষ করেছেন রিনা। অঞ্জনের ছবির শুটিং মাসখানেক ধরে চলত। সে কথা মনে করাতেই আফসোস তাঁর, “কাজ করে একটুও তৃপ্তি পাইনি। কিন্তু কী করব? আমাদের হাত-পা বাঁধা। এখন প্রযোজকেরা ছবিমুক্তির আগেই লাভ-ক্ষতির হিসাব করেন। বেশি পয়সা খরচ করতে ভয় পান। যদি ফেরত না আসে! বাংলা ছবির বর্তমান অবস্থা আমাদের তো এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে।” তাই ছবিমুক্তি নিয়ে বাড়তি মনোযোগী তিনি। কলকাতায় নন্দন আর রাধা স্টুডিয়ো ছাড়া মফস্‌সলের দিকে বেশি আগ্রহী তিনি। “বাবার সময় দেখেছি বাংলা ছবির পয়সা উঠে আসে গ্রাম-গঞ্জ থেকে। আমি সেখানকার দর্শকদের কথা মাথায় রেখে ছবি বানিয়েছি। তাই ওই ধরনের অঞ্চলে বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছে।”

অঞ্জন ঘরানায় হেঁটে ছবি সফল হলে রিনা কি আগামী দিনে বাবার ছবির মতোই ছবি বানাবেন?

“সমস্যা কোথায়?” পাল্টা প্রশ্ন তাঁর। রিনার কথায়, “কার মতো ছবি বানাচ্ছি সেটা বড় কথা নয়। সফল ছবি বানাতে পারছি কি না সেটা বিষয়।” এই ব্যাপারে প্রচণ্ড আশাবাদী তিনি। জানিয়েছেন, অঞ্জনের মাথায় দেবী সরস্বতীর হাত ছিল। তিনিও বাবার মতো কাহিনি-চিত্রনাট্য-পরিচালনা তিনটিরই দায়িত্ব নেন। জানেন, তাঁর মাথায় অঞ্জন চৌধুরীর হাত আছে। তিনি সফল হবেনই।

Anjan Chowdhury Rina Chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy