জন্মদিনে বাবার স্মৃতিচারণ করলেন সন্তু মুখোপাধ্যায়ের ছোট মেয়ে অজপা মুখোপাধ্যায়। তারই সাক্ষী থাকল আনন্দবাজার ডিজিটাল। পরিবারের ছোট ছোট মজার ঘটনার কথা মনে করলেন অজপা। বাবার ওই ডাক, বাবার ওই বকা, মারধর, নাচ, গান, এস্রাজ বাজানো, এসবের কথাই মনে পড়ছে অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও স্টাইলিস্ট অজপা মুখোপাধ্যায়ের।
‘‘ভেবলি! বুবু!’’— ব্যস, থরহরিকম্প দুই বোন ধীর পায়ে বাবার ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। মাথার মধ্যে চলছে গত ২৪ ঘণ্টার ফ্ল্যাশব্যাক। কী এমন করল তারা? এখনই উত্তম মধ্যম পড়বে পিঠে। কিন্তু কোনও নিয়ম ভঙ্গ করেছেন বলে তো মনে পড়ছে না! কিছুক্ষণের বুকের থেকে ভারী পাথরটা সরে গেল। ‘‘পাখাটা একটু কমিয়ে দে তো।’’ কিন্তু ওই একটি ডাকেই পা থেকে মাথা পর্যন্ত বিদ্যুৎ খেলে যেত দুই বোনের। কিন্তু আজ সেই ডাকটা আর শুনতে পাবেন না তাঁরা। কান পেতে রয়েছেন তবু। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বছর মারা যান ‘জন্মভূমি’, ‘সংসার সীমান্তে’ খ্যাত অভিনেতা ও গায়ক। আজ সেই সন্তু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন।
স্বস্তিকার তখন ১০ বছর মতো বয়স হবে। আর অজোপা প্রায় ৮। কোনও একটি বিশেষ কাজ করতে বারণ করেছিলেন বাবা। কিন্তু ছোট বোন তো বেশ দুষ্টু। সরল দিদিকে বলে, ‘‘এই দিদি, আরে আমি বলছি। কিচ্ছু হবে না। চল করি।’’ এর ফলশ্রুতি হিসেবে পাক্কা ২৪ ঘণ্টা তাঁর দুই মেয়েকে একটি ঘরে আটকে রেখেছিলেন সন্তু মুখোপাধ্যায়। মা গোপা মুখোপাধ্যায় তো কেঁদেই চলেছেন। বড় মেয়ে অতশত না ভেবে দরজা ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে চোখ কালো করে ফেলল। আর ছোট জন বুঝে গিয়েছিলেন ও সব করে লাভ নেই। কিন্তু বাবার মন আর গলেই না। খাওয়া দাওয়া বন্ধ থাকলে মেয়ে দু’টির শিক্ষা হবে, এমনটা ভেবেছিলেন সন্তু মুখোপাধ্যায়। কিন্তু হায়! খাটের তলায় রাখা ছিল বিলিতি চকোলেটের বাক্স। এনে দিয়েছিলেন বাবার বন্ধু। সমস্ত চকোলেট খেয়ে সাবাড় করে দিল দুই মেয়ে! খাওয়ার বন্দোবস্ত তো হল। কিন্তু প্রকৃতির ডাককে তারা অগ্রাহ্য করল কেমন করে? তার জন্য কোনও উপায় পাওয়া যায়নি। জামাকাপড়ই ভরসা। একটার পর একটা বদলাতে থাকল তারা। তবে মাঝে এক বার অজপা বুদ্ধি দিয়েছিলেন, জানলা দিয়ে সে কাজ সারা হোক। নাহ, স্বস্তিকা রাজি হননি।