‘পিঙ্ক সল্ট’ বা ‘হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট’ নামেই দোকানে বেশি বিক্রি হয়। একটু বড় দানার গোপালি রঙের নুন আজকাল বাঙালি বাড়িতেও দিব্যি চলে। এক সময়ে সৈন্ধব লবণ নিরামিষ রান্নাতেই লাগত। পুজো-পার্বণের দিনে খাওয়ার চল ছিল। পিঙ্ক সল্টও তেমনই দেখতে অনেকটা। অনেকে আবার বলেন গোলাপি সৈন্ধব লবণ। হার্টের রোগ থাকলে, থাইরয়েডের কারণে নুন কম খেতে বলা হলে তখন এই পিঙ্ক সল্টের খোঁজ পড়ে। ডায়াবেটিকদের জন্যও না কি এই নুন উপকারী। পিঙ্ক সল্ট খেলে ওজনও কমে, এমনই দাবি অনেক পুষ্টিবিদের। কিন্তু কী ভাবে খেতে হবে?
‘জার্নাল অফ সেন্সরি স্টাডিজ়’-এ একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ২০১০ সালে। সেখানে বলা হয়, পিঙ্ক সল্ট ক্যালশিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামে সমৃদ্ধ। এই নুন খেলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকবে। সাধারণ নুন বেশি খেলে যেমন শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, পিঙ্ক সল্টে ততটা নেই। এই নুন ক্যালোরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সঠিক ভাবে খেলে ওজনও কমে।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর মত, পিঙ্ক সল্ট এখন বাঙালি বাড়িতেও আসে। অনেকেই রান্নায় সাদা নুনের বদলে পিঙ্ক সল্ট খান। তবে গোলাপি নুন কিনতে হলে, দেখে কেনাই ভাল। তা যেন নকল বা রং করা না হয়। নুন সাদা খান বা গোলাপি, তা পরিমিতই খেতে হবে। উপকারী ভেবে বেশি খেয়ে ফেললে হবে না। আর খাওয়ার পাতে কাঁচা নুন না খাওয়াই ভাল।
পিঙ্ক সল্ট হজমপ্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে, শরীরে জলের ঘাটতি মেটায়, এমনই দাবি করা হয়েছে ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল মেডিসিন’-এ। দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন,সোডিয়াম কম খেতে বলা হয়েছে, তাঁরা পরিমিত মাত্রায় পিঙ্ক সল্ট খেতে পারেন। কিডনির রোগ থাকলে সাদা নুনের বদলে পিঙ্ক সল্ট খাওয়াই ভাল।
কী ভাবে খেলে ওজন কমবে?
পিঙ্ক সল্ট ডিটক্স ওয়াটার
১ গ্লাস ঈষদুষ্ণ জলে আধ চা-চামচ পিঙ্ক সল্ট, ১ চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে সেই জল রোজ সকালে খালি পেটে খেতে হবে। রোজ খেলে শরীর ‘ডিটক্স’ হবে, অর্থাৎ, শরীরে জমা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। তবে হাইপারথাইরয়েড থাকলে নুন কতটা খাবেন, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
চায়ে পিঙ্ক সল্ট
গ্রিন টি বা ক্যামোমাইল টি-তে মিশিয়ে পিঙ্ক সল্ট খাওয়া যেতে পারে। এক কাপ গ্রিন টি-তে আদা কুচি ও এক চিমটে পিঙ্ক সল্ট মিশিয়ে দিন। এই চা খাওয়ার পরে খেলে, হজম ভাল হবে, অম্বলের সমস্যা কমবে। এই চা খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমে যাবে, অতিরিক্ত ক্যালোরি পুড়বে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র মতে, নুনের পরিমাণ কমে যাওয়া যেমন সমস্যার, তেমন তা বেড়ে গেলেও শরীরের প্রভূত ক্ষতি। তাই তাদের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, প্রতি দিন পাঁচ গ্রাম বা আধ চা চামচের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে নুনের পরিমাণ। সাদা হোক বা গোলাপি নুন, পরিমিত পরিমাণেই খেতে হবে।