মেদ কমানোর জন্য জিমে যাবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। অথচ জিমে যেতে গেলেই রাজ্যের অনীহা। কারও সাতসকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে ভেবে আলস্য আসে তো কেউ ভাবেন, দিনের অনেকটা সময় জিমে যেতে আসতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সময়ের টানাটানি যাঁদের, অথচ যাঁরা ফিটনেসের সঙ্গেও আপস করতে চাইছেন না, তাঁদের জন্য বাড়িতেই কিছু সহজ ব্যায়াম করার পরামর্শ দিচ্ছেন আমেরিকার ফিটনেস প্রশিক্ষক ক্যাসি হো ভিন। তিনি বলছেন, যাঁরা অতিরিক্ত ব্যস্ত বা বাড়ির কাজ গুছোতে গুছোতেই নিজের দিকে তাকানোর সময় পান না, তাঁরা সারা দিনের মধ্যে স্রেফ ২০ মিনিট বার করুন। ওই ২০ মিনিটের শরীরচর্চাতেই কয়েক মাসের মধ্যে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে সুন্দর চেহারা ফিরে পাবেন। তার জন্য কয়েকটি বিশেষ ব্যায়াম করতে বলছেন ক্যাথি।
১। হিল রেইজ়
সোজা হয়ে দাঁড়ান। দু’টি পায়ের পাতার মধ্যে এক হাতের মতো দূরত্ব থাকবে। এ বার হাঁটু সোজা রেখে ধীরে ধীরে শুধু গোড়ালি দু’টি মেঝে থেকে তুলুন। শরীরের পুরো ওজন থাকবে পায়ের আঙুলের উপর। তার পরে আবার ধীরে ধীরে গোড়ালি নামিয়ে আনুন। এ ভাবে অন্তত ২০ বার করুন। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কিছু ধরে দাঁড়াতে পারেন। পরে দু’টি গোড়ালি তোলার বদলে একটি গোড়ালি দিয়েও অভ্যাস করতে পারেন।
ব্যাপারটা হবে সাধারণ পুশ-আপের মতোই। শুধু মেঝেতে উপুড় হওয়ার বদলে দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে করতে হবে। ছবি: গেটি ইমেজ।
২। ওয়াল পুশ-আপস
দেওয়ালের সামনে কাঁধ সোজা করে দাঁড়ান। এ বার মেঝের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে হাত দু’টো সামনের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে হাতের পাতাগুলো দেওয়ালে রেখে ভর দিন। কনুই ভাঁজ করে ধীরে ধীরে শরীরকে দেওয়ালের দিকে ঠেলে দিন, আবার পিছনের দিকে টেনে আনুন। ব্যাপারটা হবে সাধারণ পুশ-আপের মতোই। শুধু মেঝেতে উপুড় হওয়ার বদলে দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে করতে হবে। ১০-১৫ বার এই ব্যায়ামটি করলে শরীরের উপরের অংশের পেশি মজবুত হবে। পিঠ এবং কাঁধের নীচের অংশের বাড়তি মেদও ঝরবে।
৩। সিট টু স্ট্যান্ড
এই ব্যায়াম করার জন্য একটি মজবুত চেয়ার লাগবে। তাতে এমন ভাবে বসুন, যাতে পুরো পায়ের পাতা মাটিতে ঠেকে থাকে। একই সঙ্গে কোমর থেকে ঊরু পর্যন্ত পা যতটা ছড়ানো যায়, ততটা ছড়িয়ে বসুন। এই ভাবে বসার পরে সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে উঠে পড়ুন। আবার একই ভাবে বসে পড়ুন। এ ভাবে ১০-১৫ বার ওঠা বসা করুন। ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে গেলে হাতের সাহায্য ছাড়া ওঠা-বসা অভ্যাস করুন। এটি কোর মাসল অর্থাৎ কোমর, তলপেট, নিতম্বের পেশি সুগঠিত করতে সাহায্য করবে।
স্প্লিট স্কোয়াট করতে হবে দু’টি পা দু’ ভাবে ভাজ করে।
৪। স্প্লিট স্কোয়াট
হাঁটুর উচ্চতার একটি বেঞ্চ বা টুল বা পা রাখার জায়গা লাগবে। তাতে একটি পা ভাঁজ করে বেঞ্চের উপর রেখে অন্য পা হাঁটু ভাঁজ করে সামনে রাখতে হবে। এই ব্যায়ামে পায়ের সামনের পেশির জোর বৃদ্ধি করে। কোয়াড্রাসেপসের জোর বাড়ানোর পাশাপাশি এটি কোর মাসলকেও সুগঠিত করতে পারে। এটিও মেদ ঝরাতে উপযোগী।
৫। গ্লুট ব্রিজেস
মাটিতে শুয়ে হাত শরীরের দু’পাশে রেখে পায়ের পাতাগুলিকে মাটিতে রেখে হাঁটু থেকে পা ভাঁজ করুন। এ বার গোড়ালিতে চাপ দিয়ে এবং দু’টি হাঁটুর মধ্যে এক হাতের দূরত্ব বজায় রেখে কোমর উপরের দিকে তুলুন। তার পরে আবার নামিয়ে আনুন। মনে রাখবেন, এই আসন করার সময় যেন পিঠ থেকে হাঁটু পর্যন্ত একটি সরলরেখা তৈরি হয়। শরীর বেঁকেচুরে থাকলে উল্টো ফল হতে পারে। গ্লুট ব্রিজেস ১৫ বার করে বিশ্রাম নিন। এই ব্যায়ামেও কোর মাসল সুগঠিত হবে। যা শরীরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী।