কফি উপভোগ করতে হলে সাধারণত দুধ চিনি দিয়ে জমিয়ে খাওয়া হয়। পোশাকি ভাষায় যাকে বলে কাপুচিনো বা লাটে। স্বাস্থ্য সচেতনেরা দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফিই পছন্দ করেন। তবে আরও এক রকম কফি আছে, যা ইদানীংকালে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। সেটি হল গ্রিন কফি। এনার্জি ড্রিঙ্ক হিসেবে এই পানীয়টির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। গ্রিন কফি খেলে ওজন কমে, এমনও দাবি করেছেন অনেকে। তাঁর মধ্যে একজন হলেন ভারতীয় ক্রিকেটার সরফরাজ় খান। এক সাক্ষাৎকারে সরফরাজ় জানিয়েছেন, এই গ্রিন কফি খেয়ে তাঁর ওজন অনেকটা কমেছে। মাস দুয়েকের মধ্যে ১৭ কেজি ওজন ঝরিয়েছেন তিনি।
ওজন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল সরফরাজ়ের। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিস্তর রান করেও জাতীয় নির্বাচকদের মন জিততে পারেননি সরফরাজ়। তার পরে ফিটনেস নিয়ে বেশি সচেতন হয়ে পড়েন তিনি। জানিয়েছেন, ডায়েট, শরীরচর্চা ও দিনে দু’রকম ডিটক্স পানীয় খেতেন তিনি— গ্রিন টি এবং গ্রিন কফি। আর গ্রিন কফি খেয়ে তাঁর চেহারায় অনেক বদল আসে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
২ মাসে ১৭ কেজি কমিয়েছেন সরফরাজ়। ফাইল চিত্র।
আরও পড়ুন:
সাধারণ কফির চেয়ে কতটা আলাদা গ্রিন কফি?
কফি বিনে কোনও তফাত নেই। কফি বিনের প্রাকৃতিক রং হল সবুজ। বাণিজ্যিক কারণে কফি বিনকে রোস্ট করে খয়েরি বা বাদামি রং দেওয়া হয়। আর রোস্ট যদি না করা হয়, তা হলে সেই কাঁচা কফি বিনই হল গ্রিন কফি। কফির দু’টি সক্রিয় উপাদান হল ক্যাফিন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। কফি বিনকে বারে বারে প্রক্রিয়াকরণ করলে তার মধ্যে থাকা এই দু’টি উপাদান নষ্ট হতে থাকে। এর পরে ক্যাফিনের প্রভাব বেশি থাকলেও, কফির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড পুরোপুরি উবে যায়। এই ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ক্যাফিনের সাহায্যে বিপাকক্রিয়ার হার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। গ্রিন কফি যেহেতু রোস্ট করা হয় না, তাই এতে ক্যাফিন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড সঠিক মাত্রায় বজায় থাকে। দেখা গিয়েছে, কেউ যদি দুধ-চিনি ছাড়া কালো কফি খান, তা হলে তাঁর ওজন যতটা কমবে, গ্রিন কফি খেলে তা আরও দ্রুত হারে কমবে। পাশাপাশি, গ্রিন কফির পুষ্টিগুণও বেশি।
গ্রিন কফি নানা আকারে বাজারে পাওয়া যায়। গুঁড়ো কফির পাশাপাশি, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলও পাওয়া যায়। তবে গ্রিন কফি খেতে হলে বা এর সাপ্লিমেন্ট নিতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। মেদ ঝরাতে হলে গ্রিন কফি খাওয়ার পাশাপাশি ডায়েট ও শরীরচর্চাও করতে হবে। ব্যায়াম করার এক ঘণ্টা আগে ও পরে গ্রিন কফি খেলে উপকার বেশি হবে।