আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত ‘বছরের বেস্ট ২০২৫’ সন্ধ্যার সূচনা হল উষা উত্থুপের কণ্ঠে শিববন্দনা দিয়ে। সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে এর আগে শোনা গিয়েছে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি গান। এই প্রথম ছক ভাঙলেন তিনি। সংস্কৃতে মহাদেবের বন্দনা করলেন আনন্দবাজার ডট কম আয়োজিত অনুষ্ঠানে।
মঞ্চ অন্ধকার। ক্ষীণ আলো এসে পড়েছে মঞ্চের কেন্দ্রে। প্রেক্ষাগৃহের অন্দরে যেন পিন পতনের নিস্তব্ধতা। উষা উত্থুপ উদাত্ত কণ্ঠে শুরু করলেন, ‘ওঁ নমঃ শিবায়’ বন্দনা। যেন হিমগিরি থেকেই ভেসে আসছে আরাধনা, এমনই মায়া সেই সুরের। সারা প্রেক্ষাগৃহে ছড়িয়ে পড়ছে স্বর্গীয় আবেশ। উষার শিববন্দনা শেষ হতেই ক্রমে এক এক করে প্রেক্ষাগৃহের আলো জ্বলে ওঠে।
পরনে কালো রঙের জমকালো বেনারসি। লম্বা হাতা ব্লাউজ়। মাথায় জুঁইফুলের মালা। মঞ্চে উষা উত্থুপের সঙ্গে উপস্থিত তাঁর দলের আরও কয়েক জন। তাঁদের সুরও মিশে যায় উষার কণ্ঠের সঙ্গে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি গাইলেন শিবস্তোত্র। কিন্তু কেন সংস্কৃত ভাষায় গাইলেন? মঞ্চ থেকেই নেপথ্যের ঘটনা জানালেন উষা। তিনি বলেন, “‘বছরের বেস্ট’-এর অংশ হয়ে উঠতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। একজন নাইটক্লাব গায়িকা ৫৭ বছর ধরে গান গাইছে এবং কলকাতা থেকেই সফর শুরু করেছে। তার জন্য এই অনুষ্ঠানের অংশ হওয়ার অনুভূতি কেমন কল্পনা করতে পারি না। অভীক সরকারের থেকে ফোন পাওয়ার অনুভূতি কেমন তা-ও প্রকাশ করা কঠিন।”
ফোন পাওয়ার পরের অনুভূতি নিজেই জানিয়েছেন উষা উত্থুপ। তিনি বলেছেন, “সে এক ভয়ঙ্কর মুহূর্ত! অভীকবাবু ফোন করে বললেন, ইংরেজি নয়, হিন্দি নয়, বাংলা গান গাইলেও হবে না।” তা হলে কি ইতালীয় ভাষায় গাইতে হবে? প্রশ্ন করেছিলেন উষা। তাঁর কথায়, “অভীকবাবু আমাকে বললেন, আমাকে সংস্কৃত ভাষায় গাইতে হবে।” কিছু ক্ষণ থেমে গিয়ে গায়িকা আবার বললেন, “নাইট ক্লাবে গান করেন মানে তাঁদের ভারতের অসাধারণ সব ভাষায় গান গাইতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা নয়। আমরা এই বিশ্বের নাগরিক— এটা বলতে সত্যিই অসাধারণ লাগে। কিন্তু ‘আমি ভারতীয়’ এটা বলতে আরও অভূতপূর্ব লাগে।”
সংস্কৃত ভাষায় গান গাইতে হবে, এটা শুনে সামান্য ভয়ই পেয়েছিলেন। কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে গানটি গাওয়া অভ্যাস করেন। নিজেই জানালেন উষা।