Advertisement
E-Paper

জট খুললেও রইল প্রশ্ন

সত্যি বলতে কী, প্রাইভেট ডিটেকটিভ বলে এ শহরে যাঁরা আছেন, তাঁদের কাজ অনেকটাই নজরদারির মধ্যে সীমাবদ্ধ।

সূর্য্য দত্ত

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২১ ০০:২১
প্রতিদ্বন্দ্বী ছবির দৃশ্য।

প্রতিদ্বন্দ্বী ছবির দৃশ্য।

প্রতিদ্বন্দ্বী
পরিচালনা: সপ্তাশ্ব বসু
অভিনয়: শাশ্বত, রুদ্রনীল, সৌরভ, সায়নী
৫/১০

ছবির নামে বিশপ লেফ্রয় রোডের ছায়া। কিন্তু প্রথমেই বলে দেওয়া ভাল, এই ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ একেবারেই আলাদা। এটি একটি স্বতন্ত্র থ্রিলার। গোয়েন্দা-ত্রয়ী সিদ্ধার্থ, ইন্দ্রনীল আর জেনি একটা এজেন্সি চালায়। পুলিশের কাজটা ‘একটু এগিয়ে দেয়’। ডাক্তার অরুণাভ বক্সী (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) তাদের সাহায্য চাইতে আসে। তার ছেলে কিডন্যাপড। কিডন্যাপারের পরিচয় প্রথমেই জেনে গিয়েছেন দর্শক। তিনি অঙ্কের মাস্টার সুকুমার সেন (রুদ্রনীল ঘোষ)। এ দিকে মহানগরে একাধিক শিল্পপতি অপহৃত বা খুন হচ্ছে। বক্সীর ছেলের অপহরণের সঙ্গে সমান্তরালে চলতে থাকে এই রহস্যও।

এই ছবি তথাকথিত ‘হুডানিট’ নয়। অপরাধ ও অপরাধী দর্শকের সামনেই আছে। গোয়েন্দা তার তদন্ত চালাচ্ছে। দুটো সুতো কী ভাবে মিলল, সেটাই দেখার। তবে প্রথমার্ধের প্রায় টানটান সুতো দ্বিতীয়ার্ধে একটু আলগা হয়েছে বলে মনে হয়েছে। যেমন সিদ্ধার্থ (সৌরভ দাস) নিজের অফিসে বসে বিরক্তি-সহ ধুলো ঝেড়ে কয়েকটা পুরনো বই ঘাঁটছিল। ঠিক তার পরেই একটি বুক ক্লাবের ওয়েব-পেজে ঢুকে সে বুঝে গেল, প্রধান দু’টি চরিত্রই ওই ক্লাবের প্রাক্তন সদস্য। সূত্রটা স্পষ্ট হল না। ডিঅ্যাক্টিভেট করা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটা ছবি সিদ্ধার্থ উদ্ধার করার পরেই রহস্যজাল খুলে দিয়ে আচমকা ফ্ল্যাশব্যাক চালু হয়ে গেল। গল্পের এতক্ষণের গতিপথ থেকে এই উত্তরণ আরও মসৃণ হতে পারত। সিদ্ধার্থের প্রাক্তন বান্ধবী মায়া (সায়নী ঘোষ) এখন দুঁদে রাজনৈতিক নেত্রী। কিন্তু ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র যে হাসপাতালটি, তার সঙ্গে মায়ার সম্পর্ক কী, তা-ও স্পষ্ট হল না। সে হাসপাতালের কর্ত্রী, নাকি ওষুধ ব্যবসায়ী? এমন ধুরন্ধর একটি চরিত্রের বোধোদয়ও হল বড্ড সহজে।

সত্যি বলতে কী, প্রাইভেট ডিটেকটিভ বলে এ শহরে যাঁরা আছেন, তাঁদের কাজ অনেকটাই নজরদারির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ক্ষেত্রটা ব্যবসা থেকে দাম্পত্য— সবই হতে পারে। ফেলু-ব্যোমকেশরা মাথায় থাকুন। কিন্তু ২০২০-র কলকাতার গল্পে তিনটি ছেলেমেয়ের কাছে ‘কেস আসা’, তাদের হঠাৎ হঠাৎ আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ‘অ্যাকশন’-এ নেমে পড়া, চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে কেস নিয়ে আলোচনা করা কিংবা এই সিসিটিভি-র যুগে হাসপাতালে ঢুকে অবলীলায় খুন করে অপরাধীর পালিয়ে যাওয়া— এগুলো অনেকটা কল্প-কাহিনি হয়েই রয়ে যায়। বাস্তবের মাটির থ্রিলারে কি এ সবের খুব প্রয়োজন? তিন গোয়েন্দা আক্ষেপ করছে, ‘‘মার্কেটে ক্লায়েন্ট নেই।’’ অফিসের কফি মেশিনটা পর্যন্ত অকেজো। অথচ ম্যাকবুক আর দু’-তিনটে টিভি মনিটরে সাজানো অত্যাধুনিক ‘সেট আপ’ রয়েছে তাদের। আগ্নেয়াস্ত্র, গাড়ি তো আছেই। তার পর ধরা যাক, তিন-চার বছরের বাচ্চা কি বুঝতে পারে, তার মাথা ঘুরছে? জিপিএসের বদলে ‘জিপিআরএস’ দেখে গাড়ি চালাতে বলাটাও কানে লাগে।

থ্রিলারধর্মী ছবিতে তাঁরা যে অনায়াস, শাশ্বত-রুদ্রনীল আগে বহু বার বুঝিয়েছেন। তবে এই ছবির কিছু চরিত্রের অভিনয় অনেকটা একই পর্দায় বাঁধা। আবহ নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই, গানগুলো শুনতে ভালই লাগে। সত্যজিৎ রায়ের ছবির নামে এই ছবি হলেও চরিত্রলিপির হরফ-মন্তাজ কিন্তু বড্ড ছোট আর দ্রুতগামী। ঠিক করে পড়া গেল না। ভাল লাগল দিনে-রাতে ড্রোনের চোখে মহানগরকে দেখে।

Pratidwandi Review Swasata Chatterjee Rudranil Ghosh Tollywood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy