Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Milk from plant

উদ্ভিদজাত দুধের উপকারিতা

দুধ খেয়ে হজম করার সমস্যায় নিত্য ভোগেন অনেকে। ল্যাকটোজ় ফ্রি হওয়ায় উদ্ভিদজাত দুধ ও দুধের প্রডাক্ট বেছে নিতে পারেন তাঁরা।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ১০:০৪
Share: Save:

দুধ খেতে গিয়ে অ্যালার্জি, সহ্য করতে না পারা, হজমের অসুবিধে ও আরও নানাবিধ কারণে অনেকেই দুধ বাদ রাখেন খাদ্যতালিকা থেকে। কম বয়স থেকেই অনেকে ল্যাকটোজ় ইনটলারেন্ট হয়ে থাকেন, যাঁরা অনেক সময় সারা জীবনই দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে পারেন না। এঁদের ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় হতে পারে প্লান্টবেসড মিল্ক প্রডাক্ট, অর্থাৎ উদ্ভিদজাত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। মূলত নানা ধরনের বাদাম, ওটস, নারকেল ও সয়াবিন থেকে এই দুধ পাওয়া যায়। আমন্ড মিল্ক, কোকোনাট মিল্ক, ওট মিল্ক এবং সয় মিল্ক সবচেয়ে পরিচিত এগুলির মধ্যে। এর গুণাগুণ অবশ্যই প্রাণিজ দুধ, অর্থাৎ গরু বা ছাগলের দুধের চেয়ে আলাদা। প্রোটিনও দ্বিতীয় শ্রেণির। তবুও প্রাণিজ দুধের বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে এই দুধ। এর গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মুশকিল আসান

দুধ খেয়ে হজম করার সমস্যায় নিত্য ভোগেন অনেকে। ল্যাকটোজ় ফ্রি হওয়ায় উদ্ভিদজাত দুধ ও দুধের প্রডাক্ট বেছে নিতে পারেন তাঁরা। এটি শুধু সহজপাচ্য নয়, ফ্যাটের পরিমাণ কম হওয়ায় ওজন কমানোর ডায়েটে রাখার পক্ষে আদর্শ। ভিগান বা নিরামিষাশীদের প্রোটিনের জোগান দিতেও সহায়ক এই দুধ। গরুর দুধের সঙ্গে তুলনীয় নয়, কিন্তু পুষ্টিগত দিক থেকে প্রাণিজ দুধের সবচেয়ে কাছাকাছি সয় মিল্ক। সয় মিল্কে ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি টুয়েলভ, আয়রন থাকে। ওটস বা অন্য সিড-বেসড দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এতটাই ফাইবারসমৃদ্ধ হয়, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যায় খুব ভাল ফল দিতে পারে। লো-ফ্যাট ডায়েট মেনে চলতে হয় যাঁদের, তাঁদের পক্ষেও মুশকিল আসান এই উদ্ভিদজাত দুধ। কারণ বেশির ভাগ প্লান্টবেসড দুধেই ফ্যাটের পরিমাণ বেশ কম। হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা গরুর দুধ এড়িয়ে চললেও অনায়াসে খেতে পারেন সয় মিল্ক বা তার থেকে তৈরি করা টোফু।

প্রাণিজ দুধের পরিবর্ত

দুধ প্রধানত প্রোটিনের জোগান দেয়। শরীরকে নানা সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য জরুরি অ্যামিনো অ্যাসিডের উৎসও হল গরু ও অন্য প্রাণীর দুধ। সে ক্ষেত্রে উদ্ভিদজাত দুধে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন থাকায় সব সময়েই তা গরু বা ছাগলের দুধের চেয়ে পুষ্টিগত গুণাগুণে পিছিয়ে থাকবে। পুরোপুরি বিকল্প বা সাবস্টিটিউট হয়ে উঠতে পারবে না। কিন্তু যে ক্ষেত্রে গরু বা প্রাণিজ দুধ খাওয়ায় সমস্যা রয়েছে কোনও কারণে, সেখানে অবশ্যই পরিবর্ত হিসেবে ডায়েটে রাখতে পারেন সয়া বা আমন্ড মিল্ক। এতে গরুর দুধের চেয়ে যেমন ফাইবার বেশি থাকে, তেমনই হজম করাও সহজ। ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্সের মতো ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে প্লান্টবেসড দুধ ও দুধের খাবারে। এ ধরনের ফর্টিফায়েড দুধ তৈরির সময়ে ওটস বা বাদাম জলে ভিজিয়ে, পিষে, তাতে কিছু খাদ্যগুণ সংযুক্ত করে তবেই প্রক্রিয়াকরণ সম্পূর্ণ হয়। ঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করাও জরুরি, প্রাণিজ দুধের মতোই।

ছোটদের জন্য

কমবয়স থেকেই দুধে অ্যালার্জি হয় অনেকের। তবে শিশুরা সাধারণত উদ্ভিদজাত দুধের সঙ্গে চট করে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই খুব কম বয়স থেকে এই ধরনের দুধ না দেওয়াই ভাল। বাচ্চা একটু বড় হলে সে যদি প্রাণিজ দুধ খেতে না পারে, তা হলে ধীরে ধীরে তাকে এই ধরনের দুধে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে প্রথমেই দেখতে হবে, তা সে পরিপাক করতে পারছে কি না। দুধের সঙ্গে জল মিশিয়ে একটু পাতলা করে দিতে হবে। মলের প্রকৃতি দেখেও বোঝা যায়, দুধ সহ্য বা হজম হচ্ছে কি না।

নানা সমস্যায় দুধ খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে যাঁদের, তাঁরা খাদ্যতালিকায় যোগ করে দেখতে পারেন উদ্ভিদজাত দুধ। আপনার স্বাস্থ্যের সহায়ক হয়ে উঠতে পারে এই বিকল্প উপায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Tips
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE