ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। অর্থাৎ, দিনের একটা দীর্ঘ সময় উপোস করে অল্প সময়ের মধ্যে খাওয়াদাওয়া করা। রোগা হওয়ার এই উপায় বছর পাঁচ-ছয়েক হল স্বাস্থ্যসচেতনদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে ইদানীং বলিউডের তারকারা এই খাওয়াদাওয়ার বা বলা ভাল না খাওয়াদাওয়ার পদ্ধতির একটু বেশিই গুণগান করছেন। সাম্প্রতিক অতীতে বহু বলিউড তারকাই তাঁদের চেহারায় আমূল পরিবর্তন আনার নেপথ্যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। ফলে তা সাধারণ মানুষকেও প্রভাবিত করতে শুরু করেছে।
দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা নাছোড় মেদের বোঝা বয়ে ক্লান্ত, তাঁরা স্বাস্থ্যোদ্ধারের নতুন উপায় হিসাবে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বেছে নিচ্ছেন। কারণ আপাতদৃষ্টিতে পদ্ধতিটি সহজ মনে হচ্ছে। অন্তত শরীরচর্চা করে, খাবারে কড়া নিয়ন্ত্রণ টেনে রোগা হওয়ার থেকে সহজ তো বটেই। করার মধ্যে কেবল কিছু ক্ষণ খিদের কথা ভুলে থাকতে হবে। বাকি সময়ে খাওয়াদাওয়ার খুব বেশে কড়াকড়ি নেই বলেই মনে করছেন তাঁরা। কিন্তু বিষয়টি কি তা-ই?
যাঁরা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার কথা ভাবছেন, তাঁরা আগে কয়েকটি বিষয় জেনে নিন—

১। ছোট লক্ষ্য
প্রথমেই বড় লক্ষ্য স্থির করবেন না। ছোট ছোট পদক্ষেপে এগোন। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে সাধারণত দিনের খাওয়ার সময় এবং উপোসের সময়ের অনুপাত রাখা হয়— ১০:১৪ অথবা ৮:১৬। শুরুর দিকে ১২:১২ ঘণ্টার হিসাবেও চলেন অনেকে। তবে প্রথম কয়েক দিন বড় লক্ষ্যের পিছনে না ছুটে শুধুই ৮-১০ ঘণ্টা উপোস করে দেখুন। ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে নিতে হবে।
২। জল খান
এই উপোস নির্জলা নয়। তাই খাবার না খেলেও জল খাওয়া যাবে। আর জল খাওয়া জরুরিও। তা ছাড়া জল খিদেকেও ভুলিয়ে রাখে। তাই সারা দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস (প্রতি গ্লাসে ৩০০ মিলিলিটারের হিসাবে) জল খান।
৩। পুষ্টিকর খাবার
খাবার জন্য নির্দিষ্ট যে সময়, সেই সময়ে পুষ্টিকর অর্থাৎ প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া ফাইবার আছে এমন খাবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটজাতীয় খাবার এবং ফলও রাখুন দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়।

৪। পরিকল্পনা করুন
খাবার সময়ে কী কী খাবেন তা আগে থেকে পরিকল্পনা করে নিন। দরকার হলে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যান। বা আগে থেকে বন্দোবস্ত করে রাখুন। যাতে খিদে পেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছে কাটিয়ে উঠতে পারেন।
৫। কোনও একরকম শরীরচর্চা করুন
সময় করে ব্যায়াম করা বা যোগাসন করতে না পারলেও যে কোনও ধরনের শরীরচর্চা করুন।দিনে আধ ঘণ্টা হাঁটলেও চলবে।
৬। ঘুম
ওজন ঝরাতে গিয়ে ঘুমের কথা ভুলে গেলে চলবে না। প্রতি দিন নিয়ম করে অন্তত ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমোন। তার প্রভাবও দেখতে পাবেন শরীরে।
৭। ডায়েরি
কী ভাবে উন্নতি করছেন, কতটা পরিবর্তন আসছে শরীরে এই সব কিছু লিখে রাখুন। রোজ রাতে এটি লেখার অভ্যাস তৈরি করলে সারা দিনের রুটিন বজায় রাখার প্রেরণা পাবেন।