প্রাচ্যের পোশাকের পাশ্চাত্যকরণই লক্ষ্য ফ্যাশন ডিজ়াইনার রোহন পারিয়ার ও অঙ্কিতা নস্করের। ‘ইস্ট মিটস ওয়েস্ট’ এই ট্যাগলাইন মিলিয়ে দিল দুই পোশাকশিল্পীকে। বরাবরই পোশাকশিল্পী রোহনের পোশাকে ইউরোপীয় প্রতিচ্ছবি ধরা পড়েছে। আর বাংলার ঐতিহ্যকে কী ভাবে বিশ্বের দরবারে গ্রহণযোগ্য করা যায়, সে জন্য শাড়িতে নতুন-নতুন আঙ্গিক এনেছে অঙ্কিতার কারুস্তুতি ব্র্যান্ড। এ বার দু’জনে মিলে তৈরি হল ‘কারুস্তুতি এবং রোহন পারিয়ার’, কেতাদুরস্ত কলকাতার ফ্যাশনের নতুন ঠিকানা।
ইটালির মিলানে ফ্যাশন নিয়ে পড়তে গিয়ে নানা রকমের করসেটের প্রেমে পড়েন রোহন। তাই রোহনের ডিজ়াইনে বরাবর গুরুত্ব পেয়েছে ইউরোপের রাজবংশ। কখনও ফরাসি সাম্রাজ্যের চতুর্দশ লুই এবং তাঁর ভার্সাই প্রাসাদ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নতুন কালেকশন তৈরি করেছেন রোহন। আবার কখনও ইটালির ফ্লোরেন্সের বিলাসবহুল ভাস্কর্যের রূপ-রস ফুটে উঠেছে তাঁর ডিজ়াইনে। সেই সময়ের ফ্লোরেন্সের সংস্কৃতির বর্ণময় জীবনও ধরা পড়েছে তাঁর বুননে। এ দিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেক্সটাইলে ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন অঙ্কিতা। হাতে বোনা শাড়ির সঙ্গে বিশ্ববাসীর পরিচয় করানোর লক্ষ্যেই ফুলিয়ায় নিজের বয়নশিল্প তৈরি করেন তিনি। অঙ্কিতা-রোহনের একসঙ্গে কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে রোহন বললেন, “সময়ের বিবর্তনে এখন করসেট-শাড়ির অ্যাটায়ারই পার্টি থেকে শুরু করে রেড কার্পেট বা বিয়ের রিসেপশনের পোশাক হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছে। করসেটের সঙ্গে শাড়ি মিলিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতির পাশ্চাত্যকরণ আজ ট্রেন্ডিং। এই লক্ষ্যেই একসঙ্গে পথচলা শুরু। ’’
তবে করসেট-শাড়ির যুগলবন্দির শুরুটা হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। কলকাতার একটি আর্ট লাইব্রেরিতে একসঙ্গে প্রদর্শনী করেছিলেন তাঁরা। সেখানে স্থানীয় শিল্পীদের কাজ তুলে আনাই ছিল অঙ্কিতার লক্ষ্য। সে দিক থেকে অনেক অভিনব কারিকুরির সাক্ষী ছিল সেই প্রদর্শনী। অঙ্কিতার কথায়, ‘‘এই হ্যান্ডলুমে যাঁরা পোশাক তৈরি করেন, সকলেই মেয়ে। আসলে শিল্প ও ব্যবসার মধ্যে যোগসূত্রের প্রয়োজনীয়তা থেকেই এই নতুন পদক্ষেপ।’’
রোহন-অঙ্কিতার কাছে বুনন মানে একটা ক্যানভাস আর পোশাক মানে নতুন শিল্প। ‘কারুস্তুতি এবং রোহন পারিয়ার’ কালেকশনে ইউরোপীয় থিম, ফ্লোরাল ডিজ়াইন আর মেটালিক প্যালেট মিলে তৈরি করেছে এক রাজকীয় আবেদন। তবে শুধু জামদানি, ঢাকাই, মসলিন, তাঁত-শাড়ির সঙ্গে নয়, লেহঙ্গা, স্কার্টেরও সঙ্গী হতে পারে করসেট। প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের মিলনের ঐকতান ধরা পড়েছে প্রতিটি বুননেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)