নতুন করে বিপাকে প্রযোজক মহল।
টেলিপাড়ার দুর্দিনে আরও একবার পাশে দাঁড়াল আর্টিস্ট ফোরাম। সোমবার সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে সমস্যার আশু সমাধানের পাশাপাশি নতুন ধারাবাহিকগুলির কাজ শুরুর পক্ষেও জোরালো আর্জি জানানো হয়েছে। বস্তুত, শনিবার গভীর রাতে ছড়িয়ে পড়া একটি বিজ্ঞপ্তিতে ফের নতুন করে বিপাকে প্রযোজক মহল। নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পুরনো ধারাবাহিকের কাজ চালু থাকলেও মউ স্বাক্ষরিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন ধারাবাহিকের কাজ বন্ধ থাকবে। অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেনমেন্টের নতুন ধারাবাহিক ‘মন ফাগুন’-এর শ্যুটিং সোমবার থেকে ফের শুরু হওয়ার কথা ছিল। নতুন বিজ্ঞপ্তির কোপে পড়ে সেই কাজ স্থগিত। থমকে ম্যাজিক মোমেন্টস-এর ‘ধুলোকণা’, ব্লু’জ এন্টারটেনমেন্টের ‘সর্বজয়া’, সুরিন্দর ফিল্মসের ‘শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত মীরা’-র শ্যুটও।
সোমবারেও এই জট না কাটায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখোমুখি টেলিপাড়ার ভবিষ্যত। সেই জায়গা থেকে আর্টিস্ট ফোরামের এই বিবৃতি প্রকাশ। আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন সংগঠনের যুগ্ম সহকারি সম্পাদক দীগন্ত বাগচী। তা হলে কি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে নতুন ধারাবাহিকের শ্যুটিং? দিগন্তের দাবি, আবারও বৈঠক করে সমস্যার সমাধানের পথ খোঁজা ছাড়া এই মুহূর্তে অন্য কোনও উপায় সম্ভবত নেই। দিগন্তের কথার রেশ রয়েছে সংগঠনের বিবৃতিতেও। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আজ যদি ১৫টি নতুন ধারাবাহিকের কাজ শুরু হয় তা হলে কলাকুশলী ও শিল্পী মিলিয়ে কমপক্ষে হাজার জনের কর্ম সংস্থান হবে। সেই সমস্ত শিল্পী এবং কলাকুশলীদের জীবন তাঁদের পরিবার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার প্রতিবাদ জানাচ্ছে ফোরাম’।
এই সমস্যার রেশ কাটার আগেই কলাকুশলী, অভিনেতা, প্রযোজক এবং সংগঠনগুলির হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল আরও একটি বিজ্ঞপ্তি। সেখানে পুরো ঘটনার নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানহানির দিকটিকেও তুলে ধরা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো দূত হিসেবেই রাজ্য সংস্কৃতি বিভাগের সম্পাদক, বিধায়ক-পরিচালক রাজ চক্রবর্তী এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে ফেডারেশন সহ সমস্ত সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছিল ২০ জুলাইয়ের মধ্যে মউ চূড়ান্ত করে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে তা স্বাক্ষরিত হবে। তত দিন পর্যন্ত বিনা শর্তে চালু থাকবে নতুন-পুরনো ধারাবাহিকের শ্যুটিং। সোমবার রাজ চক্রবর্তীও গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মুখ খোলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তাঁর দাবি, ‘‘এতে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী যেমন অপমানিত একই ভাবে অপমানিত আমরাও, যাঁরা ২৪ জুনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।’’
বিষয়টি কাদের মস্তিষ্কপ্রসূত? কোন সংগঠন এই ঘটনার নেপথ্যে? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগের চেষ্টা করে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস এবং সম্পাদক অপর্ণা ঘটকের সঙ্গে। তাঁরা কেউই ফোনে সাড়া দেননি। এ দিকে সোমবারেও সমাধান না মেলায় প্রযোজক-পরিচালক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তীর গলায় হতাশার সুর। শৈবাল জানিয়েছেন, ‘‘কোথা থেকে কী ভাবে কাজ এগোবে কিছুই বুঝতে পারছি না। ফলে, কোনও সিদ্ধান্তেও আসতে পারছি না। জানি না, আমাদের ভবিষ্যত কী।’’ একই কথা জানিয়েছেন স্নেহাশিসও। জি বাংলায় ‘সর্বজয়া’-র পাশাপাশি কালার্স বাংলাতেও তাঁর নতুন ধারাবাহিক প্রচারিত হওয়ার কথা ছিল। প্রযোজকের কথায়, নতুন উদ্যমে সবাই কাজ শুরু করেছিলেন। আরও এক বার সমস্তটাই অনিশ্চয়তার মুখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy