ডায়াবিটিস ধরা পড়েনি, কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ে চিন্তায়? চিকিৎসকেরা বলছেন, সতর্ক হওয়া দরকার প্রি-ডায়াবেটিকদেরও। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের পূর্বলক্ষণ থাকলে তাকে ‘প্রি ডায়াবিটিক’ বলে। রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে শর্করার মাত্রা বেশি কিন্তু খুব বেশি নয়— এমন অনেকেরই থাকে।
অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ফলে ঘুম কম হওয়া, অবসাদ, উদ্বেগ জনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে থাকে। শরীরের সঙ্গে এই অনিয়মের ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করতে থাকে। এই অবস্থাতেই মূলত ডায়াবিটিসের পূর্বক্ষণ দেখা দেয়।
ডায়াবেটিকদের পাশাপাশি প্রি-ডায়াবেটিকদের জীবনেও নিয়ন্ত্রণ জরুরি। চিনি যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে কৃত্রিম শর্করা বাদ পড়লেও, প্রাকৃতিক মিষ্টত্বে অসুবিধা নেই। বরং কিছু কিছু গবেষণা বলছে, খাওয়ার পরে কয়েক ধরনের ফল খেলে বরং রক্তে শর্করার মাত্রা বশে থাকতে পারে। তবে অবশ্যই সেই সব ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়া দরকার। ফলে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বাড়তে দেয় না। তা ছাড়া, ভিটামিন এবং খনিজও শরীরের পক্ষে দরকারি।
আরও পড়ুন:
নাসপাতি: ফাইবারে পূর্ণ ফলটি খেতে বেশ মিষ্টি। ফলটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৩০-এর কাছাকাছি। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফোলেট— যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকে পেকটিন নামক ফাইবার, যা পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। খুব সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও মেলে ফলটিতে।
কমলালেবু: কমলালেবু, নিশ্চিন্তে খেতে পারেন ডায়াবেটক বা প্রি-ডায়াবেটিকেরা। ভিটামিন সি, ফাইবার এবং ফ্ল্যাভোনয়েডে পূর্ণ ফলটি। ফলের ফাইবার এ ক্ষেত্রে ছাঁকনির কাজ করে। রক্তে শর্করা দ্রুত মিশতে দেয় না। তবে ফলের রস নয়, খেতে হবে ফলই। কারণ, রসে ফাইবার বাদ চলে যায়।
আলুবোখরা: এই ফলটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৩৫। টক-মিষ্টি স্বাদের ফলটিতে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন। ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর আলুবোখরা। ফলটি খোসা-সহ খাওয়া হয়। খোসায় থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি সাহায্য করে।
আপেল: বছরভরই আপেল পাওয়া যায়। এই ফলটি নিশ্চিন্তে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় জুড়তে পারেন সকলে। ফাইবারে পরিপূর্ণ আপেল পেট পরিষ্কারেও সাহায্য করে। এতে থাকা পেকটিন রক্তে দ্রুতগতিতে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জ়িঙ্ক, ভিটামিন এ, ই, সি মেলে এতে। অত্যন্ত পুষ্টিকর এই ফল।
স্ট্রবেরি: খেতে পারেন স্ট্রবেরিও। টক-মিষ্টি স্বাদের স্ট্রবেরিতেও বেশ কিছুটা পরিমাণে ফাইবার মেলে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে রয়েছে অ্যান্থোসায়ানিন-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।