সাত সুরের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সমগ্র সঙ্গীত জগৎ। এই সাত সুরেই বোনা অসংখ্য রাগ-রাগিনী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানেও রাগ সঙ্গীতের বড় প্রভাব রয়েছে। কখনও উত্তর ভারতের রাগ সঙ্গীত, কখনও বা দক্ষিণ ভারতের রাগ সঙ্গীত নতুন রূপ পেয়েছে তাঁর সৃষ্টিতে। এমনই কিছু গানের সূত্র ধরে বোনা হয়েছে অনুষ্ঠান ‘নাই রবি’।
কাফি রাগের উপর তৈরি ‘এ পরবাসে’ অথবা বেহাগ রাগের উপর তৈরি ‘চিরসখা হে’-র মতো গান শোনা যাবে অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে। আবার দ্বিতীয়ার্ধে কামোদ রাগের উপর ‘অমৃতের সাগরে’, অথবা ভৈরবী রাগের উপর ‘বাঁধন ছেড়ার সাধন হবে’র মতো গান পরিবেশন করা হবে।
‘নাই রবি’ অনুষ্ঠানের দিশা দেখাবেন স্বামী শিবপ্রদানন্দ, জয় গোস্বামী ও রাহুল মিত্র। এই তিন জনের মাঝে কী ভাবে উঠে আসবেন রবীন্দ্রনাথ?
জয় গোস্বামী বলেন, “প্রথম রবীন্দ্র কবিতা পাঠে সুযোগ আমাকে রাহুল মিত্র দিয়েছেন। তার পর ২০ বছর ধরে ওঁর সঙ্গীত দলের সঙ্গে আমি রবীন্দ্রকাব্য পাঠের জন্য যুক্ত আছি। রাহুলের প্রতিটি অনুষ্ঠান একে অপরের থেকে ভিন্ন হয় সব সময়ে। ভিন্ন কবিতা থাকে। তাই অনুষ্ঠানের আগে নিয়মিত মহড়ারও প্রয়োজন হয়। ‘নাই রবি, আছ অন্তরে’ এমন একটি মুখবন্ধ পড়া হবে। গান, কাব্য সমস্ত নির্বাচনই করেছেন রাহুল।”
রবীন্দ্রকাব্য পাঠে জয় গোস্বামী।
‘সকাল বেলার আলোয় বাজে বিদায় ব্যথার ভৈরবী’-এই গানের থেকেই নেওয়া ‘নাই রবি’ কথাটি। ২২ শ্রাবণ উপলক্ষে পরিকল্পিত এই অনুষ্ঠান। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের সময়কাল ভেবেই অনুষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। জানান জয়।
আরও পড়ুন:
রবীন্দ্রনাথের গান প্রসঙ্গে কয়েকটি ক্ষোভের কথা জানান রাহুল। তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথের গান যে উচ্চতায় পৌঁছতে পারত, তা আমাদের অনেকের জন্যই পৌঁছতে পারেনি। ক্রমাগত আঘাত হানা হয়েছে বরং। ক’দিন আগেই ‘চণ্ডালিকা’ই তার প্রমাণ। প্রচারের আলো পাওয়ার জন্য রবীন্দ্রনাথকে অবলম্বন করতে হচ্ছে। তবে এ শুধু আজ নয়। অনেক দিন আগে কবিরা এর সূত্রপাত করেছিলেন। যাঁদের নিজের আলো নেই, তাঁদের রবীন্দ্রনাথের আলো নিয়ে আলোকিত হবে। আবার সেখানে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকেই অপমান করা হচ্ছে। এই অবক্ষয়ের জায়গা থেকেই রবীন্দ্রনাথকে বলা হচ্ছে, ‘তুমি আর এসো না’। এর উত্তর দিচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ নিজেই। এই ভাবেই সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠান।”
প্রথমার্ধে রবীন্দ্রনাথের দিকে প্রশ্ন রাখা হবে। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর দিক থেকে উত্তর আসবে, নির্দিষ্ট কিছু গানের মাধ্যমে। অনু্ষ্ঠানের পরিচালনা করছেন সৌরভ চট্টোপাধ্যায়। ৫ অগস্ট জিডি বিড়লা সভাঘরের অনুষ্ঠানে সঙ্গীতে থাকছেন দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়, হাসান হায়দার খান, গৌতম দত্ত, শুভ্রজ্যোতি সেন।