Advertisement
E-Paper

নেতাজির জন্মস্থান, পাহাড় ঘুরে চলুন সাগরে, পুজোর পাঁচ দিনে সাজিয়ে ফেলুন বৈচিত্রময় সফরসূচি

পুজোর ছুটিতে সফরের জন্য ট্রেন, বাস, বিমানের টিকিট কাটা হয়নি? বেড়ানোর সঙ্গী হতে পারে চারচাকাই। আনন্দবাজার ডট কম-এ থাকছে সড়কপথে ভ্রমণের চেনা-অচেনা গন্তব্যের হদিস।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৪
সাগর থেকে পাহাড়— ইতিহাস এবং ভূগোল সবই এক সফরে।

সাগর থেকে পাহাড়— ইতিহাস এবং ভূগোল সবই এক সফরে। ছবি: সংগৃহীত।

কারও পছন্দ পাহাড়, কারও আবার সমুদ্র, কেউ চান বেড়াতে গিয়ে আরাম করে ঘুমোতে আর পায়ে হেঁটে খানিক ঘোরাঘুরি করতে। কারও আবার সফরের প্রতিটি মুহূর্ত বেড়িয়ে-ঘুরে উসুল করে নেওয়াটাই লক্ষ্য।

পরিবার এক, মানুষ আলাদা। শখও আলাদা। এত কিছুর সমন্বয় তো একবারে হয় না, সেটাই ভাবছেন নিশ্চই। এক বার গিন্নির পছন্দ তার পরের বার কর্তার— এ ভাবেই কি সফর সাজান?

তা হলে পুজোর ছুটি উপভোগ করতে পারেন অন্য ভাবেও। কলকাতা থেকে দিন পাঁচেকে এমন ভাবে ঘুরে ফেলুন, যেখানে রয়েছে ইতিহাস, পথে যেতে পাবেন পাহাড় এবং ভূগোলে পড়া জায়গা চাক্ষুষ করার সুযোগ। সব শেষে যেখান পৌঁছোবেন, সেখানে থাকবে বিশ্রাম করার অখণ্ড অবসর। ঠিক ভাবে পরিকল্পনা করলে পাঁচ দিনই যথেষ্ট।

ভ্রমণ যখন চারচাকায়, সময় তখন এক্কেবারে নিজের বশে। ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার ভয় নেই, চা-তেষ্টা পেলেই দাঁড়ানো যায়, ঘুম পেলে বিরাম নেওয়া যায়। গাড়ি করে সফরের মজা ঠিক এইখানেই।

যাত্রাপথের সৌন্দর্য। চিল্কার রূপ এ ভাবে ধরা দেবে নজরমিনার থেকে।

যাত্রাপথের সৌন্দর্য। চিল্কার রূপ এ ভাবে ধরা দেবে নজরমিনার থেকে। ছবি: সংগৃহীত।

প্রথম দিন চলুন কটক। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থানে দেখার জায়গা মোটেই কম নয়। এক রাত সেখানে থেকে চিলিকা নজরমিনার হয়ে চলুন গোপালপুর।

কলকাতা থেকে খড়্গপুর, বালেশ্বর পার করে ভদ্রক হয়ে কটক। দূরত্ব ৪২০ কিলোমিটার। খুব ভোরে যাত্রা শুরু করলে যানজট তেমন থাকবে না। পথে বালেশ্বরে এক বার দাঁড়ালে এবং বার দুয়েক চা–বিরতি নিলেও পৌঁছতে পারবেন বিকেলের আগেই।

কটকে দর্শনীয় স্থান অনেক। শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘নেতাজি বার্থ প্লেস মিউজ়িয়াম’। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান, তাঁর বাড়ি, ব্যবহারের জিনিস, স্বাধানীতা সংগ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত নথি রয়েছে এখানে। মহনদীর উপর দিয়ে রয়েছে সেতু। ধবলেশ্বর মন্দির যাওয়ার পথে সেই সৌন্দর্য দারুণ উপভোগ করা যায়।

নেতাজির নামাঙ্কিত মিউজ়িয়াম।

নেতাজির নামাঙ্কিত মিউজ়িয়াম। ছবি: সংগৃহীত।

দুপুরের মধ্যে কটক পৌঁছোলে কাছেপিঠের কয়েকটি জায়গা দেখে নিতে পারেন। পরের দিন সকালে চলুন বারবাটী দুর্গ। ৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে সোমবংশীয় রাজা মার্কট কেশরী দুর্গটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। পরিখা বেষ্টিত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দুর্গটির অবস্থান। সকাল বেলাতেই দুর্গটি ঘুরে নিন। চণ্ডী মন্দির, ওড়িশা স্টেট মিউজ়িয়াম–সহ বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে এখানে। যতটা সম্ভব ঘুরে নিন।

তার পর চলুন চিলিকা নজরমিনারের উদ্দেশ্যে। কটক থেকে ভুবনেশ্বর, খাল্লিকোটের পথ ধরে যেতে পারেন। দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটার। খল্লিকোটে দেখে নিন নির্মলঝর মন্দির এবং জগন্নাথ মন্দির। ছোট ছোট পাহাড় সঙ্গ দেবে এই পথে। চিলিকার যত কাছাকাছি পৌঁছবেন পাহাড়ের সান্নিধ্য বাড়বে। এখানে একটি নজরমিনার থেকে চিলিকা উপহ্রদের দারুণ ভিউ পাওয়া যায়। সেখানে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে সোজা চলুন গোপালপুর। দূরত্ব ৫৪ কিলোমিটার।

গোপালপুরের সমুদ্রসৈকত।

গোপালপুরের সমুদ্রসৈকত। ছবি:সংগৃহীত।

দ্বিতীয় দিন বিকাল বা সন্ধ্যায় গোপালপুর পৌঁছে সৈকতে ঘুরে বেড়ান। পুরীর মতোই বিস্তীর্ণ এখানকার সৈকত। তবে ভিড়ভাট্টা তুলনামূলক কম। এখানে সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার স্বাদ নিন। পরের দিন ঘুরে নিন শহরটা। কিংবা সকাল বেলা শুধু সৈকত ভ্রমণ এবং সমুদ্রস্নানের জন্য বরাদ্দ রাখতে পারেন। ঘুরে নিন বাতিঘর। আশপাশে কয়েকটি দর্শনীয় স্থান আছে। দুপুরের দিকে বেরিয়ে পড়তে পারেন তারাতারিণী মন্দির দেখতে। পাহাড়ের মাথায় মন্দিরটি ভারি সুন্দর। উপরে ওঠার জন্য রোপওয়ে রয়েছে। বিকালের দিকে মন্দির ঘুরতে বেশি ভাল লাগবে। পরের দিন রম্ভা-চিলিকা ঘুরে নেওয়া যায়। চিলিকার বুকে য্ন্ত্রচালিত নৌকায় ভেসে পড়া এবং ঘোরা দারুণ অভিজ্ঞতা হবে। কিংবা চলে যেতে পারেন জিরাং মনাস্ট্রিতেও।পূর্বঘাট পাহাড়ের গায়েই চন্দ্রগিরি। সেখানেই বৌদ্ধদের উপাসনা স্থল পদ্মসম্ভব মহাবিহার মনাস্ট্রি। লোকজন একে জিরাং মনাস্ট্রি নামেও জানেন। শোনা যায়, চিন তিব্বতের দখল নেওয়ার পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে তিব্বতিরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারই মধ্যে একটি জিরাং। এখন এই স্থানে তিব্বতিদের বাস। ওড়িশার ‘মিনি তিব্বত’ নামে পরিচিত জায়গাটি। পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় মনাস্ট্রি বলে পরিচিত জিরাং। টিলার মতো ঘন সবুজ পাহাড়ের গায়েই মনাস্ট্রি। পাশেই সুসজ্জিত হ্রদ।

সফরসূচিতে জুড়তে পারেন তারাতারিণী মন্দির।

সফরসূচিতে জুড়তে পারেন তারাতারিণী মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।

পঞ্চম দিনে ফেরার পালা। খুব ভোরে যাত্রা শুরু করলে ঘণ্টা তিনেকে পৌঁছে যাবেন ভুবনেশ্বর শহরে। ফেরার সময় লিঙ্গরাজ মন্দির, উদয়গিরি, খণ্ডগিরি ঘুরে নিতে পারেন। ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতা দূরত্ব ৪৪২ কিলোমিটার। ফিরতে মোটামুটি ৯ ঘণ্টা সময় লাগবে।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে কটক হয়ে গোপালপুর। কলকাতা থেকে কটকের দূরত্ব ৪২০ কিলোমিটার এবং গোপালপুরের দূরত্ব ৬১১ কিলোমিটার।

কোথায় থাকবেন?

কটক শহরে অনেক হোটেল রয়েছে। গোপালপুরে সৈকতেই হোটেল মিলবে। এ ছাড়া, ওড়িশা সরকারের পান্থনিবাস আছে থাকার জন্য।

Durga Puja 2025 Odisha Cuttack Gopalpur Durga Puja Travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy