শরীর সুস্থ রাখার জন্য অতি জরুরি কয়েকটি কাজ করে কিডনি। যার মধ্যে অন্যতম শরীরকে বিষাক্ত পদার্থ এবং বর্জ্যমুক্ত করা, শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রাখা, রক্তে লোহিত কণিকা তৈরিতে সাহায্যকারী হরমোন নিঃসরণ এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা।
কিডনির প্রত্যেকটি কাজের একটিও যদি যথাযথ ভাবে না হয়, তবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে শরীর। যার চিকিৎসা সঠিক সময়ে না হলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে! স্বাভাবিক ভাবেই কিডনির স্বাস্থ্যের ব্যাপারে একটু বেশি সতর্ক থাকতে বলেন চিকিৎসকেরা। সময় ধরে জল খাওয়া থেকে শুরু করে নিয়মিত ব্যবধানে রক্তের পরীক্ষা করিয়ে কিডনির স্বাস্থ্যে নজর রাখা, ছোটখাটো উপসর্গও এড়িয়ে না যেতে বলেন তাঁরা। কিন্তু সেই সব উপসর্গ কী কী? শরীরে ঠিক কোন কোন পরিবর্তন হলে সতর্ক হবেন বা বুঝবেন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া উচিত?
ঘন ঘন শৌচাগারে যেতে হচ্ছে?

কিডনির সমস্যার প্রথম উপসর্গ বোঝা যায় প্রস্রাবে। খেয়াল রাখুন—
১। রাতের দিকে কি বেশি প্রস্রাব হচ্ছে?
২। অথবা সাধারণত দিনে যত বার প্রস্রাব করেন, তার চেয়ে কম হচ্ছে কি?
৩। প্রস্রাব যদি ফেনার মতো হয় তবে বুঝতে হবে কিডনি কাজ না করায় শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে যাচ্ছে।
৪। প্রস্রাবে রক্ত থাকছে কি না। সে ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রং কালচে হবে বা প্রস্রাবে গোলাপি ভাব দেখা যাবে।
শরীরের কোনও কোনও অংশ ফুলছে কি?

কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীর থেকে বাড়তি নুন এবং জল বার করতে পারে না। ফলে শরীরে জল জমতে থাকে। কোনও কোনও অংশ ফুলে যায়। যদি দেখেন পায়ের পাতা, পায়ের গোছ এবং গোড়ালির পাশের অংশ কিংবা চোখের চারপাশে ফোলা ভাব রয়েছে, তবে তা কিডনির সমস্যার কারণেও হতে পারে।
অকারণ ক্লান্তিবোধ?

কিডনির সমস্যা হলে শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমতে থাকে। ফলে রক্তে বাড়তে থাকে দূষণ। কিডনি আক্রান্ত হলে যে লোহিত কণিকা রক্তে অক্সিজেন সঞ্চালন করে, তার কাজও ব্যাহত হয়। ফলে ক্লান্তিবোধ, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে যা বিশ্রাম নেওয়ার পরও কাটতে চায় না।
শরীরে যত্রতত্র পেশির ব্যথা হচ্ছে?

কিডনি ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজের ভারসাম্য বজায় রাখে। যা নষ্ট হলে পেশিতে প্রভাব পড়ে। পেশিতে যন্ত্রণা হতে পারে।
শ্বাস নিতে অসুবিধা, বুকে ব্যথা?

যদি কিডনির সমস্যা গুরুতর হয়, তবে তা থেকে শ্বাসকষ্টও হতে পারে। কারণ কিডনির কাজ ব্যাহত হলে জল জমতে পারে ফুসফুসেও। তা থেকে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি বুকে ব্যথা বা বুকে চাপ লাগার মতো সমস্যাও হতে পারে।
এ ছাড়াও কিডনির সমস্যা হলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, ত্বকে খসখসে ভাব বা চুলকানির মতো অস্বস্তি হতে পারে, ক্রিম বা লোশন লাগিয়েও যার সমাধান হবে না। খাবারে অনীহাও আসতে পারে কিডনি ভাল না থাকলে। তবে উপরের পাঁচটি উপসর্গ দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে।