হজমে সমস্যা, ঠিক মতো পেট পরিষ্কার হয় না? চিকিৎসকেরা বলেন, খাবারে ফাইবার থাকা দরকার। কলা, আপেল, পেয়ারা, বেলের মতো ফল পেট সাফ করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা কমায়। টাটকা শাক-সব্জিও পেটের জন্য ভাল। পেটে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা কমলে, হজমে গন্ডগোল হতে পারে। তবে কখনও কখনও পেটের সমস্যার নেপথ্যে থাকতে পারে নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাব। ভিটামিন সরাসরি কোষ্ঠকাঠিন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বটে, তবে এই ধরনের সমস্যার নেপথ্যে যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া থাকে, তার উপর অনেক সময় প্রভাব ফেলে বিশেষ ভিটামিনের ঘাটতি।
আরও পড়ুন:
ভিটামিন ডি: হাড় মজবুত রাখতে, শরীর ভাল রাখতে ভিটামিন ডি জরুরি। এই ভিটামিনের অভাবে কখনও উদ্বেগও হতে পারে। তবে এই ভিটামিনের সঙ্গে গ্যাসট্রোইনটেসটিনাল ট্র্যাক বা খাবার পরিপাকে সহায়ক প্রত্যঙ্গগুলিরও সম্পর্ক রয়েছে। ভিটামিনটির মাত্রা বেশ কমে গেলে তা পরিপাকতন্ত্রের পেশি, স্নায়ুর উপর প্রভাব ফেলে, যার ফেলে হজমক্ষমতা কমতে পারে। তার ফলেই কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
ভিটামিন বি১: থিয়ামিন বা ভিটামিন বি১ বিপাকক্রিয়া এবং সেলুলার ফাংশন ( কোষের মধ্যে সংঘটিত জৈবিক প্রক্রিয়া, যেমন পুষ্টিগ্রহণ, শক্তি উৎপাদন, প্রোটিন তৈরি, কোষ বিভাজন) নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ভিটামিনের অভাব খাদ্য পরিপাককারী উৎসেচকের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। অতীতে গবেষণায় উঠে এসেছে থিয়ামিনের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য, ওজন কমার যোগ রয়েছে। কারণ, হজমে সহায়ক উৎসেচকের মাত্রা কমলে, গ্যাস হতে পারে। তার প্রভাবে পেট পরিষ্কারেও সমস্যা হতে পারে।
ভটামিন সি: কোষের জৈবিক প্রক্রিয়ার উপরে ভিটামিন সি-এর প্রভাব থাকে। ভিটামিনটি অন্ত্রে বিশেষ একটি পরত তৈরিতে সাহায্য করে। মলের জন্য জলের দরকার হয়। সেই জল শোষণে সাহায্য করে এমন পরত। ভিটামিনের অভাব হলে তাই পেটের স্বাস্থ্যও বিগড়ে যেতে পারে। ভিটামিন সি-র অভাব হলে তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতেও পারে।
ভিটামিন বি১২: লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন বি১২। ভিটামিনের অভাব হলে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা সঠিক ভাবে সম্পাদনের নেপথ্যে ভিটামিনটির ভূমিকা থাকে। লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে গেলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাবে, তার প্রভাব পড়বে পরিপাকতন্ত্রেও। যার প্রভাবে হজমক্ষমতা কমতে পারে, দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য।
কোন খাবারে মিলবে ৪ ভিটামিন?
মাশরুম, ডিম, দুধের মতো খাবারে ভিটামিন ডি মেলে। মাংস, মাছ, ডিম খেলে ভিটামিন বি১২—এর অভাব পূরণ হবে। ভিটামিন সি-র জোগানের জন্য পাতে রাখা দরকার, আমলকি, ক্যাপসিকাম, বিভিন্ন রকম লেবু। মাছ, বাদাম, বিভিন্ন বিন জাতীয় খাবারে এই ভিটামিন বি১ মিলবে। দৈনন্দিন খাবারে শাকসব্জি, ফল, দুধ, ডিম, মাছ, মাংস মিশিয়ে রাখলেই পেটের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য দুই-ই এড়ানো সম্ভব।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার এবং ভিটামিন থাকার পরেও পেটের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।