রাতে শোয়ার পরেই পায়ের ব্যথা আরও বেড়ে যায়। হাঁটু থেকে পায়ের পাতা অবধি শিরশিরানি অনুভূতি কাজ করে। মাঝেমধ্যে ঘুমের মধ্যেই পায়ের শিরায় টান ধরে। এমন সমস্যা কমবেশি অনেকেরই। রাতভর পায়ে ব্যথা ভোগালে তাকে বাতের ব্যথা বলেই ভেবে নেওয়া হয়। তবে আসল কারণ অন্য। যদি দেখা যায়, কাফ মাসলে যন্ত্রণা বেশি হচ্ছে, গোড়ালির কাছে জ্বালার মতো অনুভূতি হচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে, ব্যথার কারণ নিছক বাত নয়। ইউরিক অ্যাসিড বাড়ছে।
রাতে পায়ের ব্যথার সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের কী সম্পর্ক?
রক্তে যদি পিউরিনের মাত্রা বেড়ে যায়, তা হলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা ভোগাবে। রেড মিট, অ্যালকোহল, নানা রকম জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে রক্তে পিউরিনের মাত্রা বাড়ে। এই পিউরিন সাধারণত প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। কিডনি একে ছেঁকে বার করে দেয়। তবে পিউরিন যদি বেশি পরিমাণে জমা হয়, তখন সেগুলিকে বার করতে কিডনিকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। পিউরিন ভেঙে গিয়ে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা রক্তে ও অস্থিসন্ধিতে ক্রিস্টাল বা স্ফটিকের মতো জমা হতে থাকে।
আরও পড়ুন:
হাঁটু, গোড়ালির মতো অস্থিসন্ধিতে ইউরিক অ্যাসিডের ক্রিস্টাল বেশি জমা হয়, যা অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ তৈরি করে। রাতের দিকে ক্রিস্টাল জমা হওয়ার মাত্রা বাড়ে। ওই সময়টাতেই অস্থিসন্ধিগুলিতে ইউরিক অ্যাসিড বেশি পরিমাণে জমা হয়। ফলে সেই সব জায়গায় অস্বস্তি শুরু হয়, ফুলে লাল হয়ে যায়, পেশির খিঁচুনি শুরু হয়। তখন ঘন ঘন শিরায় টান ধরতে থাকে। রাতভর পায়ের যন্ত্রণা হয়।
কোন সময়ে ব্যথা বাড়ে?
শুয়ে বা বসে থাকার সময়ে ব্যথা বাড়ে। পায়ের পাতা, গোড়ালি ও হাঁটুর নীচ থেকে ব্যথা শুরু হয়। সাধারণত মাঝরাতের পর থেকে শরীরে জলের মাত্রা কমতে থাকে, শরীরের তাপমাত্রাও কমে, ওই সময়টাতেই ব্যথা বেশি চাগাড় দিয়ে ওঠে। সাধারণ পায়ের ব্যথার সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথার পার্থক্যও রয়েছে। সাধারণ ব্যথায় পেশির খিঁচুনি হয় না। কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে পায়ের পেশির খিঁচুনি, অসাড়তা বাড়বে। ব্যথার জায়গা প্রচণ্ড স্পর্শকাতর হয়ে উঠবে। বিশ্রাম নিলেও ব্যথা কমবে না। তাই এমন লক্ষণ রাতে বেশি দেখা দিলে, দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।