Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Rishi Kapoor

দোনো মিলে ইস তরহা...

নীতু কপূর ছিলেন তাঁর ‘জ়িব্রাল্টার রক’। ‘খুল্লম খুল্লা’ লাভস্টোরির নায়িকাকে পিছনে ফেলেই চলে গেলেন ঋষি এই ‘বব’ সম্বোধনের নেপথ্যের কাহিনি একবার খোলসা করেছিলেন নীতু নিজেই।

ঋষি-নীতু

ঋষি-নীতু

সায়নী ঘটক
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২০ ০১:৪৩
Share: Save:

চল্লিশ বছরের ইনিংসশেষে উইকেট পড়লেও টুইটার হ্যান্ডলের প্রোফাইল পিকচারে এখনও যুগলের ছবি। প্রেমপর্বের শুরুর দিন থেকে ক্যানসার-ব্যাটল পর্যন্ত একসঙ্গে দীর্ঘ পথ চলা। অনস্ক্রিন হিট জুটি থেকে অফস্ক্রিন দাম্পত্য, বলিউডের ‘পাওয়ার কাপল’ হিসেবে ঋষি ও নীতু কপূর ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। চড়াই-উতরাই এসেছে দাম্পত্যে, তা নিয়ে শিরোনামও হয়েছে, কিন্তু হাল ছাড়েননি নীতু। কখনও বদমেজাজি, কখনও শিশুসুলভ, কখনও ‘ভালনারেবল’ ঋষিকে শক্ত হাতে সামলে রেখেছিলেন তাঁর পার্টনার। দাম্পত্যে জমে ওঠা মেঘ কিংবা সন্তানদের সঙ্গে ঋষির দূরত্ব— কোনও কিছুরই আঁচ লাগতে দেননি পরিবারের বুনটে। ঋষি নিজেও স্বীকার করতেন, ‘আই অ্যাম আ টাফ ম্যান টু লিভ উইথ। কিন্তু তা যদি কেউ পেরে থাকে, সেটা নীতুই।’ শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর ‘বব’-এর পাশে থেকেছেন তিনি।

এই ‘বব’ সম্বোধনের নেপথ্যের কাহিনি একবার খোলসা করেছিলেন নীতু নিজেই। প্রেমপর্বের প্রথম দিকে ঋষি-নীতু পরস্পরকে ‘বাবা’ সম্বোধন করতেন। বিয়ের পর সেটাই শর্টকাটে ‘বব’ করে নিয়েছিলেন নীতু! ‘রফু চক্কর’, ‘খেল খেল মে’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’... পরপর ছবিতে ঋষি-নীতুর কেমিস্ট্রি মাত করছে দর্শককে। সেই রসায়নের উৎস ছিল অফস্ক্রিন। নীতু এক বার বলেওছিলেন, ‘‘আমার মনে আছে, ‘জ়হরিলা ইনসান’ থেকেই ও আমার সঙ্গে ফ্লার্ট করা শুরু করেছিল।’’ সেই ছবির নায়িকা ছিলেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, নীতু ছিলেন সেকেন্ড লিড। বড়দের নজর এড়িয়ে প্রেম করাটাই ঋষি-নীতুর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল তখন। ‘‘আমরা ডিনার ডেটে গেলেই আমার ভাইকে সঙ্গে পাঠানো হত! মাঝরাস্তায় এসে ভাইকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতাম, খেয়েদেয়ে ফেরার সময়ে তুলে নিতাম আবার,’’ শুরুর দিনগুলোর কথা মনে করছিলেন নীতু।

‘বেবি সোনিয়া’ নামে শিশুশিল্পী হিসেবে রুপোলি পর্দায় যাত্রা শুরু যে নীতুর, বিয়ের অব্যবহিত পরে তিনিই অবলীলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন সাজানো কেরিয়ার। কপূর পরিবারের পুত্রবধূ বলেই কি? নীতুর যুক্তি ছিল, ‘‘আমার পরিবার, আমার সন্তানরা যদি খুশি থাকে, সেটাই আমার কাছে শেষ কথা।’’ ঋষি-নীতুর বাগদান তাঁদের অজান্তেই ঠিক করে ফেলেছিল তাঁদের পরিবার-বন্ধুরা। তখন ঋষির ২৭, নীতুর ২১ বছর। বয়স আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেমে-দাম্পত্যে পরিণত হয়েছেন দু’জনেই। দুই সন্তান আর ঋষির মধ্যের ব্রিজ ছিলেন নীতু। তবে ছেলের বন্ধু হয়ে ওঠা হয়নি ঋষির। সেই সেতুবন্ধনের চেষ্টা আজীবন করে গিয়েছেন নীতু। রাজ কপূরের প্রতি যতখানি শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয়ে নত হয়ে থাকতেন ঋষি, মনে করতেন বাবা-ছেলে হিসেবে সেটুকু দূরত্ব তাঁর আর রণবীরের মধ্যেও থাকা দরকার। তবে চিকিৎসার সময়ে কাছাকাছি এসেছিল বাবা-ছেলে। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনার পরে প্রথমে মানতে পারেননি ঋষি। তাঁর ‘জ়িব্রাল্টার রক’ নীতুর শক্ত হাত ধরেই লড়ার শক্তি পান। প্রায় এক বছর নিউ ইয়র্কে চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়ার পরে ইটালিতে তাঁকে বেড়াতে নিয়ে যান নীতু। মুম্বই এসে কাজে ফিরতে চেয়েছিলেন ঋষি। ফিরতে চেয়েছিলেন ঈষৎ বেহিসেবি কিন্তু বড্ড প্রিয় লাইফস্টাইলে। ফেরা আর হল না। ‘এক ম্যায় অওর এক তু’র ‘তু’কে একা রেখেই চলে গেলেন।

আরও পড়ুন: পালকি বানাও, মোটি পালকিতে উঠবে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rishi Kapoor Neetu Singh Bollywood Cinema
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE