ফাইল চিত্র।
বেঁচে থাকার ইচ্ছের কাছে হার মেনেছিল ক্যানসার। মারণরোগের কবল থেকে বেরিয়ে নতুন জীবনের স্বাদ নিচ্ছেন ‘ওয়াটার’ অভিনেত্রী লিসা রে। ৭ নভেম্বর জাতীয় ক্যানসার সচেতনতা দিবসে তাঁর লড়াইয়ের গল্প অনুপ্রেরণা হিসাবে ভাগ করেছিল ‘হিউম্যান্স অফ বোম্বে’। শুধু ক্যানসার যোদ্ধারা নন, সবাই আরও এক বার চোখ ভিজিয়ে পড়লেন সেই অধ্যায়।
২০১৩ সাল। বোন ম্যারো বা রক্তের মজ্জায় ক্যানসার ধরা পড়েছিল লিসার। সেই পোস্টে অভিনেত্রী শুরু করেছিলেন এই ভাবে, “কী ভাবে এখনও দাঁড়িয়ে আছ? তোমার শরীরে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ এতই কম যে, যে কোনও মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে— আমার প্রথম রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আমাকে এ কথাই বলেছিলেন। মাসের পর মাস ধরে ক্লান্তি অনুভব করছিলাম।”
এর পর লিসা ভাগ করে নিয়েছেন আরও এক বৃত্তান্ত, যেখানে কিছু দিন পরেই অন্য এক চিকিৎসক তাঁকে বলেছেন, “তোমার বোন ম্যারোর প্লাজ়মায় ক্যানসার হয়েছে।” লিসা জানান, ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি থামলেন। বড় করে শ্বাস নিয়ে ভাবলেন, এই সেই দীর্ঘ বিরতি, শান্তির। যা তিনি খুঁজছিলেন একটি বই লিখবেন বলে, কিন্তু কাজের ব্যস্ততায় পেরে উঠছিলেন না। কিন্তু পরিস্থিতি, যেমনটা ভাবলেন, তত সহজ হয়নি বলেই জানান লিসা।
লিখেছেন, “মৃত্যুর কাছাকাছি কেমন লাগে এই প্রথম বুঝলাম। স্টেম সেল সার্জারির সময় মনে হয়েছিল মরেই গেলাম। তার পর চোখ মেললাম যখন, নতুন জন্ম। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনকে মূল্য দিতে শিখিয়েছিল প্রথম বার, মনে হয়েছিল, যা পেয়েছি দামি।”
চিকিৎসা চলাকালীন কাজ হারান লিসা। ট্র্যাভেল চ্যানেলের চাকরি আর মাথাভরা চুল একসঙ্গেই চলে যায় তাঁর জীবন থেকে। কেমোথেরাপির পর কিছু দিন পরচুলা পরতেন। কিন্তু নিজেকে দেখে নিজেরই হাসি পেত। তাই টাক মাথায় ঘুরতেন। তা নিয়ে শিরোনামেও এসেছিলেন অভিনেত্রী। তবু লড়াইটা ছিল একার। একটি ভ্রমণের শো-তে সেই চুল নিয়ে যাওয়ার পরই তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান। লম্বা চুলের নারী চেয়েছিল সেই সংস্থা। লিসা জানান, জীবন তাঁর প্রতি এতটাই নির্মম হয়েছে। তবু টিকে গিয়েছেন।
সেরে ওঠার ৩ বছর পর ভিতর থেকে সেরে উঠতে পেরেছেন লিসা। গত ৯ বছরে এত কিছু ঘটে গিয়েছে জীবনে, যে স্বপ্নের মতো মনে হয়। কিন্তু সাহসটা ১০০ গুণ হয়ে গিয়েছে বুকের ভিতর। বই লিখেছেন, বাচ্চা মানুষ করেছেন, ক্যানসার সচেতনতাও গড়ে তুলেছেন। তবে সবশেষে লিসা লেখেন, “ভাবতে অবাক লাগে, মারণরোগের বিভীষিকাই যখন সবচেয়ে বেশি করে বাঁচতে শেখায়! এ কেমন রসিকতা!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy