Advertisement
E-Paper

মায়ের ‘ডান হাত’ ছিলেন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের ‘দিদি’! ওঁর ছেলেমেয়ের সঙ্গে খেলতাম: ঋতুপর্ণা

পরিচালকের ছবির বিশেষ প্রদর্শনে লক্ষ্মীকান্তপুরের কিছু মানুষ এসেছিলেন। আর এসেছিলেন টলিউডের নামজাদা অভিনেতারা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৩০
‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। নিজস্ব ছবি।

ওঁরা কাজ করেন। ওঁদের উপস্থিতিতে নাগরিক জীবন সচল। মধ্য এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘর-সংসার পরিপাটি থাকে। “মায়ের ডান হাত ছিলেন লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে চেপে আসা ‘দিদি’রা”, এই গল্প শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাগ করলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘বাড়িওয়ালি’তে গৃহপরিচারিকাদের কথা বলা হয়েছে। সেখানে তাঁদের প্রতিনিধি ছিলেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। “তার পরে সে ভাবে কি ওঁদের কথা কেউ বলেছেন?” তাঁর ছবি ‘লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল’-এর বিশেষ প্রদর্শনে এসে আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, সুদেষ্ণা রায় তাঁর ‘আপিস’ ছবিতে গৃহপরিচারিকাদের জীবন দেখিয়েছেন। সেখানেও এই বিশেষ শ্রেণির প্রতিনিধি সুদীপ্তা চক্রবর্তী। কিন্তু তিনিও যে নগরকেন্দ্রিক!

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রামকমল মুখোপাধ্যায়, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রামকমল মুখোপাধ্যায়, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

এই জায়গা থেকেই রামকমলের মনে হয়েছে, এ বার প্রান্তবাসীদের গল্প বলা যাক। আর তাই ‘নটী বিনোদিনী’র পর তাঁর দ্বিতীয় বাংলা ছবি লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে চেপে আসা সেই সকল মানুষদের নিয়ে, যাঁদের ছাড়া নগরজীবন অচল। রামকমলের ছবি তারকাখচিত, নানা চরিত্রের ভিড়। এই ছবিও ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ প্রদর্শনীতে তাই ঋতুপর্ণা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, ইমন চক্রবর্তী, পরিচালক অভিজি়ৎ সেন, প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরী, পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়, বিধায়ক মদন মিত্র, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, কাউন্সিলার অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক-অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক, শ্রীময়ী চট্টরাজ-সহ অনেক চেনা মুখ। এই ছবির বিশেষ প্রদর্শনে লক্ষ্মীকান্তপুরের কিছু মানুষও এসেছিলেন।

সবুজ বেনারসি, মানানসই গয়নায় ঝলমলে ঋতুপর্ণা। কপালে কাচপোকার টিপ। তাঁর বাড়িতে লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল থেকে কেউ আসতেন? প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রী বললেন, “অনেকে এসেছেন। ওঁরা আসতেন বলেই আমাদের ঘরদোর পরিপাটি থাকত। মায়ের খাটনি অনেক কমে যেত।” একটু থেমে যোগ করেছেন, “দিদিরা কোলের ছেলে বা মেয়েকে অনেক সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসতেন। আমি তো ওদের সঙ্গেই বেড়ে উঠেছি। একসঙ্গে খেলাধুলো করেছি।” ছবিতে তিনি কৌশিকের বিপরীতে।

শ্রীময়ী চট্টরাজ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কাঞ্চন মল্লিক।

শ্রীময়ী চট্টরাজ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, কাঞ্চন মল্লিক। নিজস্ব চিত্র।

সায়নী, চান্দ্রেয়ী এই ছবিতে লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল চেপে আসা বিশেষ শ্রেণির প্রতিনিধি। ছবি নিয়ে কী বক্তব্য তাঁদের? উভয়েই জানিয়েছেন, এই শ্রেণিকে আরও বেশি করে তুলে ধরা দরকার। এঁরা সমাজজীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। এঁদের জীবন সকলের জানা উচিত।

মদন মিত্র উচ্ছ্বসিত ঋতুপর্ণাকে নিয়ে। সপাট বললেন, “উত্তমকুমারের মৃত্যুর পর বাংলা ছবির খারাপ সময় এসেছিল। সেই সময় টলিউডকে সামলেছিলেন ঋতুপর্ণা। আজও সেই দায়িত্বপালন করে চলেছেন তিনি! বাকিরা যখন বাংলা ছেড়ে বলিউডে যেতে ব্যস্ত, তখনও ঋতুপর্ণা টলিউডকে ভোলেননি। এই জন্যই আমি ওঁর অনুরাগী।”

ইমন চক্রবর্তী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অভিষেক রায়। ইনসেটে সায়নী ঘোষ।

ইমন চক্রবর্তী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অভিষেক রায়। ইনসেটে সায়নী ঘোষ। নিজস্ব ছবি।

ছবি প্রায় শেষের পথে। বাইরে হঠাৎ হট্টগোল। লাল সিল্কের শাড়িতে সেজে শ্রীময়ী চট্টরাজ! হইহই করে বলে উঠলেন, “ঋতুপর্ণাদি আর রামকমলদার ছবি। না এসে পারি? খুব আদর করে ডেকেছেন।” লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল নিয়ে কোনও স্মৃতি? যেন প্রশ্ন করার অপেক্ষায় ছিলেন। বলে উঠলেন, “যিনি আমাদের মেয়ে কৃষভিকে দেখাশোনা করেন, তিনিই ওই জায়গা থেকে আসেন।” আরও জানালেন, ওঁরা দলবেঁধে আসেন। সারা শহরে ছড়িয়ে পড়েন। তার পর সন্ধ্যার ট্রেনে চেপে হইহই করতে করতে বাড়ি ফিরে যান। পরস্পরের বন্ধু হয়ে এই আনাগোনাটাও দেখার মতো।

Rituparna Sengupta Ram Kamal Mukherjee Sayani Ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy