গরম সেঁক, গরম পানীয় খেয়ে যদি কোনও মতে ঋতুস্রাবজনিত কষ্ট বশে রাখা যায়!
নিরুপায় হয়ে ব্যথা কমানোর ওষুধ খাওয়ার আগে পর্যন্ত এই চেষ্টা জারি থাকে। ঋতুস্রাব চলাকালীন শারীরিক অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে ঘন ঘন কফির কাপে চুমুক দেন অনেকে। তার ফলে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে, জানেন কি? চিকিৎসকেরা বলছেন, মাসের এই বিশেষ সময়টাতে মহিলাদের উদ্বেগ, মনমেজাজ বিগড়ে থাকা, পায়ের পেশিতে টান ধরার মতো নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। ঋতুস্রাব চলাকালীন কাজে অনীহা, একাগ্রতার অভাব কিংবা ক্লান্তি কাটাতে ক্যাফিন সহায়তা করলেও পেটফাঁপা কিংবা পেটে যন্ত্রণার মতো অস্বস্তি কিন্তু বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
২০২০ সালে ‘অবস্টেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজি সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, শরীরে অতিরিক্ত ক্যাফিন প্রবেশ করলে ‘ডিজ়মেনোরিয়া’ বা ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটের যন্ত্রণা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করতে পারে। এ প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ ইন্দ্রাণী ঘোষের বক্তব্য, “কফিতে থাকা ক্যাফিন প্রদাহজনিত সমস্যাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে যন্ত্রণা সাঙ্ঘাতিক আকার নেয়। যে হেতু কফি ‘ডায়রিউটিক’ গোত্রের পানীয়, তাই ঋতুস্রাব চলাকালীন এই পানীয়ে অতিরিক্ত খেলে মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়। মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে জলের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বেশ কিছু খনিজও বেরিয়ে যায়। তখন শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। ফলে শারীরিক অস্বস্তি আরও বেড়ে যেতে পারে।”
আরও পড়ুন:
শুধু পেটে যন্ত্রণা নয়, ঋতুস্রাবের সঙ্গে মাইগ্রেন কিংবা মাথাধরার মতো বেশ কিছু সমস্যার যোগ রয়েছে। তাই দুধ-চিনি ছাড়া, উষ্ণ কফিতে চুমুক দিয়ে অনেকেই আরাম বোধ করেন। একইসঙ্গে, এই কফি শরীরে কর্টিসল (স্ট্রেস) হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধিতে উদ্দীপক হিসাবে কাজ করে। ফলে ঋতুস্রাবজনিত কষ্ট লাগামছাড়া হয়ে উঠতে পারে। তাই পুষ্টিবিদদের মত, একান্ত অসুবিধা না হলে অন্তত মাসের এই কয়েকটি দিন কফির বদলে ভেষজ চা কিংবা আদা চায়ে চুমুক দেওয়া যেতে পারে। হাতের কাছে সে সব কিছু না থাকলে ঈষদুষ্ণ জল খেলেও কাজ দেবে।