সকাল সকাল তাজা ফলের রস দিয়ে দিন শুরু করছেন। প্রাতরাশের পরে অফিসে গিয়ে ডাবের জলও খাচ্ছেন। ফলের রস হোক বা ডাবের জল, দুইই উপকারী তাতে কোনও সন্দেহই নেই। তবে সকলের জন্য নয়। ফলের রস ও ডাবের জল পান করার নির্দিষ্ট সময়ও আছে। কাদের জন্য কোনটি ভাল ও কারা খাবেন না, তা জেনে রাখা জরুরি।
ডাবের জল কাদের জন্য ভাল?
ডাবের জলে প্রায় সব রকম ইলেক্ট্রোলাইট, যেমন ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জ়িঙ্ক রয়েছে। স্বাদে হোক বা পুষ্টিগুণে, এর জুড়ি মেলা ভার। ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকে। এক গ্লাস ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ থাকে মাত্র ৪৫।
ওজন কমাতে চাইছেন যাঁরা তাঁদের জন্য ডাবের জল ভাল।
শরীরে জলের ঘাটতি বেশি হলে বা ডিহাইড্রেশনে ভুগলে, ডাবের জল মহৌষধের মতো কাজ করবে।
পটাশিয়ামের কারণে ডাবের জল রক্তচাপের তারতম্য ঠেকাতে পারে। রক্তচাপের হেরফের যদি বেশি হয়, তা হলে ডাবের জল খেতে পারেন।
শরীরচর্চার পরে অতিরিক্ত ঘাম ও খনিজ লবণ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। সে সময়ে বাজারচলতি প্রোটিন শেক বা এনার্জি ড্রিঙ্কের বদলে ডাবের জলে চুমুক দিতে পারেন।
কারা খাবেন না
ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যাঁদের কিডনির অসুখ আগে থেকেই আছে, তাঁরা নিয়মিত ডাবের জল খেতে শুরু করলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে ‘হাইপারক্যালিমিয়া’ হতে পারে।
আরও পড়ুন:
‘ফুড অ্যালার্জি’-র চিকিৎসা যদি চলে বা কোনও রকম ওষুধ খান, তা হলে ডাবের জল খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ফুসফুসে দীর্ঘ দিন ধরে সংক্রমণ ও তার থেকে সিস্ট হয় অনেকের। যদি ‘সিস্টিক ফাইব্রোসিস’হয়ে থাকে বা ফুসফুসের কোনও রোগ থাকে তা হলে ডাবের জন না খাওয়াই ভাল।
ডাবের জল না ফলের রস?
ফলের রসে ভিটামিন এ,বি, সি, ডি থাকে। বাড়িতে তৈরি চিনি ছাড়া তাজা ফলের রস উপকারী, তবে যদি ওজন কমাতে চান তা হলে রোজ ফলের রস খেলে হিতে বিপরীত হবে। এতে ফ্রুক্টোজের মাত্রা বেশি থাকে, ক্যালোরির মাত্রাও বেশি। তাই ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও তেমন স্বাস্থ্যকর নয়। ফলে থাকে গ্লুকোজ়, ফ্রুকটোজ় এবং সুক্রোজ়। যা আদতে কার্বোহাইড্রেটেরই উপাদান। ফল খাওয়ার পরে আমাদের পাকতন্ত্র নানা ভাবে ভেঙে সেই সমস্ত উপাদান যথাস্থানে পৌঁছে দেয়। তার সঙ্গে পৌঁছোয় ফলে থাকা উপকারী ফাইবারও। কিন্তু ফল থেকে ছেঁকে যখন শুধু রসটুকু বার করে নেওয়া হয়, তখন তাতে উপকারী ফাইবার থাকে না।
সকালে ছোট এক গ্লাস ফলের রস খাওয়া মানে ২৬ গ্রাম চিনি খাওয়া। তার চেয়ে গোটা ফল খাওয়ারই পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ফলের রস খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। ফল খেলে কিন্তু অতটা বাড়ে না। গোটা আপেল খেলে শরীরে ১২০ ক্যালোরি যায়। ফলে চাঙ্গা ও সতেজ থাকে শরীর। কিন্তু আপেলের রস বানালে তার কিঞ্চিৎ উপকারও পাওয়া যায় না। তা ছাড়া আপেলে চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ গ্রাম। তবে যাঁরা অপুষ্টিতে ভুগছেন অথবা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের অভাব রয়েছে, তাঁরা ফলের রস খেতে পারেন। আর ফলের রস খেতে হলে খালি পেটে নয়, বরং দুটি মিলের মাঝে খাওয়াই ভাল।