Advertisement
E-Paper

নস্টালজিয়ার টানে ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’ দেখতেই পারেন কিন্তু রহস্যে ফাঁকফোকর চোখে পড়বে

সোনার কেল্লার কোনও অলিন্দে বা চোরাকুঠুরিতে বুঝি লুকিয়ে আছে দুর্মূল্য পরশপাথর আর মুকুলবাবুর পূর্বজন্মের স্মৃতিতে রয়েছে সেই রত্নের চাবিকাঠি। এই পাথর খুঁজতেই বিমল-কুমার, ডক্টর রুবি ও মুকুলবাবু জৈসলমের পৌঁছোন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৫ ১৯:১৪
কেমন হল ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’?

কেমন হল ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’? ছবি: সংগৃহীত।

‘সোনার কেল্লা’ বাঙালির জন্য একটা ইমোশন। ‘সোনার কেল্লা’ মানেই বাঙালির ছোটবেলা। ‘সোনার কেল্লা’ মানে সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা ফেলুদা-সহ ত্রয়ীর উট চড়ে মরুভূমি পাড়ি। যদি জৈসলমেরে যান, আজও দেখবেন কাতারে কাতারে লোক আসছে ফেলুদা, তোপসে আর লালমোহন গাঙ্গুলির চোখ দিয়ে দেখা সোনার কেল্লার খোঁজে। অনেকটা সেই নস্টালজিয়ার টানেই ঢুকে পড়েছিলাম সায়ন্তন ঘোষালের ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’ ছবিটা দেখতে।

‘যকের ধন’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির ব্যাপারে শুনে থাকলেও হেমেন্দ্রকুমার রায় রচিত বিমল (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) ও কুমারের (গৌরব চক্রবর্তী) জুটি নিয়ে তৈরি ছবিগুলো দেখার সুযোগ হয়নি আগে। ‘যকের ধন’ (২০১৭) আর ‘সাগরদ্বীপে যকের ধন’ (২০১৯) হেমেন্দ্রকুমারের গল্প অবলম্বনে ছিল। কিন্তু ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’ তাঁর রচনা নয়।

বরং ঠিক যেমন সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’র মূল গল্প শুরু হয় শিশু মুকুলকে দিয়ে, এই ফিল্মের সূত্রও সেই মুকুল (সুপ্রভাত দাস)। তবে সে আর ছোট্টটি নেই। এখন সে ‘মুকুলবাবু’। কলেজ স্ট্রিটে তাঁর বইয়ের দোকান। এক দিন দোকান বন্ধ করে রাতে বাড়ি ফেরার পথে কিছু গুন্ডা তাঁকে তাড়া করে। তাদের হাত থেকে পালাতে গিয়ে মুকুলবাবু আচমকা বিমল-কুমারের গাড়ির সামনে এসে পড়েন।

মুকুলবাবুর ‘হেল্প! হেল্প!’ চিৎকার শুনে বিমল-কুমার গাড়ি থামিয়ে তাঁকে গুন্ডাদের থেকে বাঁচান। তার পর নিয়ে যান ডক্টর রুবির (কোয়েল মল্লিক) বাড়ি। সেখানে জানা যায়, গুন্ডাদের পিছু নেওয়ার উদ্দেশ্য। কেউ মুকুলবাবুকে তাঁর পূর্বজন্মের কথা মনে করিয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু কেন?

এই রহস্যভেদই ‘সোনার কেল্লায় যকের ধনের’ বিষয়বস্তু। জানা গেল, সোনার কেল্লার কোনও অলিন্দে বা চোরাকুঠুরিতে বুঝি লুকিয়ে আছে দুর্মূল্য পরশপাথর আর মুকুলবাবুর পূর্বজন্মের স্মৃতিতে রয়েছে সেই রত্নের চাবিকাঠি। এই পাথর খুঁজতেই বিমল-কুমার, ডক্টর রুবি ও মুকুলবাবু জৈসলমের পৌঁছোন।

সেখানে পৌছে অবশ্য তাঁরা বুঝতে পারেন যে, পরশপাথরের খোঁজে তাঁরা ছাড়াও আরও কিছু লোক এই মরুভূমির শহরে উপস্থিত। এক দিকে যখন স্মৃতির গোলকধাঁধা থেকে পরশপাথরের সন্ধান পেতে মুকুলবাবু জেরবার, অন্য দিকে বিমল-কুমার ও ডক্টর রুবি রাজস্থানের ডাকাত দলের হামলা থেকে তাঁকে বাঁচাতে ব্যস্ত।

কিছু অবাস্তব ঘটনার সমাবেশ থাকলেও পরিচালক সায়ন্তন ‘সোনার কেল্লায় যকের ধন’-এর চিত্রনাট্যটা বেশ গেঁথেছেন। ছবির দ্বিতীয়ার্ধ ভালই শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎই রুবির সঙ্গে মুকুলবাবুর একটা পূর্বজন্মের সূত্র বেরিয়ে পড়ল আর তেমনি ‘গল্পের গরু গাছে চড়ল’। ছবির বাকি সময়টুকু অনেক টানাহেঁচড়া করেও পরিচালক সেই গরুকে আর গাছ থেকে নামাতে পারলেন না।

ছবির শেষে অনেক প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। শিবমন্দির থেকে ধান্যলক্ষ্মী দরজা অবধি পৌঁছোনোর কি রাস্তা ছিল? বিমল-কুমার, মুকুলবাবু আর রুবি যখন সুড়ঙ্গে ঢুকলেন তখন বাইরে রাত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বেরোতে বেরোতে সকাল হল কী ভাবে? কাঠপুতলি বাবার স্বর্ণকার পরিবারের সঙ্গে কী সম্পর্ক? ওই পরিত্যক্ত গ্রামের কুয়োয় পরশপাথর লাগানো মাত্রই কোত্থেকে জল এল? সেটা যদি বৃষ্টির জলই হয়, তা হলে সেই বৃষ্টিতে মুখ্য চরিত্রেরা ভিজল না কী করে?

এ সবগুলোকেই ‘লুজ় এন্ডস’ বলা যায়। তা সত্ত্বেও ছবিটা মোটের উপর খারাপ লাগে না দেখতে। বাচ্চারা বেশ আনন্দ পাবে। আর বড়রা হয়তো বাড়ি ফিরে আরও একবার সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ দেখার মতলব করবেন!

Film Review Bengali Movie Sayantan Ghosal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy