বয়স ৬০ পেরিয়েছে। তবে মিলিন্দ সোমনের চেহারা ও ফিটনেস দেখে বোঝার উপায় নেই। চুল, দাড়িতে পাক ধরলেও চিরযুবক যেন! ভারতের এই সুপারমডেল তাঁর সুঠাম, মেদহীন, পেশিবহুল চেহারায় সকলের চোখেই ঈর্ষণীয়। মহিলাদের তো বটেই, বহু পুরুষদের কাছেও মিলিন্দ অনুপ্রেরণা। শুটিং হোক বা ভ্রমণের মাঝে, ফিটনেসের সঙ্গে কখনও আপস করেন না মিলিন্দ। ফিটনেস ধরে রাখতে নিয়ম করে ‘রানিং’ করেন তিনি। ফিট থাকতে দৌড়োন বটে, তবে খালি পায়ে।
কেন খালি পায়ে ছোটেন মিলিন্দ, সেই প্রশ্ন প্রায়ই অনুরাগীদের মাথায় ঘোরে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মিলিন্দ জানিয়েছেন কেন তিনি খালি পায়ে দৌড়োন। মিলিন্দ বলেন, ‘‘১৪-১৫ বছর আগে এক দিন আমি লোনাভলায় দৌড়োচ্ছিলাম। প্রায় ২০ কিলোমিটার দৌড়োনোর পর খানিকটা হাঁপিয়ে উঠি। জুতো খুলে খানিক ক্ষণ বিশ্রাম করা পর বেশ চাঙ্গা অনুভব করি। তার পর জুতো ছাড়াই দৌড়োতে শুরু করি। তার পর বুঝতে পারি খালি পায়ে ছুটলে অনেক বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারছি আমি।’’
ফিটনেস ধরে রাখতে নিয়ম করে ‘রানিং’ করেন মিলিন্দ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
মিলিন্দের মতে, এই ছোট বদলের পর থেকেই তিনি শরীরে বেশ কিছু বদল লক্ষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘খালি পায়ে দৌড়োনো শুরু করার পর আমার দৌড়োনোর পদ্ধতিও উন্নত হয়েছে। আমার শারীরিক ভঙ্গিতেও বদল এসেছে। শরীরের ভারসাম্য ঠিক হয়েছে। দৌড়োনোর সময় পা মাটিকে স্পর্শ করে বলে আমার অনুভবশক্তিও উন্নত হয়েছে।’’ অতিরিক্ত গরম হলে কিংবা খুব ঠান্ডায় বরফের উপর দৌড়োলে মিলিন্দ জুতো পরেন।
খালি পায়ে দৌড়োলে কী কী উপকার মিলবে?
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রানিং শু পরে দৌড়োলে হাঁটুতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। কিন্তু খালি পায়ে দৌড়োলে সেই আশঙ্কা থাকে না। এ ছাড়া খালি পায়ে দৌড়োলে পায়ের পেশি মজবুত হয়। জুতো পরে দৌড়োলে পায়ে সেই গ্রিপ থাকে না। দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই পন্থা। জুতো পরে দৌড়োলে অনেক সময়ে দেহের ভঙ্গি সঠিক হয় না। অনেকের কোমরে ব্যথা লাগে। খালি পায়ে দৌড়োলে তেমনটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
খালি পায়ে দৌড়োলে কি কোনও সমস্যাই হয় না?
চিকিৎসকেরা বলছেন, হাঁটুর চাপ কমলেও খালি পায়ে দৌড়োলে কিন্তু গোড়ালিতে চোট লাগতে পারে। কাফ মাস্ল বা পায়ের উপরের দিকের পেশিতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে প্রদাহজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস নেই। অথচ হঠাৎ দৌড়োতে শুরু করলেন, সে ক্ষেত্রে পায়ের গোছে বা অস্থিসন্ধিতে চোট লাগার আশঙ্কা থাকে। যাঁদের ফ্ল্যাটফুটের সমস্যা আছে, তাঁদের একেবারেই খালি পায়ে হাঁটা বা দৌড়োনো উচিত নয়। তাতে সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি থাকলে খালি পায়ে দৌড়োনোর কথা মাথায় না আনাই ভাল।